তেলে ট্যাঙ্কারের ভিতরে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল দুই যুবকের। সোমবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে হলদিয়ার ব্রজলালচকের কাছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, খালি ট্যাঙ্কার পরিষ্কার করতে নেমে ওই অঘটন ঘটেছে। যদিও স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, ট্যাঙ্কারে পড়ে থাকা তেল অনেকে ট্যাঙ্কারের ভিতরে ঢুকে চুরি করে। এ ক্ষেত্রেও তাই সেই ধরনের সম্ভাবনা তাঁরা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ব্রজলালচকের অদূরে একটি গ্যারাজ রয়েছে। এদিন বিকেলে ওই গ্যারাজে হলদিয়ার একটি তেল শোধনকারী সংস্থার ট্যাঙ্কার এসেছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘‘গ্যারাজের এক কর্মী মারফৎ জানতে পারি ট্যাঙ্কারের ভিতর দুই যুবক অনেকক্ষণ আটকে রয়েছেন। খবর পেয়ে স্থানীয়েরা যান। তাঁরা ট্যাঙ্কারের ভেতর নেমে দুজনকে টেনে উদ্ধারের চেষ্টা করেন।’’ পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ভবানীপুর থানার পুলিশ। আটকে থাকা ওই দু’জনকে টেনে উপরে তোলা হয়। কিন্তু ততক্ষণে ওই দুজন মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তবে তাঁরা স্থানীয় বাসিন্দা বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই দুই যুবক ট্যাঙ্কার পরিষ্কার করতে ভিতরে নেমেছিলেন। কোনও ভাবে ভিতরেই তাঁরা দমবন্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন। ঘটনার পর থেকেই ওই গ্যারাজ মালিক-সহ অন্য কর্মীরা গা ঢাকা দিয়েছেন। ওই গ্যারাজে হিন্দুস্থান পেট্রলিয়াম এবং ইন্ডিয়ান ওয়েল নামে দুটি সংস্থার ট্যাঙ্কার পরিষ্কার করা হয়। ওই দুটি সংস্থার তরফে ট্যাঙ্কারটি পরিষ্কারের কোনও অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।
পুলিশ ট্যাঙ্কার পরিষ্কারের অনুমান করলেও স্থানীয়েরা অন্য অভিযোগ করছেন। তাঁদের একাংশ জানাচ্ছেন, ওই এলাকায় ট্যাঙ্কার থেকে শোধিত তেল বের করে পাচার করে দেওয়া হয়। দীর্ঘ দিন ধরে এমন বেআইনি কাজ চললেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ। অনেকেই আবার প্রশ্ন করেছেন, মৃত দু’জনের কারও লাইফ বেল্ট পরা ছিল না। সাধারণত এই ট্যাঙ্কারগুলিতে তেল থাকার জন্য রাসায়নিক মিশে থাকে। বিপদের ঝুঁকি সত্ত্বেও কেন তাঁদের ট্যাঙ্কারের ভিতর ঢোকানো হয়েছিল, তা নিয়েও সরব হয়েছে স্থানীয়েরা।
এ দিন ঘটনার পর ওই এলাকায় যান হলদিয়ার এসডিপিও অতীন বিশ্বাস-সহ পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকেরা। হলদিয়ার এসডিপিও অতীন বিশ্বাস বলেন, ‘‘ট্যাঙ্কার পরিষ্কার করতে গিয়ে শ্বাসরোধ হয়ে দুজন মারা গিয়েছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট জানা যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy