হনুমানের তাণ্ডবে দুয়ারে খিল এঁটেছে আহিরণ।
সুতির আহিরণ পঞ্চায়েতের বাঙাবাড়ি, আলমপুর, কানুপুর এবং জলঙ্গাপাড়া এই চারটি গ্রামে তাণ্ডব চালাচ্ছে একটি হনুমান। তার কামড়ে গত এক সপ্তাহে জখম হয়েছেন অন্তত ২৮জন গ্রামবাসী। তার মধ্যে গত ৪৮ ঘণ্টায় জখম হয়েছেন ছয় জন। অবস্থা এমনই যে, ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয়ে পাচ্ছেন বাবামায়েরা। দিনে দুপুরেও দরজা-জানলা বন্ধ করে বাড়িতে বসে থাকতে হচ্ছে। দোকানের ঝাঁপও নামিয়ে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
বাঙাবাড়ির তিনকড়িলাল ঘোষ জানান, রাত ন’টা নাগাদ বাড়ির উঠোনেই বসেছিলেন তিনি। আচমকা হনুমানটি নেমে আসে। কিছু বোঝার আগেই তাঁর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পিঠের মাংস খুবলে নেয়। তাঁর চিৎকারে বাড়ির লোকজন ছুটে এলে হনুমানটি পালিয়ে যায়।
হনুমানের কামড়ে জখম হয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী সঞ্জয় বারিক। তাঁর পিঠে তিনটি সেলাই পড়েছে। তাঁর ভাই চন্দন বারিকও সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার সময় হনুমানের আক্রমণের মুখে পড়েন। হনুমান তাঁর বাম হাতের মাংস খুবলে নেয়।
আহিরণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, হনুমানের কামড়ে জখম হয়েছেন এমন ২২ জন চিকিৎসার জন্য ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়েছেন। তাঁদের সকলকেই ইঞ্জেকশন
দেওয়া হয়েছে।
আহিরণ পঞ্চায়েত প্রধান কাজল রায় বলেন, “আতঙ্ক এতটাই ছড়িয়েছে যে, ওই সব পথে বেরোতে চাইছেন না কেউ। রাস্তায় লোকজন কমে গিয়েছে। বন দফতরকে খবর দেওয়া হলে তারা এসে হনুমান ধরার জন্য খাঁচা পাতে। কিন্তু হনুমানের নাগাল মেলেনি।”
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলছেন, ‘‘বাড়ির ছাদে জামাকাপড় মেলতে যেতে ভয় পাচ্ছি। ভয়ে ভয়ে দোকানে চালডাল কিনতে যেতে হয়। এমন অবস্থায় কোন ভরসায় ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাব?’’
বন দফতরের রঘুনাথগঞ্জের রেঞ্জার শিবপ্রসাদ সিংহ জানান, বনকর্মীরা ওই এলাকায় গিয়ে খাঁচা পেতেছেন। তবে হনুমানটিকে ধরা যায়নি। এলাকাটি জঙ্গলময়। তাই অতি সহজেই গা ঢাকা দিচ্ছে হনুমানটি। তিনি বলেন, ‘‘ঘনবসতি এলাকায় বিপদের আশঙ্কায় হনুমানটিকে গুলি করাও যাচ্ছে না। বনকর্মীরা এলাকায় রয়েছেন। চেষ্টা চলছে তাকে খাঁচায় আটকানোর।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy