উদ্ধার হওয়া চন্দ্রবোড়া। শনিবার সাহাপুরে। নিজস্ব চিত্র
বাড়ির ভিতরে ফের বিষধর সাপ মিলল কোলাঘাটের সাহাপুর গ্রামে। তবে আর সাপকে পিটিয়ে মারলেন না গ্রামবাসীরা। বরং তাকে বাঁচাতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেন বন দফতরের সঙ্গে। বন কর্মীরা না আসায় নিজেরাই চেষ্টা করে ধরে ফেললেন সেই সাপ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার সকালে সাহাপুর গ্রামে তপন মান্নার বাড়িতে একটি চন্দ্রবোড়া সাপ ঢুকে পড়ে। দু’দিন আগে বন দফতরের আধিকারিকরা ওই এলাকায় সাপ না মারার প্রচার চালান। সেই সঙ্গে একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে গিয়েছিলেন সাপ ধরার ব্যাপারে। ফোন নম্বরটি আসলে কোলা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বুলু ঘোষের। এ দিন সেই নম্বরে বারবার ফোন করলেও কেউ ধরেননি বলে অভিযোগ।
সেই সময় বিজয় পাত্র নামে এক গ্রামবাসীকে সাপটি ধরার প্রস্তাব দেন বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, ডাকাবুকো বিজয় আগেও সাপ মেরেছেন। তাই এবার তাঁকে সাপ না মেরে কৌশলে ধরার কথা বলা হয়। সেই মতো বিজয় ‘মুগরি’ নামে মাছ ধরার একটি খাঁচা দিয়ে সাপটি ধরেন। আরও পরে খবর পেয়ে সেখানে যায় বন দফতর। বন কর্মীরা সাপটি উদ্ধার করে দূরের জঙ্গলে ছেড়ে দেন।
বন কর্মীদের ওই সময় বিজয়-সহ স্থানীয়দের সাপ ধরার সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার দাবি করেন গ্রামবাসী। তাঁদের বক্তব্য, কোলাঘাটের ওই এলাকাটি পাঁশকুড়া রেঞ্জের আওয়তায়। ঘটনাস্থল থেকে রেঞ্জ অফিসের দূরত্ব অনেক। তার উপরে রয়েছে কর্মীর অভাব। ফলে গ্রামবাসীদের এই দাবি সাপ বাঁচানোর পক্ষে যথেষ্ট সহায়ক হবে বলে মনে করছেন অনেকেই। বিজয় বলেন, ‘‘এতদিন সাপ মেরেছি। এই প্রথম সাপ বাঁচালাম। তবে খুব ঝুঁকি ছিল। বন দফতর আমাকে প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম দিলে সাপ ধরে বন দফতরের হাতে তুলে দিতে পারি।’’ এ ব্যাপারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অতিরিক্ত বন আধিকারিক বলরাম পাঁজা বলেন, ‘‘খুবই ভাল প্রস্তাব। ওঁরা আমাদের কাছে আবেদন করলে বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।’’
একই গ্রামে বারবার এত সাপ বার হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এলাকায় রাস্তার ধারে প্রচুর আগাছা জমে রয়েছে। ওগুলি পরিষ্কার করা দরকার। আগাছায় সাপেরা এসে আশ্রয় নিচ্ছে। সুযোগ বুঝে বাড়িতে ঢুকে পড়ছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দা রাজু বেরা বলেন, ‘‘প্রত্যেক বছর পুজোর সময় রাস্তার পাশের আগাছা পরিষ্কার করে স্থানীয় পঞ্চায়েত। কিন্তু এবার সেই কাজ হয়নি।’’ এই বিষয়ে কোলা ২ পঞ্চায়েতের প্রধান বুলু বলেন, ‘‘ওই এলাকায় আগাছা সাফ করা হয়েছিল। নতুন করে আগাছা জন্মেছে। ফের ওগুলি পরিষ্কার করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy