Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বন্ধ কার্যালয় খোলার দাবি সিপিএমের

পশ্চিম মেদিনীপুরের নতুন পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখরের সঙ্গে দেখা করে দলের দলের বন্ধ কার্যালয়গুলো খোলার ব্যবস্থা করার দাবি জানালো সিপিএম। সিপিএমের দাবি, এই মুহুর্তে জেলায় প্রায় দেড়শো দলীয় কার্যালয় বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। তৃণমূলের লোকজনদের বাধায় খোলা যাচ্ছে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০০:৫৫
Share: Save:

পশ্চিম মেদিনীপুরের নতুন পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখরের সঙ্গে দেখা করে দলের দলের বন্ধ কার্যালয়গুলো খোলার ব্যবস্থা করার দাবি জানালো সিপিএম। সিপিএমের দাবি, এই মুহুর্তে জেলায় প্রায় দেড়শো দলীয় কার্যালয় বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। তৃণমূলের লোকজনদের বাধায় খোলা যাচ্ছে না। নতুন পুলিশ সুপারের কাছে জেলায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার দাবিও জানান নেতৃত্ব।

সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক তরুণ রায়ের কথায়, “জেলায় আমাদের বহু কার্যালয় বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। সংখ্যাটা প্রায় দেড়শো। আমরা বন্ধ কার্যালয়গুলো খোলার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছি।” নতুন পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে যে তাঁরা সন্তুষ্ট, সেই কথাও জানাচ্ছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক। তরুণবাবুর কথায়, “এটা সৌজন্য সাক্ষাত্‌ ছিল। পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলে আমরা সন্তুষ্ট। উনি আমাদের সব কথা শুনেছেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন।” জেলা পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখরও বলেন, “এক প্রতিনিধি দল এসেছিল। কিছু দাবি জানিয়েছে। দেখছি।” বুধবার দুপুরে জেলা সিপিএমের তিন সদস্যের এক দল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আসেন। নেতৃত্বে ছিলেন দলের জেলা সম্পাদক তরুণবাবু। দলীয় বিধায়কদের তরফে এই দলে ছিলেন কেশপুরের বিধায়ক রামেশ্বর দোলুই।

দলের এক সূত্র জানাচ্ছে, সিপিএমের প্রতিনিধি দলের এই দেখা করার বিষয়টি দু’দিন আগেই ঠিক হয়। গত সোমবার পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করেন রামেশ্বরবাবু। বিধায়ক হিসেবেই তিনি ওই দিন পুলিশ সুপারের কাছে এসেছিলেন। সেই সময়ই রামেশ্বরবাবু জানিয়ে গিয়েছিলেন, দলের এক প্রতিনিধি দল দেখা করতে আসবে। জবাবে পুলিশ সুপার জানিয়েছিলেন, কেন নয়? যে কোনও দিন ওই দেখা করা যেতে পারে। এরপরই ঠিক হয়, সৌজন্য সাক্ষাত্‌ হবে বুধবার। সেই মতোই তরুণবাবুর নেতৃত্বে জেলা সিপিএমের তিন সদস্যের দলটি এ দিন দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আসে। এর আগে জেলা কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলও নতুন পুলিশ সুপারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্‌ করেছে। বস্তুত, পূর্বতন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের সঙ্গে সিপিএমের সম্পর্ক খুব ভাল ছিল না। পুলিশ সুপার পক্ষপাতদুষ্ট, এই অভিযোগে প্রায়ই সরব হতেন দলীয় নেতৃত্ব। অবশ্য দলের তরফে ভারতীদেবীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন কেশপুরের বিধায়ক। দলই তাঁকে এই দায়িত্ব দিয়েছিল।

জেলার কোথাও কোনও গোলমাল হলে, দলীয় কর্মীরা আক্রান্ত হলে রামেশ্বরবাবুই ফোন করে পূর্বতন পুলিশ সুপারকে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানাতেন। জেলা পুলিশের এক সূত্রের দাবি, কিছু ক্ষেত্রে ভারতীদেবী কড়া ব্যবস্থাও নিয়েছেন। ওই সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, সিপিএমের সিঙ্গুর- শালবনি পদযাত্রা নির্বিঘ্নে চন্দ্রকোনা, কেশপুরের মতো ‘স্পর্শকাতর’ এলাকার উপর দিয়ে আসে। অথচ, সামান্য কোনও গোলমালও হয়নি। কড়া পুলিশি পাহারার ব্যবস্থা করায় পদযাত্রা শেষে ভারতীদেবীর মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে ধন্যবাদও জানান সিপিএমের এক বিধায়ক। জেলা সিপিএমের এক নেতার অবশ্য বক্তব্য, “পূর্বতন পুলিশ সুপার কতটা শাসক দলের হয়ে কাজকর্ম করে গিয়েছেন তা মানুষ জানেন! সিঙ্গুর- শালবনি পদযাত্রার সময়ে তেমন কোনও বড় গোলমাল হয়নি এটা ঠিক। তবে এর পিছনে অন্য কারণ রয়েছে! নির্বাচন কমিশনের নজরদারি ছিল। তাই বোধহয় পুলিশ অতটা সক্রিয় ছিল! তাছাড়া, পুলিশের কাজ তো শুধু শাসক দলের স্বার্থরক্ষা করা নয়!”

জেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় যে তৃণমূল এখনও সন্ত্রাস করছে, দলীয় কর্মী- সমর্থকেরা এখনও ঘরছাড়া রয়েছে, সেই কথাও এ দিন জেলা পুলিশ সুপারকে জানান তরুণবাবুরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cpm office open demand
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE