Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

মেডিক্যাল কলেজ থেকে একসঙ্গে উধাও ৬০ রোগী!

দুর্গাপুজো ইস্তক হাসপাতালের দুধ-বার্লি, ময়লা বিছানা, নার্সের ধমক— কিছুই নাকি পছন্দ হচ্ছিল না তাঁদের। তার উপর ছিল পুজোয় ঘরে ফেরার টান। তাই নিশ্চুপে শয্যা ছেড়ে গ্রামে ফিরে গিয়েছেন তাঁরা, হাসপাতালের এক কর্তা নির্বিকার গলায় এমন জানিয়েছেন।

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ।—ফাইল চিত্র।

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৪৮
Share: Save:

সংখ্যাটা সোমবার পর্যন্ত ৬০। বহরমপুর থানায় মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ যে অভিযোগ দায়ের করেছেন, তাতে কোথাও কারণ লেখা নেই। আছে শুধু ‘নিরুদ্দিষ্ট’ রোগীর সংখ্যাটা।

দুর্গাপুজো ইস্তক হাসপাতালের দুধ-বার্লি, ময়লা বিছানা, নার্সের ধমক— কিছুই নাকি পছন্দ হচ্ছিল না তাঁদের। তার উপর ছিল পুজোয় ঘরে ফেরার টান। তাই নিশ্চুপে শয্যা ছেড়ে গ্রামে ফিরে গিয়েছেন তাঁরা, হাসপাতালের এক কর্তা নির্বিকার গলায় এমন জানিয়েছেন।

নিখোঁজ রোগীর তাই সংখ্যা সোমবার পর্যন্ত ৬০।

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের সহ-অধ্যক্ষ দেবদাস সাহা বলছেন, ‘‘ছুটি দেওয়া না হলে, কিছু রোগী আমাদের না জানিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে চলে গিয়েছেন। বহরমপুর থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।’’ তিনি জানান, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।

আরও পড়ুন: ছুটি না নিলেই পুরস্কার মিলছে নবদ্বীপের স্কুলে

কিন্তু কেন গেলেন তাঁরা? হাসপাতালের কর্তাদের উত্তর খোঁজার তেমন দায় দেখা যায়নি। বরং নির্লিপ্ত গলায় তাঁদেরই এক জন বলছেন, ‘‘এ আর নতুন কী? গত বছরও তো পুজোর সময়ে শয্যা ছেড়েছিল।’’ নিয়মমাফিক অভিযোগও হয়েছিল থানায়। পুলিশও গা করেনি, রোগীরাও ফেরেনি।

এবারেও কী তাই হবে? মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ ডায়েরি পেলেই স্থানীয় থানায় পাঠিয়ে তদন্ত করা। ওই রোগী বাড়িতে পৌঁছেছেন, না কি নিখোঁজ রয়েছেন সেই রিপোর্টও হাসপাতালকে দেওয়া হয়।’’

আরও পড়ুন: আরব থেকে কবে ফিরবে ছেলের দেহ?

যদিও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টার নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে। তার পরেও একের পর এক রোগী উধা হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এক চিকিৎসক বলছেন, ‘‘রোগী ভর্তির চাপ রয়েছে। হাসপাতালের বারান্দায় রোগী রাখতে হচ্ছে। তাই রোগীর বাড়ির লোকজন ছুটি করিয়ে নিয়ে যেতে চান। কিন্তু সরকারি যে নিয়মে ফর্ম পূরণ করে রোগীর ছুটি দেওয়ার কথা, তা করার জন্য চিকিৎসকদের হাতে সময় থাকে না। ফলে তাঁরা এড়িয়ে যান।’’ রোগীর বাড়ির লোকজন তখন বাধ্য হন কাউকে কিছু না জানিয়ে হাসপাতাল থেকে রোগীকে নিয়ে গিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করাতে। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের প্রধান রঞ্জন ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘‘একটু সুস্থ হলেই রোগীর বাড়ির কথা মনে পড়ে। সময় তিনি বাড়ি যেতে চান। আবার উৎসবের সময়ও একটু সুস্থ হলে কিছু না জানিয়ে বাড়ি চলে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Patient Murshidabad Medical College
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE