বোগা ফেরিঘাট। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
কয়েকদিন ধরেই বার্ধক্য জনিত অসুখে ভুগছেন খেজুরি-২ ব্লকের নিজ কসবা গ্রামের এক বাসিন্দা। তাঁর দাবি, ‘‘প্রতি মাসে জরুরি ভিত্তিতে দুবার ডাক্তার দেখাতে যেতে হয়। কিন্তু কাঁথি শহরে গিয়ে ডাক্তার দেখানোর মতো এখন উপায় নেই। ওষুধও ফুরিয়ে গিয়েছে। কী ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেব ভাবতে পারছি না।’’
শুধু ওই বৃদ্ধ নন, ২৩ মার্চ রাজ্যজুড়ে লকডাউন ঘোষণার পর কাঁথির সঙ্গে খেজুরির যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম রসুলপুর নদীতে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন খেজুরি এবং আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা।
কাঁথি থেকে হেঁড়িয়া হয়ে স্থলপথে বোগা পৌঁছতে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। খরচও তুলনায় বেশি। কিন্তু জলপথে অল্প সময়ে, অল্প খরচে পৌঁছনো যায় কাঁথি। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, খেজুরি-২ ব্লকের বিদ্যাপীঠ, জনকা, শিল্লাবেড়িয়া, শ্যামপুর, হিজলি, নিজকসবা, দক্ষিণ কলাগেছিয়া এবং নন্দীগ্রামের বাসিন্দাদের অধিকাংশ নিত্য প্রয়োজনে ফেরি পারাপার করেই কাঁথিতে যাতায়াত করেন। কিন্তু লকডাউনে নৌকা চলাচল বন্ধ থাকায় খুবই অসুবিধায় পড়েছেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে খেজুরির সঙ্গে কাঁথির জরুরিকালীন যোগাযোগ পরিষেবা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয় খেজুরি-২ ব্লক প্রশাসন। মঙ্গলবার থেকে সংশ্লিষ্ট ব্লক প্রশাসনের তরফে জরুরি পরিস্থিতিতে ফেরি পরিষেবা চালু রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসার প্রয়োজনে কিংবা আপৎকালীন পরিস্থিতিতে যাতে অসুবিধা না হয় তার জন্য তৎপর ব্লক প্রশাসন।
তবে রসুলপুর নদীর দু’প্রান্তে ফেরিঘাটগুলিতে জলসাথীর পাশাপাশি উপকূল থানাগুলির পুলিশের কড়া নজরদারি রয়েছে। ডাক্তার দেখানো কিংবা ওষুধ কেনার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কিনা তার বৈধ কাগজপত্র যাচাই করেই যাতায়াতের ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে। খেজুরি-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসীম মণ্ডল বলেন, ‘‘যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে ব্লক প্রশাসন জরুরি পরিষেবা চালু রেখেছেন। যদিও রসুলপুর ঘাট থেকে কাঁথি পৌঁছতে হিমশিম খেতে হচ্ছে অনেককেই। এই প্রান্তে যান চলাচল বন্ধ থাকায় মোটর বাইকের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে বলে দাবি যাতায়াতকারীদের।
কাঁথির দেশপ্রাণের বিডিও মনোজ কুমার মল্লিক বলেন, ‘‘ডাক বিভাগের কয়েকজন কর্মী-সহ খেজুরির বিপদাপন্ন মানুষের পারাপারের জন্য একটি মাত্র নৌকো চলছে। তবে প্রত্যেকে মোটর বাইক নিয়ে যাতায়াত করছে। অন্যথায় গুরুত্ব বুঝে টহলরত পুলিশের গাড়ি যাত্রীদের সহযোগিতা করছে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy