Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

রান্নার কর্মীর করোনা, হাসপাতালে দুশ্চিন্তা

উদ্বেগে রয়েছেন হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরাও। সোমবার রাতেই রান্নাঘরের ওই কর্মীর রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২০ ০৩:১৬
Share: Save:

পরিযায়ী শ্রমিকদের খাবার সরবরাহ করছিলেন। কাজের মাঝেই গলাব্যাথা ও জ্বরের উপসর্গ দেখা দেয়। সন্দেহ হতেই নেওয়া হয়েছিল লালারসের নমুনা। ৯ দিনের মাথায় সেই করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এল খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের রান্নাঘরের এক কর্মীর |

মঙ্গলবার এই ঘটনায় শহর জুড়ে শোরগোল পড়েছে। উদ্বেগে রয়েছেন হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরাও। সোমবার রাতেই রান্নাঘরের ওই কর্মীর রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। ঠিকাদারের অধীনে থাকা ওই কর্মীকে এ দিন পাঁশকুড়ার বড়মা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গত ২৩মে হাসপাতালের রান্নাঘরের ওই কর্মীর লালারস নেওয়া হয়েছিল। রিপোর্ট আসতে ৯দিন লাগায় হাসপাতাল জুড়ে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা সকলের করোনা পরীক্ষার দাবি তুলেছেন। স্বাস্থ্যকর্মীদের যুক্তি, রান্নাঘরের ওই কর্মী গত ৯দিন হাসপাতাল চত্বরে ঘোরাফেরা করেছেন। এক নার্সের কথায়, “শুনছি তো জ্বর আসার পরে রান্নাঘরের ওই কর্মীকে এই ক’দিনও খাবারের ট্রলি নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। হাসপাতালেই থাকছিল। স্বাভাবিকভাবে আমাদের পরীক্ষা হওয়া উচিত।”

কীভাবে ওই কর্মী আক্রান্ত হয়েছে সেই সূত্রের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়ের অনুমান, “৯মে নাগাদ স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগী মিলিয়ে ১০০জনের পরীক্ষা হয়েছিল। সেই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। তার পরে শ্রমিক স্পেশালে মহারাষ্ট্র থেকে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের খাবার সরবরাহ করেছিলেন এই কর্মী। সেখান থেকেই সংক্রমণের আশঙ্কা করছি।”

অবশ্য আপাতত রান্নাঘরের ঠিকাদার-সহ আক্রান্তের সংস্পর্শে সরাসরি আসা ১৬জনের নমুনা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। তবে দেরিতে রিপোর্ট আসা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “আসলে দীর্ঘদিন ধরে অনেক নমুনা জমে থাকায় রিপোর্ট দেরিতে এসেছে। আমরা ওই রান্নাঘরের কর্মীকে বড়মা হাসপাতালে পাঠাচ্ছি। রান্নাঘরটি সিল করা হচ্ছে। বাইরে থেকে হাসপাতালে খাবার আসবে। সরাসরি সংস্পর্শে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের নমুনা সংগ্রহ হবে।”

শহরবাসীর আতঙ্ক অবশ্য যাচ্ছে না। রান্নাঘরের ওই কর্মী গত ৯দিনে কার সংস্পর্শে এসেছেন, কীভাবে ছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আপাতত ওই আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা কর্মীদের হাসপাতালের নার্সিং হোস্টেলের দোতলায় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার গৃহ পর্যবেক্ষণে থাকায় উদ্বেগে এলাকাবাসী। ওই ঠিকাদারের পাড়ার বাসিন্দা রাজীব দে বলেন, “প্রশাসনের উচিত যাতে উনি ও ওঁর পরিবার সঠিকভাবে নিভৃতবাসে থাকেন সেই ব্যবস্থা করা।” যদিও ওই ঠিকাদার বলেন, “আমি গৃহ পর্যবেক্ষণে আছি। আমার ওই কর্মীর জ্বর আসার পরে ওঁকে দিয়ে কাজ করানো হয়নি। বাড়ি চলে গিয়েছিল। একদিন আগেই ফিরেছিল। তারপরে এই রিপোর্ট।”

যদিও বাড়িতে যাওয়ার কথা অস্বীকার করে আক্রান্ত ওই রান্নাঘরের কর্মী বলেন, “আমি ভেবেছিলাম এমনি জ্বর। যেদিন নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল সে রাতেই জ্বর ছিল না। তাই হাসপাতালেই ছিলাম। কাজও করছিলাম। রিপোর্ট এমনটা হবে ভাবিনি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Covid-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE