কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাপসের মা। ছবি: সোহম গুহ।
নাইলন দড়ি নিয়ে এক কর্মী শনিবার সন্ধেয় কারখানায় ঢুকছে দেখে সন্দেহ হয় নিরাপত্তারক্ষীদের। নিরাপত্তারক্ষীদের দাবি, এ নিয়ে প্রশ্ন করলে ওই তরুণ গ্যাস সিলিন্ডার বেঁধে নিয়ে যাওয়ার জন্য দড়ি কিনেছে বলে জানায়। রবিবার রামনগর থানার পিছাবনির ওই বাগদা প্রক্রিয়াকরণ কারখানায় তাপস গিরি (২৩) নামে ওই তরুণের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, কারখানার একটি ঘরে ছাদের হুকের সঙ্গে নাইলনের দড়ি লাগিয়ে ঝুলতে দেখা যায় তাঁকে। যদিও মৃতের বাবা পূর্ণচন্দ্র গিরির অভিযোগ, কারখানার ভিতরে তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়েছে।
রামচন্দ্রনগরের বাসিন্দা তাপস বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। মৃতের বাবা পূর্ণচন্দ্রবাবু পেশায় আইসক্রিম বিক্রেতা। এলাকায় বাম কর্মী হিসেবেই তিনি পরিচিত। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর বছর দেড়েক আগে তাপস পিছাবনির ওই কারখানায় কাজ করতে ঢোকে। কারখানার তিন তলার একটি ঘরে অপর এক সহকর্মীর সঙ্গে থাকত তাপস। ওই সহকর্মী সম্পর্কে তাপসের পিসেমশাই। তিনি ছুটি নেওয়ায় শনিবার রাতে ঘরে একাই ছিল তাপস। রবিবার সকালে ওই ঘর থেকেই তাপসের দেহ উদ্ধার হয়।
রামনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন তৃণমূল সদস্য তথা কারখানার মালিক মীর মমরেজ আলি জানান, ‘‘রবিবার সকালে কারখানার নিরাপত্তারক্ষীরা তাপসের ঘরের চাবি চাইতে গিয়ে দেখে, দরজা খোলা। ঘরের ভিতরে ছাদের একটি হুকের সঙ্গে নাইলনের দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাঁর দেহ ঝুলতে দেখা যায়। রামনগর থানায় ঘটনার খবর দেওয়া হয়।’’
একমাত্র সন্তানের মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ পূর্ণচন্দ্রবাবু। তাঁর অভিযোগ, ‘‘তাপস আত্মহত্যা করতে পারে না। কারখানার কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে ওঁর বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জেরেই আমার ছেলেকে কারখানার ভিতরে খুন করা হয়ে থাকতে পারে।’’ কালিন্দী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সিপিএম প্রধান অশোক মাইতি ও উপ-প্রধান সুনির্মল চুয়ান অভিযোগ করেন, “সুপরিকল্পিত ভাবে তাপসকে কারখানার ভিতরে খুন করা হয়েছে।”
খুন না আত্মহত্যা, তাপসের মৃত্যুর কারণ জানতে কারখানার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার দাবিতে এ দিন পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ স্থানীয়দের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার বিকেল পর্যন্ত মৃতের বাড়ির পক্ষ থেকে রামনগর থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা রুজু করেছে। মৃতদেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলেই তাপসের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy