Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
লাগামছাড়া গতির জের

বাস দুর্ঘটনায় আহত ২১

বালির ঘাটের সেই ঘটনার একমাস পেরোনোর আগেই সোমবার দুপুরে ফের দুর্ঘটনার মুখে পড়ল আর এক সরকারি বাস। কান্দি-বহরমপুরে রাজ্য সড়কের উপর কান্দির গোকর্ণ পাওয়ার স্টেশন সংলগ্ন এলাকার ওই ঘটনায় জখম হয়েছেন ২১ জন যাত্রী।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কান্দি শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

বালির ঘাটে বাস দুর্ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা রাজ্যকে। চালকের একটি ‘ভুল’ কেড়ে নিয়েছিল ৪৪টি তরতাজা প্রাণ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে জেলায় প্রশাসনিক সভায় এসে তিনি চালকদের সাবধান করেছিলেন। প্রচণ্ড গতিতে বা মোবাইলে কথা বলতে বলতে গাড়ি না চালানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। নড়েচড়ে বসেছিলেন প্রশাসনের কর্তারাও।

তারপরেও চিত্রটা বদলায়নি। বালির ঘাটের সেই ঘটনার একমাস পেরোনোর আগেই সোমবার দুপুরে ফের দুর্ঘটনার মুখে পড়ল আর এক সরকারি বাস। কান্দি-বহরমপুরে রাজ্য সড়কের উপর কান্দির গোকর্ণ পাওয়ার স্টেশন সংলগ্ন এলাকার ওই ঘটনায় জখম হয়েছেন ২১ জন যাত্রী। দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের মধ্যে একজন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ও একজন কান্দি মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গোকর্ণ গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সাত জন। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

বাস যাত্রীরা জানিয়েছেন, এ দিন বহরমপুর থেকে বাসটি কান্দির দিকে আসছিল। খাগড়াঘাট রেল গেটে দীর্ঘক্ষণ আটকে পড়েছিল সেটি। গেট উঠতে প্রচণ্ড গতিতে গাড়ি ছুটিয়ে দেন চালক। বাস জোরে না চালানোর জন্য চালককে বেশ কয়েকবার অনুরোধও করা হয়। অভিযোগ, চালক সে সব কানে তোলেননি। গোকর্ণ পাওয়ার স্টেশনের কাছে রাস্তায় সামান্য বাঁক রয়েছে। প্রচণ্ড গতি থাকায় বাঁকের মুখে চালক বাসটিকে আর নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। সে সময় উল্টো দিক থেকে বালি ভর্তি একটি ট্রাক আসছিল। বাসটি সেই ট্রাকে গিয়ে ধাক্কা মারে।

কান্দি হাসপাতালের বেডে শুয়ে জখম ফরিজা বেগম বলেন, “বহরমপুর থেকে বাসটি ঠিকই আসছিল। কিন্তু রেলগেটে আটকে যাওয়ার পর থেকে খুব জোরে বাস চালাচ্ছিলেন চালক। কয়েকজন যাত্রী চালককে সাবধানও করেন। কিন্তু কথা কানে নিলে তো। গতি এত না থাকলে হয়তো দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যেত।”

অন্য আরও এক জখম যাত্রী জয়নাল আলিখান বলেন, “চালকের কানে মোবাইল ছিল না ঠিকই। কিন্তু চালক এত দ্রুত গতিতে বাসটি চালাচ্ছিলেন যে ভয় লাগছিল। বিপদ তো সেই হলই।”

বালিরঘাট থেকে শিক্ষা নিয়ে পুলিশ ও প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। পথ নিরাপত্তার উপরে বাড়তি জোর দেওয়া হয়। গাড়ি চালানোর সময় কোনও ভাবেই চালকের কাছে মোবাইল ফোন রাখা যাবে না, গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা যাবে না ইত্যাদি। পুলিশ রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়ি গতি মাপতেও শুরু করে। কিন্তু তাতেও যে লাগাম পরানো যাচ্ছে না তার প্রমাণ এ দিনের দুর্ঘটনা।

শুধু তাই নয়, দৌলতাবাদের ঘটনার পরেও জেলায় দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে একাধিক বাস। কান্দির জিবন্তিতে সরকারি বাসের সঙ্গে লছিমনের ধাক্কায় মারা গিয়েছিলেন এক জন। জখম হয়েছিলেন তিন জন। খড়গ্রামের শেরপুরে বেসরকারি বাস উল্টে গিয়ে ১৬ জন যাত্রী জখম হন।

পুলিশ দুর্ঘটনাগ্রস্থ বাসটিকে আটক করছে। পুলিশের অনুমান, দ্রুতগতির জন্য নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE