Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শিক্ষকের বিরুদ্ধে নালিশ বাসিন্দাদের

পার্শ্বশিক্ষককে মদত দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মৃণালকান্তি মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভগবানগোলা শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৯ ০২:৩৫
Share: Save:

ক্লাসে ব্ল্যাকবোর্ডে এক শিক্ষক পড়াচ্ছেন, ‘‘সাত দিনে হয় এক সপ্তাহ।’’ অথচ সেই স্কুলের অন্য এক শিক্ষকের সাত দিনে নয়, ‘এক দিনে’ হয় তাঁর ‘সপ্তাহ’! ভগবানগোলার দলেলপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পার্শ্বশিক্ষক প্রভাসকুমার মণ্ডলের সপ্তাহ এক দিনে। অভিযোগ, সপ্তাহে এক দিন তিনি স্কুলে যান। রবিবার ছুটির দিন বাদ দিলে বাকি পাঁচ দিনই তিনি স্কুলে অনুপস্থিত থাকেন। গত ছ’মাস ধরে এমনটাই করে চলেছেন বলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ। পার্শ্বশিক্ষককে মদত দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মৃণালকান্তি মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও। গোটা বিষয়টি জানিয়ে এলাকার অভিভাবকেরা বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ভগবানগোলা ১ বিডিও পুলককান্তি মজুমদার বলছেন, ‘‘ওই পার্শ্ব শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিভাবকদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। গোটা বিষয়টি জানতে কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই পার্শ্ব শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষককে ডেকে পাঠাচ্ছি। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’

এ ব্যাপারে অবশ্য দায় এড়িয়েছেন প্রধান শিক্ষক মৃণালকান্তি মুখোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, ‘‘যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁর সঙ্গে কথা বলুন।’’ আর ভগবানগোলা ১ এর অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সাহেব কাজি আবার ফোনে কথা বলতে চান না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ সব কথা কি ফোনে বলা যায়? অফিসে আসুন না!’’

পার্শ্বশিক্ষক প্রভাসকুমার মণ্ডল ২০০৫ সালে ওই স্কুলে যোগ দিয়েছেন। দলেলপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৪০ জন খুদে পড়ুয়া রয়েছে। বর্তমানে ওই প্রাথমিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক-সহ দু’জন স্থায়ী শিক্ষক এবং এক জন পার্শ্বশিক্ষক মিলিয়ে তিন জন শিক্ষক। ফলে স্কুলে যেখানে শিক্ষকের সংখ্যা কম রয়েছে, সেখানে পার্শ্বশিক্ষক প্রভাসকুমার মণ্ডল দিনের পর দিন স্কুলে অনুপস্থিত থাকায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা।

স্থানীয় বাসিন্দা বাপি মণ্ডল বলছেন, ‘‘ওই পার্শ্বশিক্ষক গত ছ’মাস ধরে সপ্তাহে এক দিন স্কুলে এসে উপস্থিতির খাতায় বাকি পাঁচ দিনের সই করে চলে যান। এমনকি যে দিন তিনি স্কুলে আসেন, সে দিনও কোনও ক্লাস করেন না। এতে প্রধান শিক্ষকের সায় রয়েছে। নইলে তিনি এমন বেআইনি কাজ দিনের পর দিন চালিয়ে যেতে পারতেন না।’’

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এমনিতেই শিক্ষক কম থাকায় ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা লাটে উঠেছে। তার উপরে প্রভাসকুমার মণ্ডল নিয়মিত স্কুলে আসেন না। এতে ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ নিয়ে অভিভাবকেরা প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তিনি কোনও কথা শুনতে রাজি হননি। উল্টে অভিভাবকদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন বলেও অভিযোগ।

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রভাসকুমার মণ্ডল। তিনি বলছেন, ‘‘আমি প্রতি দিন স্কুলে যাই। গৃহপ্রবেশের জন্য ক’দিন ছুটি নিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education Bhagawangola
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE