দেবাশিসের বাড়িতে প্রতিনিধি দল। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বাধায় এখনও পর্যন্ত রাজ্যের প্রায় দু’শো কলেজে মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি বলে অভিযোগ তুলেছে এবিভিপি। রবিবার হলদিয়ার মহিষাদলে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এই তথ্য জানিয়ে সংগঠনের রাজ্য সভাপতি রমণ ত্রিবেদী ওই আসনগুলিতে পুনর্নির্বাচনের দাবি তুললেন।
এবিভিপি-র রাজ্য সভাপতির কথায়, “চলতি সপ্তাহে আহত ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে এক প্রতিনিধি দল রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করবে। সেখানে রাজ্যপাল তথা আচার্যের কাছে প্রায় দু’শো কলেজে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানানো হবে।” বিভিন্ন কলেজে টিএমসিপি কী ভাবে দখলের রাজনীতি করেছে, তা-ও আচার্যকে জানানো হবে, বলছেন রমণ।
মনোনয়ন জমা দিতে দিয়ে জখম মহিষাদল রাজ কলেজের ছাত্র, এবিভিপি কর্মী দেবাশিষ জেঠিকে দেখতে এ দিন দুপুরে তাঁর বাড়িতে যান এবিভিপি-র রাজ্য সভাপতি, দুই মেদিনীপুরের পর্যবেক্ষক অসীম মিশ্র, রাজ্যনেত্রী সুস্মিতা বসাক, মেঘনাদ দাস-সহ এক প্রতিনিধি দল। মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে শনিবার টিএমসিপি-র মারধরে দেবাশিস-সহ তিন জন আহত হন বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে অবশ্য সে দিনই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এবিভিপি-র রাজ্য সভাপতির দাবি, টিএমসিপি-র হামলায় রাজ্যে সব মিলিয়ে সাতশোরও বেশি কর্মী আহত হয়েছেন। তার মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের প্রায় তিরিশ জন রয়েছেন। পুলিশ-প্রশাসনের সামনেই অধিকাংশ হামলা চালিয়েছে টিএমসিপি, অভিযোগ রমণের। তাঁর দাবি, রাজের দেড়শোরও বেশি কলেজে ৭০০ কর্মীকে মনোনয়ন জমায় বাধা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “মনোনয়ন সংক্রান্ত গোটা বিষয়টি মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রককেও জানানো হবে।”
দুই মেদিনীপুরের পর্যবেক্ষক অসীম মিশ্র জানান, মনোনয়ন পর্বে বাধার প্রতিবাদে আজ, সোমবার জেলাজুড়ে বিভিন্ন কলেজ এবং ব্লক-মহকুমা ও জেলা প্রশাসনের অফিসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে ডেপুটেশন দেওয়া হবে। ‘সেভ ক্যাম্পাস, সেভ এডুকেশন’— এই দাবিতে দুই মেদিনীপুরের কলেজে লাগাতার আন্দোলনও চলবে।
মহিষাদলের আগে এবিভিপি-র রাজ্য প্রতিনিধি দল নন্দকুমার কলেজে যায়। মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে টিএমসিপি-র কর্মীদের হাতে নন্দকুমার কলেজ ইউনিটের আহ্বায়ক বিষ্ণুপদ চক্রবর্তী-সহ কয়েক জন প্রহৃত হন বলে অভিযোগ। আহ্বায়কের দাবি, অধ্যক্ষের টেবিলে তিনি মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু, অধ্যক্ষের সামনেই টিএমসিপি-র কর্মীরা তাঁর মনোনয়ন ছিঁড়ে দেন। অন্যদেরও মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়া হয়। বিষ্ণুপদ চক্রবর্তীর অভিযোগ, “এর ফলে কলেজে কোনও মনোনয়নই জমা দেওয়া যায়নি।”
এমন হামলার নিন্দা করেছে এবিভিপি-র রাজ্য প্রতিনিধি দল। এবিভিপি-র রাজ্য সভাপতি নন্দকুমার কলেজেও পুনর্নির্বাচনের দাবি তুলেছেন। রমণের অভিযোগ, “সংগঠনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে দেখে গায়ের জোরে কলেজের দখল নিতে চাইছে টিএমসিপি।” এবিভিপি নেতৃত্ব অনলাইনে মনোনয়ন তোলার পাশাপাশি জমা করার দাবিও তুলেছেন। টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি দীপক দাসের অভিযোগ, “পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকাংশ কলেজে এবিভিপি-র কোনও সংগঠন নেই। সমর্থকও নেই। মিথ্যে অভিযোগ করে পড়ুয়াদের বিভ্রান্ত করছে ওরা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy