বন্ধ হয়ে যাওয়া ১৪০টি শিশুশ্রমিক স্কুল ফের চালু করার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। স্কুলছুট শিশুশ্রমিকদের শিক্ষার মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি মুর্শিদাবাদেও স্কুল চালু হয়েছিল। জাতীয় শিশুশ্রম প্রকল্পের অধীনে জেলার ১৪০টি স্কুলে প্রায় ৬ হাজার ২০০ জন শিশু শ্রমিক পড়াশোনাও করত। কিন্তু পড়ুয়াদের বৃত্তি, শিক্ষাকর্মীদের পর্যাপ্ত ভাতা কেন্দ্রীয় সরকার না দেওয়া-সহ বিভিন্ন কারণে প্রায় তিন বছর আগে স্কুলগুলি বন্ধ হয়ে যায়। তার পর থেকে শিশুশ্রমিক স্কুল চালু হয়নি। ফলে শিশুশ্রমিকদের শিক্ষার মূতস্রোতে ফিরিয়ে আনার প্রকল্প এখন বিশবাঁও জলে!
মুর্শিদাবাদ জেলায় মূলত জঙ্গিপুর মহকুমায় বিড়ি শিল্পকে কেন্দ্র করে রঘুনাথগঞ্জ ১ ও ২, সুতি ১ ও ২, ফরাক্কা, শমসেরগঞ্জে ওই স্কুল চালু হয়েছিল। প্রথম-চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা হত। ১৪০টি স্কুলে ৩৮৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করা হয়েছিল। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভাতা এবং পড়ুয়াদের বৃত্তি বকেয়া-সহ নানা কারণে ২০১৫ সালে মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়ে। তবে ওই স্কুলগুলি নতুন করে কী ভাবে খোলা যায়, সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, প্রকল্প চালু থাকাকালিন শিশুশ্রমিক পড়ুয়াদের বৃত্তি ও শিক্ষাকর্মীদের ভাতা বকেয়া-সহ বিভিন্ন বিষয়ে কেন্দ্র থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠায়। অনলাইনে সেই সব তথ্য পাঠান হয়েছে। তবে ফের ওই প্রকল্প চালু হবে কিনা, সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।
রঘুনাথগঞ্জ-২ ব্লকের মিঠিপুর শিশুশ্রমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সৌমিত্র সিংহ রায় বলছেন, ‘‘২০১৩ সালের পর থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাম্মানিক ভাতা ও পড়ুয়াদের বৃত্তি বন্ধ করে দেওয়ার পরেই ২০১৫ সালে স্কুল বন্ধ হয়ে যায়।’’ তাঁর দাবি, ১৭ মাসের সাম্মানিক ভাতা ও পড়ুয়াদের বৃত্তি এখনও বকেয়া রয়েছে। তবে জঙ্গিপুর মহকুমা এলাকার অসংখ্য শিশুশ্রমিকের স্বার্থেই স্কুলগুলি চালু হওয়া দরকার।মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলাগানাথন জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। অন্য দিকে, মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি তৃণমূলের মোশারফ হোসেন মণ্ডল বলছেন, ‘‘বেশ কয়েক বছর থেকে শিশুশ্রমিক স্কুল বন্ধ হয়ে রয়েছে বলে জানি। সেগুলি কেন বন্ধ হয়ে রয়েছে, খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy