ঘাটাল শহরের আড়গোড়ায় রাস্তার পাশে গাড়ির সারি। —নিজস্ব চিত্র।
ফুটপাথ দখল হয়েছিল আগেই। এ বার ঘাটাল শহরে ঢোকার প্রধান সড়কও আস্তে আস্তে দখলে চলে যাচ্ছে লরি-বাসের সারির। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তা আটকেই চলছে ইঞ্জিন বা গাড়ি মেরামতির কাজ। ফলে সঙ্কীর্ণ ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতে সমস্যা বাড়ছে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনাও। শহরের কুশপাতা থেকে আড়গোড়া, কৃষ্ণনগর ও ময়নাপুকুর মোড়-সহ এলাকার চেনা ছবি এটাই। শহরবাসীর অভিযোগ, প্রশাসন এই সমস্ত কিছু দেখেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘাটাল শহরে ঢোকার আগে নিমতলার পর থেকে একেবারে ময়রাপুকুর মোড় পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে দাঁনিয়ে রয়েছে বাস-লরির সারি। স্থআনীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, আগে সামান্য সময়ের জন্য রাস্তা আটকে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকত। কিন্তু এখন রাস্তার উপরই গাড়ি মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। ফলে ক্রমশ শহরের অর্ধেক প্রশাসনের মদতেই চালদকের এবং গ্যারেজ মালিকরা বেপরোয়া হয়ে গিয়েছেন। দাসপুর- ঘাটালের প্রধান দু’টি সড়কেরও ছবিটা একই। এমনকী কোথাও কোথাও আবার শুধু গাড়ি সারানো নয়, চালক-খালাসিরা খাওয়া-দাওয়া সেরে বিশ্রামও নিচ্ছেন ওই রাস্তাতেই। রাস্তার পাশে পূর্ত দফতরের অনেক জায়গাই বেদখল হয়ে গিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ঘাটাল-পাঁশকুড়া সড়কটি বিআরজিএফ প্রকল্পে আগের চেয়ে চওড়া হয়েছে। রাস্তার মানও আগের তুলনায় ভাল হয়েছে। ফলে গাড়ির গতিও এখানে বেশি থাকে। আর তাই রাস্তা দখল করে বাস-লরি দাঁড়িয়ে থাকায় দুর্ঘটনা বাড়ছে। ঘাটাল শহরের উপর দিয়ে স্থানীয় ও দুরপাল্লা মিলিয়ে প্রায় শতাধিক বাস চলাচল করে। জাতীয় সড়ক ব্যবহার না করে অনেক সময় চন্দ্রকোনা রোড থেকে বহু গাড়ি ঘাটালের উপর দিয়েই যাতায়াত করে।
পুলিশের তথ্য বলছে, গত তিন মাসে দাসপুর ও ঘাটাল থানার দুই শহরাঞ্চল এলাকায় প্রায় চল্লিশটির মতো বাইক-সহ লরি-বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মারা গিয়েছেন প্রায় ১৩ জন। আহতের সংখ্যা ৫০ জনেরও বেশি। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, “বাস-লরি দাঁড়িয়ে কাজ করানো থেকে শুরু করে রাস্তাকে স্ট্যান্ড হিসাবে ব্যবহার করার ফলেই দুর্ঘটনা ঘটছে। এছাড়াও যানযট তো রয়েইছে।”
ঘটনায় কথা স্বীকার করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পুরসভার চেয়ারম্যান বিভাস ঘোষও। তাঁর কথায়, “বিষয়টি নিয়ে আমি পুলিশকে বহুবার বলেছি। এলাকায় ঢোকার মুখেই যাতে কোনও বাস-লরি পথ আটকে এভাবে দাঁড়িয়ে না থাকে তার জন্য পুরসভার তরফে অভিযান চালানো হবে।” ঘাটালের সিআই সোমনাথ দত্ত বলেন, “মাঝে মধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হয়। রুটিন অভিযানে চালকদের নিষেধও করা হয়। তা সত্ত্বেও এই প্রবণতা কমানো যাচ্ছে না। এ বার এমন কাজ বন্ধ করতে বাস-লরি চালকদের নামে মামলা করা শুরু হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy