Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কটূক্তির প্রতিবাদ, মেচেদায় প্রহৃত দাদা

বোন ও তার বান্ধবীকে কটূক্তির প্রতিবাদ করায় মার খেতে হল দাদাকে। বৃহস্পতিবার রাতে কোলাঘাট থানার মেচেদা কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডের ওই ঘটনায় পুলিশ আসার আগেই পালায় অভিযুক্ত দুই যুবক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৫১
Share: Save:

বোন ও তার বান্ধবীকে কটূক্তির প্রতিবাদ করায় মার খেতে হল দাদাকে। বৃহস্পতিবার রাতে কোলাঘাট থানার মেচেদা কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডের ওই ঘটনায় পুলিশ আসার আগেই পালায় অভিযুক্ত দুই যুবক। শুক্রবার বিকেলে কোলাঘাট থানায় আক্রান্ত ব্যক্তি অজ্ঞাতপরিচয় দুই যুবকের বিরুদ্ধে বোন ও তার বান্ধবীকে কটূক্তি এবং ঘটনার প্রতিবাদ করায় তাঁকে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগকারী ব্যক্তির দাবি, বাসে উঠে দুই যুবক বোন ও তাঁর বান্ধবীকে কটূক্তি করে ও হাত ধরে টানার চেষ্টা করে। সেই সময় তারা বাসের চালক ও খালাসির সাহায্য চেয়েও পায়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুল ছাত্রী ওই দুই বান্ধবীর মধ্যে এক জনের বাড়ি মেচেদায়। অন্য জন তমলুকের কাঁকটিয়া এলাকার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার বিকেলে মেচেদায় টিউশনি পড়তে গিয়েছিল ওই দুই কিশোরী। রাত ৮টা নাগাদ বাড়ি ফেরার জন্য মেচেদা কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে বান্ধবীকে তমলুকগামী বাসে তুলতে আসে অপর বান্ধবী। বাস ছাড়তে দেরি থাকায় তারা দু’জনে বাসে বসেই কথা বলছিল। অভিযোগ, সেই সময় বাস চালকের পিছনের আসনে বসে থাকা দুই যুবক তাদের উদ্দেশে কটূক্তি করে। এমনকী তাঁরা এক কিশোরীর হাত ধরে টানার চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ। সেই সময় তারা বাসের চালক ও খালাসির সাহায্য চান। যদিও তাঁরা সেই কথায় গুরুত্ব দেননি। তখন উপায় না দেখে মেচেদার বাসিন্দা কিশোরী তার দাদাকে ফোন করে ঘটনার কথা জানায়। খবর পেয়েই ওই ছাত্রীর দাদা বাসস্ট্যান্ডে যান। বাসে উঠে বোন ও তাঁর বান্ধবীকে কটূক্তি করার প্রতিবাদ করেন ওই ব্যক্তি। অভিযোগ, সেই সময় ওই দুই যুবক তাঁকে চড়, ঘুষি-সহ মারধর করে। গণ্ডগোলের খবর পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসে। কিছুক্ষণ পরে আসে পুলিশও। যদিও ততক্ষণে ওই দুই যুবক চম্পট দেয়।

ওই ছাত্রীর দাদার অভিযোগ, “টিউশন পড়ে বাড়ি ফেরার জন্য বোনের বান্ধবী বাসে উঠেছিল। বোন তাকে এগিয়ে দিতে এসেছিল। কিন্তু বাসে ওঠার পরে চালকের আসনে বসে থাকা দু’জন মদ্যপ অবস্থায় ওদের উত্যক্ত করছিল। ওদের হাত ধরে টানারও চেষ্টা করে তাঁরা।” তাঁর দাবি, ঘটনার সময় বাসের চালক-খালাসির কাছে সাহায্য চাইলেও তাঁরা সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি। ফোনে আমাকে ডাকার পরে আমি গিয়ে ওই দুই যুবকের আচরণের প্রতিবাদ করি। তাঁরা আমাকে পাল্টা মারধর করে। আমাকে মারধর করার সময়ও তাঁদের বাধা দেওয়া হয়নি।

প্রশ্ন উঠেছে, ওই বাসের কর্মীদের কাছে সাহায্য চাওয়া সত্বেও তাঁরা এগিয়ে এলেন না কেন? মেচেদা বাসস্ট্যান্ডে তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত বাস কর্মী ইউনিয়েনের নেতা জামশেদ আলি বলেন, “বাসস্ট্যান্ডের ঘটনায় জড়িত দু’জনেই দুষ্কৃতী। ওই ছাত্রীরা সাহায্য চাওয়ার পরেও কেন বাস কর্মীরা সাহায্য করতে এগিয়ে গেলেন না, তা বুঝতে পারছি না।” তাঁর দাবি, ইউনিয়ন অফিসের কর্মীরা ঘটনার কথা জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের ধরার জন্য পুলিশকে জানিয়েছি। কোলাঘাট থানার পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে মেচেদা বাসস্ট্যান্ডে স্কুল ছাত্রী দুই কিশোরীকে ইভিটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় তাঁদের এক আত্মীয়কে মারধরের ঘটনা নিয়ে অভিযোগ পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আক্রান্ত ওই ব্যক্তির কাছ থেকে ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরেই অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করা হয়েছে। তদন্তে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tamluk
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE