কাঁচা হাতে লেখা পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছে—‘স্যর আপনি যাবেন না। ডোন্ট লিভ আস। প্লিজ ডোন্ট গো। তোরা যে যা বলিস ভাই আমরা বিশ্বজিৎ স্যরকে চাই!’ ছাত্রছাত্রীরা কাঁদছে, বিশ্বজিৎ স্যরেরও চোখ ভিজে যাচ্ছে। প্রিয় শিক্ষককে কিছুতেই যেতে দেবে না বেলডাঙা নওপুকুরিয়া নতুন পাড়া প্রাথমিক স্কুলের ৫১৬ জন ছাত্রছাত্রী। বৃহস্পতিবার বিশ্বজিৎ দত্তকে ঘিরে ধরে নিজেদের দাবি জানাতে গিয়ে গলা ভেঙে কান্নায় ভেসেছে তারা। মুস্তাকিম শেখ, সুরাইয়া পারভিন, নিলুফা খাতুন, রবিউল হাসানের মতো সব্বাই এক সঙ্গে বলেছে—‘‘ স্যর কী ভাবে আমাদের ছেড়ে যান আমরাও দেখবো।’’ ছাত্রদের সঙ্গে বিশ্বজিৎ স্যরকে স্কুল না-ছাড়ার অনুরোধ জানাতে থাকেন সহ-শিক্ষকেরাও।
স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৬ মার্চ বেলডাঙা-১ ব্লকে বয়স ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কিছু সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক পদে উন্নীত করা হয়। তাঁদের নামের তালিকাও টাঙানো হয়। ৩৪ জনের তালিকায় ২০ নম্বরে নাম রয়েছে নওপুকুরিয়া নতুন পাড়া প্রাথমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষক বিশ্বজিৎ দত্তের। আগামী ২ এপ্রিল প্যানেল চুড়ান্ত হবে। এই খবর নতুন পাড়া প্রাথমিক স্কুলে ছাত্রদের কানে পৌঁছায়। তার পরেই তারা পোস্টার নিয়ে স্কুলের টিচার রুমে পৌঁছে যায়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পানপিয়ারা খাতুন বলেন, ‘‘বিশ্বজিৎবাবু সকলের কাছের মানুষ, ছাত্রছাত্রীদের ভরসার জায়গা। ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত নির্মল বিদ্যালয়, শিশুমিত্র, স্বচ্ছ বিদ্যালয়-এর মতো অনেক সম্মান পেয়েছে স্কুল। পেয়েছে যামিনী রায় পুরস্কার। তাঁর হাত ধরেই এই স্কুল এখন জেলার অন্যতম স্কুল। ছাত্ররা তা জানে। আমরাও বিশ্বজিৎ দত্তকে ছাড়বো না।’’ যাঁকে নিয়ে এতকিছু সেই বিশ্বজিৎ বাবু এ দিন বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম প্রমোশন নিয়ে চলে যাব। কিন্তু ছাত্র ও সহ-শিক্ষকেরা যা করল তা দেখে আমি অভিভূত। এত ভালবাসা পেয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একশো বার ভাবতে হচ্ছে। দেখি কী করি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy