Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

দুর্নীতির অভিযোগ কবুল, ভিডিয়ো নিয়ে শোরগোল

এ ব্যাপারে পুর্ব মেদিনীপুর মৎস্যজীবী ফোরামের পক্ষ থেকে জেলা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। তবে এ বার ওই দুর্নীতি কী ভাবে হয়েছে, তার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় শোরগোল পড়েছে জেলায়।

দুর্নীতি কী ভাবে হয়েছে, তার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় শোরগোল পড়েছে জেলায়। ফাইল চিত্র।

দুর্নীতি কী ভাবে হয়েছে, তার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় শোরগোল পড়েছে জেলায়। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৯ ০০:০৫
Share: Save:

মৎস্যজীবীদের আর্থিক সহায়তায় রাজ্যের সঙ্গে সহযোগিতায় প্রকল্প চালু করেছিল কেন্দ্র। সেই প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল। এ ব্যাপারে পুর্ব মেদিনীপুর মৎস্যজীবী ফোরামের পক্ষ থেকে জেলা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। তবে এ বার ওই দুর্নীতি কী ভাবে হয়েছে, তার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় শোরগোল পড়েছে জেলায়।

সম্প্রতি সহ মৎস্য অধিকর্তার কাছে কাঁথি মহকুমা খটি মৎস্যজীবী সংগঠনের তরফে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। সেখানে সহ মৎস্য অধিকর্তার সামনে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ্যে স্বীকার করেন ওই সংস্থার সম্পাদক তথা কাঁথি ফিশারমেন কো-অপারেটিভ সোসাইটির চেয়ারম্যান লক্ষ্মীনারায়ণ জানা। প্রসঙ্গত, কাঁথি ফিশারমেন কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের অধীনে ৩৬টি মৎস্যখটি রয়েছে।

মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, উপকূল অঞ্চলে মৎস্যজীবীদের সহায়তায় ‘বেহুন্দি’ এবং ‘ইন্টিগ্রেটেড মেরিন ফিশারিজ ডেভলপমেন্ট’ প্রকল্প চালু করেছে কেন্দ্র। ‘বেহুন্দি’ প্রকল্পে মাছ ধরার জাল এবং অপর প্রকল্পে নৌকো এবং তার ইঞ্জিন কেনার জন্য ঋণ দেওয়া হয়। কেন্দ্রের অধীনস্থ ‘ন্যাশনাল কো-অপারেটিভ ডেভলেপমেন্ট কর্পোরেশন’-এর মাধ্যমে প্রতিটি রাজ্যে পৌঁছে যায় প্রকল্পের টাকা। এ রাজ্যে ওই প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছে বেনফিশ। তাদের মাধ্যমে টাকা পৌঁছে যেত স্থানীয় স্তরে প্রাথমিক মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিগুলিতে। তারপর প্রাপকের কাছে চলে যেত টাকা।

কী ভাবে এই অনিয়ম হয়েছে ? এই প্রকল্পে মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির কাছে জাল-নৌকো কেনার জন্য কোনও মৎস্যজীবী ঋণ নিলে তা পরিশোধ করার পরে ভর্তুকির টাকা পাবেন। কিন্তু এখানেই আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, ‘বেহুন্দি’ নামে ওই প্রকল্পে ২০১৬-’১৭ সালে ২০৪.৬৮ লক্ষ এবং ২০১৭-’১৮ সালে ৬১৮.৬৮ লক্ষ টাকা ভর্তুকি বাবদ তুলে নেওয়া হয়েছিল। ‘আইএমএফডিপি’ প্রকল্পে ৪৯১.৪ লক্ষ টাকা ভর্তুকি বাবদ তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই সংক্রান্ত দুর্নীতির যে ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে লক্ষ্মীনারায়ণ জানা বলছেন, ‘নৌকা এবং জাল রয়েছে এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে পুরনো নথি সংগ্রহ করে তা বেনফিশ-এর কাছে জমা দেওয়া হয়। তার ভিত্তিতে সরকারি প্রকল্পে লক্ষ লক্ষ টাকা ভর্তুকি পেয়ে গিয়েছেন বহু মৎস্যজীবী। কোন পদ্ধতি অবলম্বন করে বেনফিশের কাছ থেকে ভর্তুকি আদায় করা হয়েছে, তা সহ মৎস্য অধিকর্তার মতো একজন সরকারি আধিকারিকের সামনে মেনে নেওয়ার পরেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না তা নিয়েই সরব হয়েছে একাধিক মৎস্যজীবী সংগঠন।

যার ভিডিয়ো নিয়ে তোলপাড়, সেই লক্ষ্মীনারায়ণ জানার সাফাই, ‘‘ভিডিওটি মিথ্যা।’’ যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার।

প্রকল্পে এহেন দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বেনফিশের ডিরেক্টর বিধান চন্দ্র রায়কে ফোন করা হয়। কিন্তু তাঁর মোবাইল বন্ধ ছিল। তবে পুর্ব মেদিনীপুরের জেলা শাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘মৎস্য আধিকারিকদের মাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছি। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

সহ মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুরজিৎ বাগ বলেন, ‘‘কাঁথি মহকুমা খটি মৎস্যজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্মারকলিপি দিতে এসেছিলেন লক্ষ্মীবাবু। সেখানে তিনি আলাদা কোনও প্রসঙ্গে কিছু বলে থাকলে আমি শুনিনি। তা ছাড়া ওই ব্যাপারটি বেনফিশের এক্তিয়ারভুক্ত। তাই তা নিয়ে মন্তব্য করব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Contai Corruption fishermen
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE