Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Lockdown

আর্ত সেবায় টক্কর সাংসদ-বিধায়কের

খাবার বিলি নিয়ে সাংসদ ও বিধায়ক গোষ্ঠীর বিরোধ এর আগেই সামনে এসেছে।

ভিন্ন: সোমবার দুপুরে রানিরবাজারে খাবার দিলেন ঘাটালের বিধায়ক (বাঁ দিকে), ওই রাতেই ঘাটাল হাসপাতাল চত্বরে পৌঁছে গেল সাংসদের পাঠানো খাবার। নিজস্ব চিত্র

ভিন্ন: সোমবার দুপুরে রানিরবাজারে খাবার দিলেন ঘাটালের বিধায়ক (বাঁ দিকে), ওই রাতেই ঘাটাল হাসপাতাল চত্বরে পৌঁছে গেল সাংসদের পাঠানো খাবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২০ ০১:২৭
Share: Save:

খাবার বিলিতেও ‘সম্মুখ সমর’!

করোনা বিপর্যয়ের মধ্যে আর্তের পাশে দাঁড়ানো নিয়ে কার্যত টেক্কা দেওয়ার লড়াই শুরু হয়েছে ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দেব এবং স্থানীয় বিধায়ক শঙ্কর দোলইয়ের মধ্যে। তারকা সাংসদ দীপক আধিকারী তথা দেবের উদ্যোগে লকডাউনের মধ্যে কয়েক দিন ধরেই ঘাটাল হাসপাতালের রোগীর পরিজনেদের রান্না করা খাবার বিলি করা হচ্ছিল। সোমবার থেকে রাতেও রান্না করা খাবার বিলি হয়েছে। সাংসদের দেখাদেখি এলাকায় দেবের ‘রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ’ হিসাবে পরিচিত ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলইও মাঠে নেমেছেন। এ দিন থেকে ১০০০ জনকে রান্না করা খাবার দেওয়া শুরু করেছেন তিনি।

খাবার বিলি নিয়ে সাংসদ ও বিধায়ক গোষ্ঠীর বিরোধ এর আগেই সামনে এসেছে। থানা-পুলিশ থেকে পাঁচ দলীয় কর্মী গ্রেফতার— সবই হয়েছে। করোনা বির্যয়ের মধ্যেও খাবার বিলি নিয়ে এই গোষ্ঠী কোন্দল ভাল ভাবে নিচ্ছেন না দলের একাংশ কর্মীও। তাঁদের বক্তব্য, সাংসদ ও বিধায়ক যৌথ ভাবে কাজটা করলে দলের ভাবমূর্তি ভাল হত, বহু মানুষ উপকৃতও হতেন। দু’পক্ষই অবশ্য একে প্রতিযোগিতা বলতে নারাজ। তাঁদের যুক্তি, সাধ্যমতো মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।

শঙ্করের যুক্তি, “বিধায়ক হিসেবে মনে হয়েছে এই পরিস্থিতিতে দুঃস্থ মানুষের পাশে থাকা জরুরি। তাই খাবার বিলি।” আর সাংসদ প্রতিনিধি রামপদ মান্না বলছেন, “যতদিন না সবকিছু স্বাভাবিক হচ্ছে, ততদিন সাধ্যমতো হাসপাতালের রোগীর আত্মীয়-সহ দুঃস্থ পরিবারগুলিকে খাবার দেওয়া হবে।”

লকডাউনে হোটেল, খাবারের দোকান সবই বন্ধ। এর ফলে সব থেকে সমস্যায় পড়েছেন ঘাটাল হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের আত্মীয়েরা। প্রতিদিন গড়ে আড়াইষো থেকে তিনশো রোগীর পরিজন হাসপাতাল চত্বরে থাকেন। তা ছাড়া ভবঘুরে ও ট্রাক চালকেরাও খাবার জোগাড়ে সমস্যায় পড়েছেন। তা জেনেই সাংসদ দেব রান্না করা খাবার পাঠাতে উদ্যোগী হন। গোড়ায় সরকার অনুমোদিত হাওড়ার রেল ক্যান্টিন থেকে খাবার ঘাটালে আসত। এখন ঘাটাল শহরেই রান্না হচ্ছে। তৃণমূলের দলীয় সূত্রের খবর, খাবার বিলির ক্ষেত্রে সাংসদ প্রতিনিধির রামপদ মান্নার প্রাধান্য মেনে নিতে পারেনি বিধায়ক গোষ্ঠীর লোকজন। গোলমালের শুরু সেখানেই।

সোমবার থেকে ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর তাঁর অনুগামীদের নিয়ে সরাসরি মাঠে নামলেন। এ দিন শহরের কুশপাতায় এক কর্মীর বাড়িতে শুরু হয়েছে রান্না। প্রথম দিন খিচুড়ি বিলি করা হয় ব্লকের ঘিসরা এবং রানিরবাজারে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার পৌঁছে দেন শঙ্করের অনুগামীরা।

প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই দেবের অনুগামীরাও। এতদিন হাসপাতালের রোগীর আত্মীয়েদের দিনের খাবার দেওয়া হত। এ দিন থেকে রাতেও রান্না করা খাবার দেওয়া শুরু হয়েছে। শুধু হাসপাতালে নয়, সাংসদ অনুগামীরা এ দিন রান্না করা খাবার পৌঁছে দেন ঘাটালের গ্রামেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Lockdown Ghatal Relief
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE