Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

উচ্চ মাধ্যমিকে উজ্জ্বল পশ্চিম 

সংসদ এ-ও জানিয়েছে, এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর উঠেছে ৪৯৯। সে দিক থেকে কৃতী তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের তিন ছাত্রছাত্রী।  দু’জন ছাত্র মেদিনীপুর শহরের, এক ছাত্রী খড়্গপুরের। এক ছাত্রের প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৮, বাকি দু’জন পেয়েছে ৪৯৪।

অনীক জানা এবং সৌগত মাঝি।

অনীক জানা এবং সৌগত মাঝি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২০ ০৩:১৬
Share: Save:

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ এ বার মেধা তালিকা প্রকাশ করেনি। জানায়নি জেলা ভিত্তিক পাশের হারও। তবে যে সব জেলায় পাশের হার নব্বই শতাংশের বেশি, তাদের নামোল্লেখ রয়েছে সংসদের তালিকায়। সেখানে নাম রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের। মাধ্যমিকেও এ বার পাশের হারে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জেলা।

সংসদ এ-ও জানিয়েছে, এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর উঠেছে ৪৯৯। সে দিক থেকে কৃতী তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের তিন ছাত্রছাত্রী। দু’জন ছাত্র মেদিনীপুর শহরের, এক ছাত্রী খড়্গপুরের। এক ছাত্রের প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৮, বাকি দু’জন পেয়েছে ৪৯৪।

মেদিনীপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাভবনের ছাত্র অনীক জানা ৪৯৮ নম্বর পেয়েছে। শতাংশের নিরিখে ৯৯.৬০। মেধা তালিকা প্রকাশ না হলেও হিসেব বলছে, রাজ্যে দ্বিতীয় অনীক। উচ্চ মাধ্যমিকের এই কৃতী পদার্থবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করতে চায়। তার বাড়ি মেদিনীপুর শহরের মিরবাজারে। বাবা যাদবকুমার জানা বাঁকুড়া মেডিক্যালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। মা মামনি জানা গৃহকর্ত্রী। অনীকের বোন অন্নিকা চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। অনীকদের বাড়ি সবংয়ের দশগ্রামে। বাবার চাকরিসূত্রে একাধিক জেলায় পড়াশোনা করতে হয়েছে তাকে। মাধ্যমিকে রাজ্যে পঞ্চম হয়েছিল সে। উচ্চ মাধ্যমিকে অনীক বাংলায় পেয়েছে ৯৬, ইংরেজিতে ৯৮, জীববিদ্যায় ১০০, অঙ্কে ১০০, রসায়নে ১০০ এবং পদার্থবিদ্যায় ১০০। অনীক বলছিল, ‘‘আমি পদার্থবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করতে চাই।’’ মেদিনীপুর রামকৃষ্ণ মিশনে সে অষ্টম শ্রেণি থেকে পড়েছে। বাবা যাদব, মা মামনি বলছেন, ‘‘নিজের চেষ্টাতেই ও ভাল ফল করেছে।’’

জেলার বাকি দুই কৃতীরই প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৪। তাদের একজন মেদিনীপুর রামকৃষ্ণ মিশনেরই সৌগত মাঝি। সে ৪৯৪ নম্বর পেয়েছে। শতাংশের নিরিখে ৯৮.৮০ শতাংশ। সৌগতর বাড়ি মেদিনীপুর শহরের বরিশাল কলোনিতে। বাবা সুভাষ মাঝি বিমা সংস্থার কর্মচারী। মা বনশ্রী মাঝি সংসারের কর্ত্রী। সৌগতর ভাই সৌম্যজিৎ চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। মাধ্যমিকে সৌগত ৬৬৯ নম্বর পেয়েছিল। উচ্চ মাধ্যমিকে সে বাংলায় পেয়েছে ৯৬, ইংরেজিতে ৯৭, জীববিদ্যায় ৯৭, অঙ্কে ১০০, রসায়নে ১০০ এবং পদার্থবিদ্যায় ১০০। কৃতী এই ছাত্র চিকিৎসক হতে চায়। তার কথায়, ‘‘ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে চাই।’’

অনন্যা ভৌমিক

এ দিন মেদিনীপুরের দুই কৃতীর বাড়িতে গিয়েছিলেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) চাপেশ্বর সর্দার, মেদিনীপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাভবনের প্রধান শিক্ষক স্বামী জয়েশানন্দ প্রমুখ।

খড়্গপুর শহরের নিমপুরা আর্য বিদ্যাপীঠের অনন্যা ভৌমিকের প্রাপ্ত নম্বরও ৪৯৪। ইংরেজিতে ৯৮, বাংলা ও জীববিদ্যায় ৯৬ পাওয়া কৃতী এই ছাত্রী লকডাউনের জেরে পদার্থবিদ্যা ও রসায়নের পরীক্ষা দিতে পারেনি। তবে এই দুই বিষয়েই অঙ্কের মতো ১০০ নম্বর পেয়েছে সে। ভবিষ্যতে অধ্যাপক হওয়ার স্বপ্ন দেখে এই কৃতী কন্যা। রসায়নে সাম্মানিক স্নাতকে ভর্তির পরিকল্পনা রয়েছে। অনন্যা বলে, “ছোট থেকেই ইচ্ছে ছিল শিক্ষকতা করব। কিন্তু কবে পড়াশোনা শুরু হবে অনিশ্চয়তা তো কাটছে না।” অনন্যার বাবা তরুণ রেলের কারখানার সিনিয়র টেকনিশিয়ান ও মা সুজাতা ভৌমিক গৃহকর্ত্রী। তরুণ বলছিলেন, “আমিও চাই মেয়ে অধ্যাপক হোক।” আর্য বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক চণ্ডীচরণ ত্রিপাঠী বলেন, “এই প্রথম আমাদের স্কুল রাজ্যের কৃতী তালিকায় উঠল।’’

ঝাড়গ্রাম জেলাতেও উচ্চ মাধ্যমিকের ফল গত বারের তুলনায় যথেষ্ট ভাল হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পরীক্ষা সংক্রান্ত জেলা পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য তপনকুমার পাত্র জানান, জেলায় পাশের হার ৯০.২৭ শতাংশ, গত বারের তুলনায় প্রায় সাড়ে তিন শতাংশ বেশি। জেলার সম্ভাব্য সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশনের সন্তু রাউত (৪৯৩)। ওই স্কুলেরই সন্দীপন হাজরা (৪৯১), সোমনাথ দাস (৪৯১) এবং অর্ণব মণ্ডল (৪৮৯) ভাল ফল করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

wbchse result 2020 student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE