সৈয়দ সাহারি আলম। নিজস্ব চিত্র
বল হেড করার পরেই হাত নেড়ে মাঠের বাইরে থাকা সহ খেলায়াড়দের ইশারা করেছিল বছর ষোলোর ছেলেটি। তার বদলে অন্য কাউকে মাঠে নামানোর ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিল। কিন্তু বদলি হিসাবে অন্য কেউ নামার আগেই মাঠে ঢলে পড়ে সে। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
‘ঢালাই বল প্রতিযোগিতা’ (এক রকম ফুটবল খেলা। তবে এ ক্ষেত্রে বল আকারে ছোট হয়। গোলপোস্টও ছোট) চলাকালীন হলদিয়ায় মৃত্যু হয়েছে এক কিশোরের। সৈয়দ সাহারি আলম (১৬) নামে ওই কিশোরের বাড়ি পুর এলাকার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে। স্থানীয় সূত্রের খবর, বর্ষবরণ উপলক্ষে ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির তরফে ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। তারই অংশ হিসাবে সকালে শুরু হয়েছিল ঢালাই বল প্রতিযোগিতা। খান এন্টারপ্রাইজ এবং দাসের মোড় দলের মধ্যে খেলা চলছিল। খান এন্টারপ্রাইজ দলের ডিফেন্ডার ছিল সৈয়দ। সকাল ১১টা নাগাদ খেলা চলাকালীন হেড দিয়ে একটি বল পাস করে সে। তারপরে সে হাত দিয়ে বোঝাতে থাকে যে, তার পরিবর্তে অন্য খেলোয়াড় নামানো হোক। কিন্তু পর মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সৈয়দ।
স্থানীয়েরা সৈয়দকে দ্রুত হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তরতাজা এক কিশোর এমন সামান্য বল হেড করে মারা যেতে পারে, এ কথা প্রথমে বিশ্বাসই করতে চাননি স্থানীয়েরা এবং সহ খেলোয়াড়েরা। তাঁরা সৈয়দকে নিয়ে সেখান থেকে বিসি রায় হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানেও চিকিৎসকেরা ওই খেলোয়াড়কে মৃত বলে জানান।
উল্লেখ্য, রবিবারই কেরলে ফুটবল খেলার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ফুটবলার আর ধনরাজনের। বছর উনচল্লিশের ধনরাজন কলকাতা ময়দানের পরিচিত মুখ ছিলেন। খেলেছেন মোহনবাগান এবং মহমেডানে। সৈয়দের সহ খেলোয়াড়েরা জানাচ্ছেন, আগে খেলতে গিয়ে কখনও এরকম ভাবে পড়ে যায়নি সৈয়দ বা খেলার সময় কোনও রকম অসুস্থার লক্ষণ তাঁরা দেখেননি। সহ খেলোয়াড় শেখ রাকিবুল বলেন, ‘‘এ দিন বল হেড করার পরে ও অস্বস্তি অনুভব করছিল বলে মনে হয়। কিছু একটা বলার চেষ্টা করছিল। তারপর হঠাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। কি হল বুঝতে পারলাম না।’’
সৈয়দের পড়শিরা জানাচ্ছেন, সৈয়দ সুস্থই ছিল। কি করে এমন হল, তা তাঁরাও বুঝতে পারছেন না। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানার জন্য দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। তবে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতাল সূত্রের খবর, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই কিশোরের। আপাতত ভবানীপুর থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে।
অল্প বয়স্ক এমন এক কিশোরের মৃত্যুতে ১৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় শোকের ছায়া। বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন বাবা-মা। তরুণ ওই খেলোয়াড়ের মৃত্যুতে বর্ষবরণের অন্য অনুষ্ঠানগুলি বাতিল করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় কাউন্সিলর তথা পুরপারিষদ শেখ আজগর আলি। তিনি বলেন, ‘‘সত্যিই দুঃখজনক। মৃতের পরিবারের পাশে আমরা রয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy