মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাদে তরুণ ডব্লুবিসিএস অফিসারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পরই স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন মৃতের পরিজনেরা। দায়ের করা হয়েছিল আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা। তারই প্রেক্ষিতে সমরেশের স্ত্রী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়িকে আটক করল পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় হুগলির চুঁচুড়া থেকেই তিনজনকে আটক করেছে মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া মানছেন, “ওই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাই মেদিনীপুরে আনা হয়েছে।” জিজ্ঞাসাবাদে সদুত্তর না মিললে গ্রেফতারও করা হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
গত ২৩ জানুয়ারি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাদ থেকে বছর বত্রিশের সমরেশের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। হুগলির চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা এই যুবক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের রেভিনিউ অফিসারের প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন শালবনিতে। বেশি মাত্রায় ঘুমের সমরেশ মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছিলেন। চিকিৎসা চলছিল সিসিইউ-তে। ২২ জানুয়ারি হাসপাতালের শয্যা থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। পরদিন গলায় গামছার ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
ওই যুবক আত্মহত্যা করেছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছিল। যদিও সমরেশের পরিজনেরা কোনও তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করানোর দাবি তোলেন। পুলিশ তদন্তে নেমে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে। পুলিশ সূত্রে খবর, সেই নোটেও সমরেশের স্ত্রী পৌলমী রায়চৌধুরী, শ্বশুর রূপক রায়চৌধুরী ও শ্বাশুড়ি মিঠু রায়চৌধুরীর নাম ছিল। তারপরই আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা রুজু হয়।
সমরেশের মৃত্যুর পরেই তাঁরা বাবা ও দাদা অভিযোগ করেছিলেন, শ্বশুরবাড়ির লোকেরা সমরেশকে নানা ভাবে মানসিক চাপ দিচ্ছিলেন। দরিদ্র পরিবারের মেধাবী সন্তান সমরেশ ডব্লুবিসিএস অফিসার হওয়ার পরে পরিবার-পরিজনের স্বপ্নপূরণ হয়েছিল। তবে তাঁর দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না। পৌলমীর সঙ্গে সমরেশের প্রেমের বিয়ে। অথচ, বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই স্ত্রী বাপের বাড়িতে চলে যান। এ ক্ষেত্রে পৌলমী শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছিলেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy