মৃত অনিমা মণ্ডল।
মাঝে মাঝেই অম্বলের সমস্যায় ভুগতেন তিনি। বুক-জ্বালা, পেটে ব্যাথা লেগেই থাকত। দিন কয়েক ধরেই পুরনো রোগের সঙ্গে মাথা চাড়া দিয়েছিল কোমরে ব্যথা। ‘‘তা বলে বেঘোরে চলে যেতে হবে!’’ মেয়ে শেফালি ফুঁপিয়ে উঠছেন।
বুধবার সকালে বাড়ি থেকে মেয়ে আর নাতনিদের নিয়ে বেরিয়ে বেলডাঙা স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে এসে নেমেছিলেন বহরমপুরে। দু’টো রিকশা ডেকে সদলে অনিমা মণ্ডল পাড়ি দিয়েছিলেন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আর ফিরলেন না।
বুধবার মাড্ডা গ্রামে তাঁর বাড়ির দুয়ারে চটির স্তূপ। ভেতরে অবিরাম ফুঁপিয়ে চলেছে মেয়ে। বিছানা, রান্নাঘর অগোছাল অবস্থায় পড়ে। সাত সকালে যে ভাবে ছেড়ে গিয়েছিলেন ঠিক সে ভাবেই। বাড়ির সামনে গোবর নিকানো মাটির উনুন। বাড়ির বারান্দায় বাসন, কাপ ছড়িয়ে রয়েছে। দড়িতে কাপড়, জামা ঝুলছে।
অনিমার মেয়ে শেফালির বিয়ে হয়েছে হরিহরপাড়ার মিঞারবাগানে। দিন ১৫ আগে সেই বাড়িতে পড়ে গিয়েছিলেন শেফালি দেবী। কোমরের হাড়ে খুব লেগেছিল। তিনিও বেলডাঙা এসে মায়ের সঙ্গে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে গিয়েছিলেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
অনিমার ভাসুর নবকুমার বলেন, ‘‘দু’জন মিলে ট্রেন ধরে বহরমপুর যাবে। আবার বাড়ি ফিরে আসবে। এই তো কাজ। আর যে ফিরবে না বাবব কি করে! অবাক লাগছে বুঝলেন অবাক!’’ ছেলে বিশ্বরূপের আক্ষেপ যাচ্ছে না, ‘‘আমি মায়ের সঙ্গে ছিলাম না। গেলে হয়ত এমনটা হত না।’’
পাড়া পড়শিরাও অবাক। পড়শি জয়া বলছেন, ‘‘বড় মিশুকে ছিলেন। প্রতি দিন দুপুর হলেই গপ্প। কালওও রাস্তায় সব্জি কিনতে গিয়ে কত কথা হল অম্বল হয়, মাঝে মাঝে চরমে ওঠে। আচ্ছা, হাসপাতালে তো সবাই বাঁচতে যায়, অণিমা বৌদিকে হাসপাতাল আর ফেরাল না কেন?’’
প্রশ্নটা মাথা কুটছে গ্রামের দেওয়াল থেকে দেওয়ালে।একটা জলজ্যান্ত মানুষ হাসপাতালে গেল নিতান্তই কোমরে ব্যথা নিয়ে আর ফিরল তাঁর চাদর ঢাকা মৃতদেহ?
গ্রামের এক যুবকের প্রশ্ন, আতঙ্কে না হয় মানুষ ছুটল, কিন্তু আতঙ্কটা হচ্ছে কেন বার বার? আর নিজেদের আড়াল করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেই সহজ সত্যিটা বেমালুম অস্বীকার করছেন?
বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরীর দাবি, ‘‘আগের বার আগুন লাগার পরে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল নিতান্তই স্বেচ্ছাসেবী অমল গুপ্তকে। এ বার মুখ্যমন্ত্রী কাকে গ্রেফতার করবেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy