Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জৈব সার তৈরির প্রকল্প আনুলিয়ায়

সব্জির খোসা থেকে জৈবসার তৈরি করে বেকারদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ রুখতে দিশা দেখাচ্ছে রানাঘাটের আনুলিয়া গ্রামপঞ্চায়েত। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, আনুলিয়া পঞ্চায়েতটি রানাঘাট শহর লাগোয়া হওয়ায় বাসিন্দাদের ময়লা ফেলতে খুব সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা যেখানে সেখানে ময়লা ফেলায় রাস্তাঘাট নোংরা হচ্ছিল। সেই সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য ২০১৩ সালে রানাঘাট রেল স্টেশন থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে চূর্নী নদীর ধারে দেড় বিঘা জমির উপর সব্জির খোসা থেকে জৈবসার তৈরির একটি প্রকল্প গড়ে তোলা হয়।

সৌমিত্র সিকদার
রানাঘাট শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:১১
Share: Save:

সব্জির খোসা থেকে জৈবসার তৈরি করে বেকারদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ রুখতে দিশা দেখাচ্ছে রানাঘাটের আনুলিয়া গ্রামপঞ্চায়েত।

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, আনুলিয়া পঞ্চায়েতটি রানাঘাট শহর লাগোয়া হওয়ায় বাসিন্দাদের ময়লা ফেলতে খুব সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা যেখানে সেখানে ময়লা ফেলায় রাস্তাঘাট নোংরা হচ্ছিল। সেই সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য ২০১৩ সালে রানাঘাট রেল স্টেশন থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে চূর্নী নদীর ধারে দেড় বিঘা জমির উপর সব্জির খোসা থেকে জৈবসার তৈরির একটি প্রকল্প গড়ে তোলা হয়। এ জন্য খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৯ লক্ষ টাকা। পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান স্বপন ঘোষ বলেন, “এখানে ৬ হাজারেরও বেশি পরিবারের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে এক হাজার পরিবারকে নিয়ে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়েছে। এর ফলে গ্রাম যেমন পরিচ্ছন্ন হয়েছে তেমনি কয়েক জন বেকার যুবকের কর্মসংস্থানও সম্ভব হয়েছে।”

পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, ওই এক হাজার বাড়িতে পঞ্চায়েতের তরফে প্লাস্টিক ফেলার জন্য একটি লাল ও পচনশীল বস্তু ফেলার জন্য একটি সবুজ রঙের বালতি দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক দিন সকালে বাঁশি বাজলেই লাল ও সবুজ রঙের বালতি নিয়ে ঘরের মহিলারা হাজির হচ্ছেন ময়লা ফেলার গাড়ির সামনে। গাড়িতে তুলে দিচ্ছেন বালতির আবর্জনা। গাড়ি করে ওই সব জিনিস পত্র সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়া হয় কায়েতপাড়ায় ওই প্রকল্পে। প্লাস্টিক পরিষ্কার করে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে প্লাস্টিক সংগ্রাহকদের কাছে। আর সব্জির খোসাকে ধাপে ধাপে পচিয়ে, শুকিয়ে তৈরি করা হচ্ছে জৈব সার। বিভিন্ন মেলা বা বিক্রয় কেন্দ্র থেকে প্রতি ২৫ কেজি জৈব সার ১২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

প্রকল্পের সুপার ভাইজার সৌরভ ঘোষ জানান, সংগৃহীত সব্জির খোসা নির্দিষ্ট চেম্বারে রেখে তার উপর মাটি ও গোবরের মিশ্রণ ছড়িয়ে দিয়ে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এভাবে দিন সাতেক রাখার পর আবার তা খুলে ফেলে সব্জির খোসা নেড়ে চেড়ে আবার তার উপর মাটি ও গোবরের মিশ্রণ ছিটিয়ে দেওয়া হয়। সাধারণত এভাবে ২১ দিন রাখার পর পাশে অন্য চেম্বারে শুকোতে দেওয়া হয়। এগুলি শুকিয়ে যাওয়ার পর ব্যাগ বন্দি করে বিভিন্ন মেলা এবং কেন্দ্র থেকে এই জৈব সার বিক্রি করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিদের ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দল ওই পঞ্চায়েত পরিদর্শন করতে যান। দলের কো-অর্ডিনেটর সৌরেন বসু বলেন, “জৈব সার তৈরির প্রকল্পটি খুব ভাল।” রাণাঘাট-১ বিডিও অনুপম চক্রবর্তী বলেন, “পঞ্চায়েতের ওই প্রকল্প পরিদর্শন করে ওরা খুশি হয়েছেন।”

স্থানীয় বাসিন্দা মনিকা হালদার বলেন, “বাড়ি থেকে জিনিস সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়ে পরে তা কাজে লাগানো হচ্ছে জেনে ভাল লাগছে। এতে শুধু বাড়িঘর পরিষ্কার নয় ফেলে দেওয়া আবর্জনা মানুষেক কাজেও আসছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

soumitra sikdar ranaghat anuliya panchayat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE