বই-দিবসে: লালবাগের একটি স্কুলে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
মাস্টারমশাই বলছেন। ওরাও সেই একই কথা ফিরিয়ে দিচ্ছে সমস্বরে। গমগম করছে গোটা স্কুল—‘আমি ভাল ভাবে বেঁচে থাকার অঙ্গীকার করছি। তাই আমি কোনও দিন তামাক স্পর্শ করব না। এবং অন্যদেরও তামাক থেকে দূরে থাকার কথা বলব।’
এ ভাবেই বুধবার শপথবাক্য পাঠ করল পড়ুয়ারা। রাজ্যকে তামাকমুক্ত করতে রাজ্যের সব স্কুলে বই দিবসের পাশাপাশি তামাকের বিরুদ্ধে পড়ুয়াদের সচেতন করতে তামাকের বিরুদ্ধে শপথবাক্য পাঠের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
কোথাও কোথাও স্কুলের গণ্ডী ছাড়িয়ে গ্রামে শোভাযাত্রা বের করে বাসিন্দাদের তামাকের বিরুদ্ধে সচেতন করেছেন বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে নবগ্রামের অনন্তপুর হাইস্কুলে বহু পড়ুয়া এ দিন বই পায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, ওই স্কুলে আটশোরও বেশি পড়ুয়ার বই পাওয়ার কথা। কিন্তু এ দিন মাত্রে ২৫-৩০ জনের হাতে বই তুলে দেওয়া হয়েছে। যদিও ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্নেহাশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘এ দিন যারা স্কুলে এসেছিল তাদের প্রত্যেককে বই দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বই দিবস পালনের পাশাপাশি পডুয়াদের নিয়ে তামাকের বিরুদ্ধেও সচেতন করা হয়েছে।’’
কিন্তু পড়ুয়ার সংখ্যা আটশোরও বেশি। অথচ মাত্র ৩০ জন পড়ুয়া এসেছিল কেন? বই দিবসের বিষয়ে কি পডুয়াদের সচেতন করা হয়নি? প্রধান শিক্ষকের দাবি, সবাইকে বই দিবসের কথা বলা হয়েছিল।
জেলার স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পূরবী বিশ্বাস দে বলেন, ‘‘যে সব স্কুল কর্তৃপক্ষ বই দিবস ও ধূমপান বিরোধী প্রচার করেনি, তাঁদের শো-কজ করা হবে।’’
নবাব বাহাদুর ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মাসুদ আলম বলেন, ‘‘এ দিন পড়ুয়া থেকে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী সকলে সমবেত হয়েছিল। সেখানেই আমরা তামাকমুক্ত রাজ্য গড়তে অঙ্গীকার করেছি। এ দিন স্কুলে বইদিবসও পালন করা হয়েছে।’’ লস্করপুর হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ বইদিবস ও তামাকের বিরুদ্ধে পড়ুয়াদের সচেতন করার পাশাপাশি শোভাযাত্রা বের করে বাসিন্দাদেরও তামাকের বিরুদ্ধে সচেতন করেছেন।
স্কুল চত্বরে তামাক সেবন করা যাবে না— এই নির্দেশ আগেই দিয়েছিল রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর। একই সঙ্গে বলা হয়েছিল স্কুলে লিখে রাখতে হবে— ‘ধূমপান বর্জিত এলাকা। এখানে ধূমপান নিষেধ।’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিতরে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ গজ ব্যাসার্ধের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করা যাবেনা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেউই তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করতে পারবে না। এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়ার পরেও এখনও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সে সব মানা হয় না বলে অভিযোগ। সেই কারণে পড়ুয়াদের তামাক সেবন না করার শপথ থেকে শুরু করে এ বিষয়ে সচেতন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy