Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
ঘাটাল কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ব্যাঙ্ক

ব্যাঙ্কের ভোটেও তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে

লোকসানে ধুঁকছে একসময় পুরস্কৃত ঘাটাল কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ব্যাঙ্ক। অথচ সেই ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির নির্বাচন ঘিরে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। রবিবার ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির নির্বাচন ছিল। সোমবার ছিল ভোট গণনা। গত মঙ্গলবারেই খড়্গপুরে কর্মিসভায় সবাইকে একসঙ্গে চলার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:১৮
Share: Save:

লোকসানে ধুঁকছে একসময় পুরস্কৃত ঘাটাল কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ব্যাঙ্ক। অথচ সেই ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির নির্বাচন ঘিরে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। রবিবার ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির নির্বাচন ছিল। সোমবার ছিল ভোট গণনা। গত মঙ্গলবারেই খড়্গপুরে কর্মিসভায় সবাইকে একসঙ্গে চলার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী।

সেই বার্তার এক সপ্তাহের মধ্যেই ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির ভোটে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় বিড়ম্বনায় দলীয় নেতৃত্ব। যদিও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “আমি এখনই এ ব্যাপারে কিছু বলব না। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতিতে ঘাটাল মহকুমার ঘাটাল, দাসপুর-১, দাসপুর-২, চন্দ্রকোনা-১, চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের মোট ৯৮টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে ঘাটাল ব্লকে ২৩টি, দাসপুর-১ ব্লকে ১৯টি, দাসপুর-২ ব্লকে ৯টি, চন্দ্রকোনা-১ ব্লকে ২৩টি ও চন্দ্রকোনা-২ ব্লকে ১৯টি আসন রয়েছে। মহকুমার এই পাঁচটি ব্লকের চাষিদের কৃষি ঋণ ও কৃষি সরঞ্জাম কেনার জন্য এই ব্যাঙ্ক থেকে লোন দেওয়া হয়। ২০০৩ ও ২০০৪ সালে ওই ব্যাঙ্কটি ভাল কাজের জন্য গোটা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কারও পেয়েছিল। আগে ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। ২০০৯ সালে কংগ্রেসকে হারিয়ে পরিচালন সমিতির দায়িত্ব পায় তৃণমূল।

প্রতি পাঁচ বছর অন্তর এই ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির ভোট হয়। সেই মতো এ বছরও গত রবিবার পরিচালন সমিতির ভোট হয়। এ বার নির্বাচনে তৃণমূল বাদে কোনও দলই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি। ফলে ঘাটাল, দাসপুর-১, দাসপুর-২ ব্লকে বিনা ভোটেই ফের ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। কিন্তু চন্দ্রকোনা-১ ও ২ ব্লকে আসন ভাগাভাগি নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর কোন্দলে জল গড়ায় ভোটের দিকে। ভোটে পরিচালন সমিতিতে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী একে অপরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। চন্দ্রকোনা-১ ব্লকে তৃণমূলের সভাপতি চিত্ত পালের গোষ্ঠীর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সুজয় পাত্রের গোষ্ঠীর সঙ্গে।

এ বিষয়ে চিত্ত পালের সাফাই, “আলোচনার মাধ্যমে আসন ভাগাভাগির চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু মতান্তর থাকায় নির্বাচন হল।” একই বক্তব্য সুজয় পাত্রেরও। চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের ভোটে তৃণমূলের সভাপতি অমিতাভ কুশারীর গোষ্ঠীর মুখোমুখি ব্লকের সহ-সভাপতি হীরালাল ঘোষের গোষ্ঠী। যদিও এ দিন রাত পর্যন্ত চন্দ্রকোনা-১ ও ২ ব্লকে ভোট গণনা চলেছে।

ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, বিগত কয়েক বছর ধরেই ঘাটাল কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ব্যাঙ্ক লোকসানে চলছে। লোকসানের বহরও ক্রমে বেড়েছে। আর্থিক অঙ্কে যার পরিমাণ প্রায় কয়েক কোটি টাকা। ব্যাঙ্কের সাধারণ গ্রাহকদের প্রশ্ন, আর্থিক ক্ষতিতে চলা ব্যাঙ্ককে বাঁচানোর চিন্তা না করে ভোট নিয়ে গোষ্ঠী কোন্দল করে লাভ কী?

ব্যাঙ্কের ক্ষতির কথা স্বীকার করে তৃণমূল পরিচালিত ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান জহরলাল হাজরা বলেন, “আমি যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখনকার থেকে ক্ষতির পরিমাণ এখন অনেকটাই কমেছে। তবে এখনও ব্যাঙ্কের লোকসানের পরিমাণ এক কোটি টাকার বেশি। আমরা সেই টাকা আদায় করে ব্যাঙ্ককে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানোর চেষ্টা করছি।” যদিও ঘাটাল কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ব্যাঙ্কের ভোট ঘিরে গোষ্ঠী কোন্দলের বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE