Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শিশুমৃত্যুতে ফের বিক্ষোভ! 

চিকিত্সার গাফিলতিতে শিশুমৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে ডাক্তারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ হল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। দিন সাতেক চিকিত্সাধীন থাকার পরে মঙ্গলবার রাতে শিশুটির মৃত্যু হয়। পরিজনেদের অভিযোগ, হাসপাতালে সঠিক চিকিত্সাই হয়নি। দায় এড়াতে ব্যস্ত হাসপাতাল।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮ ০১:০০
Share: Save:

চিকিত্সার গাফিলতিতে শিশুমৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে ডাক্তারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ হল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। দিন সাতেক চিকিত্সাধীন থাকার পরে মঙ্গলবার রাতে শিশুটির মৃত্যু হয়। পরিজনেদের অভিযোগ, হাসপাতালে সঠিক চিকিত্সাই হয়নি। দায় এড়াতে ব্যস্ত হাসপাতাল। ফের কেন এমন অভিযোগ? মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, “সুপারের সঙ্গে কথা বলুন। যা বলার উনি বলবেন।” হাসপাতাল সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজা বলেন, “অধ্যক্ষই এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান। যা বলার অধ্যক্ষ বলবেন।” হাসপাতালের অন্য এক আধিকারিকের আশ্বাস, “শিশুমৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক। অভিযোগ এলে তা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

চন্দ্রকোনার ক্ষীরপাই এলাকার কাসুন্দর বাসিন্দা শেখ কাকাতুয়া। তাঁর স্ত্রী আনসুরা খাতুন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। সপ্তাহ তিনেক আগে তিনি প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি হন। পরে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। সেই সময় শিশুটি সুস্থ ছিল। শিশুটিকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন আনসুরা। এক সপ্তাহ আগে শিশুটির শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। জ্বর আসে। ফের শিশুটিকে হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। সেই থেকে শিশুটি হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়।

পরিজনেরা জানান, ২১ দিনের মাথায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। শেখ কাকাতুয়ার অভিযোগ, “সেই ভাবে কোনও চিকিত্সাই হয়নি হাসপাতালে। মাঝে মধ্যে একজন ডাক্তার এসে দেখে যেতেন।” সন্তানহারা বাবার কথায়, “সঠিক চিকিত্সা হলে এই ঘটনা কখনওই ঘটত না।” আনসুরার অভিযোগ, “চিকিত্সার গাফিলতিতেই এ ভাবে সন্তানকে হারাতে হল।” হাসপাতালের এক সূত্রে খবর, শিশুটি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল। শিশুটিকে না কি ভেন্টিলেশনে রাখা সম্ভব হয়নি। কারণ, দু’টি ভেন্টিলেশনের একটি খারাপ হয়ে গিয়েছে। সত্যিই কি তাই? সদুত্তর এড়িয়ে হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, “শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। এ কথা পরিজনেদেরও জানানো হয়েছিল।” তাঁর কথায়, “সব রকম চেষ্টা হয়েছে। তাও শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।”

জেলার সবথেকে বড় সরকারি হাসপাতাল মেদিনীপুর মেডিক্যালের পরিকাঠামো ও পরিষেবা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগ তাতে একটি সংযোজন মাত্র! দিন কয়েক আগে হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে জেলাশাসক পি মোহনগাঁধীও বুঝতে পেরেছিলেন, সব অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। পরিদর্শনের সময় হাসপাতালের নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি দেখেন তিনি। সম্প্রতি একের পর এক অভিযোগ উঠেছে এখানে। এই প্রথম নয়, এর আগেও শিশুমৃত্যু নিয়ে তোলপাড় হয়েছে হাসপাতাল। ক্ষুব্ধ রোগীর পরিজনেরা হাসপাতাল ভাঙচুর করেছেন। কেন বারবার এমন অভিযোগ উঠছে? হাসপাতালের এক আধিকারিকের আশ্বাস, “যে কোনও অভিযোগ এলেই তা গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হয়। ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।” তাঁর কথায়, “কিছু সমস্যা হয়তো রয়েছে। একে একে সেগুলোর সমাধানের চেষ্টা চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE