ভোট নেই আড্ডাই চায়ের দোকানে জলঙ্গীতে। ছবি: সাফিউল্লা।
হানাহানির ভোটে রাজ্য জুড়ে তোলপাড়, খুন-জখম, রক্তপাত আর বারুদের গন্ধের মাঝে একেবারে অন্য ছবি দেখল নদিয়ার চরমেঘনা। ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতারের ১২০ নং গেট থেকে প্রায় দেড় কিমি পথ পেরিয়ে এই চরমেঘনা গ্রাম। সোমবার গ্রামে গিয়ে দেখা গেল যেন কোন উৎসবে মেতেছে গোটা গ্রামের মানুষ।
চর মেঘনার প্রায় ১৮০টি আদিবাসী পরিবারের মোট ভোটার সংখ্যা ৫৪৭ জন। সকলেই স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দেন। করিমপুর বিধানসভার ২০২ নম্বর বুথে এ বারের মোট তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চরমেঘনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথের সামনে এক জায়গায় বসে তৃণমূল প্রার্থী বুলুরানী মণ্ডল, সিপিএমের অর্চনা মণ্ডল ও বিজেপির সুমিত্রা মণ্ডলকে এক সঙ্গে বসে চা খেতে দেখে বোঝার উপায় নেই বাইরে বোমা বারুদের পাহাড় জমেছে। ভোটের সকালে ছবিটা একইরকম নিরুত্তাপ জলঙ্গিতে। ডোমকল মহকুমা জুড়ে ভোট নেই। গোটা মহকুমা এলাকায় কোথাও বিরোধীদের কোনও প্রার্থীও নেই। নিজেদের মধ্যে কোন্দলের ফলে কেবল জলঙ্গির ২৩ টি আসনে নিয়ম রক্ষার ভোট হয়েছে এ দিন। সেখানেও কোথাও কোনও বিরোধীদের চিহ্ন ছিল না। কাজ নেই বলে, বিরোধী দলের কর্মীদের সঙ্গে হইহই করতে দেখা গেল শাসক দলের মাতব্বরদেরও।
চরমেঘনায় স্কুলের মধ্যে ভোটের লাইন, চলছে ভোট গ্রহণ আর বাইরে বিভিন্ন দলের কর্মীরা গল্পে মশগুল। জানতে চাইলে গ্রামের হরেরাম মণ্ডল, সহদেব বিশ্বাসরা বলছেন, “আজ ভোটের দিন টিভির খবরে সব জায়গায় অশান্তি আর মারামারির খবর দেখছি। কিন্তু আমাদের গ্রামের ভোট চিরকাল আলাদা। এখানে বহু সমস্যা নিয়ে আমাদের খুব কষ্ট করে বসবাস করতে হয়। আর নতুন করে হানাহানি করে কাজ নেই!’’
গ্রামে বিনোদন বলতে কিছুই নেই। বছর ছয়েক আগে বিদ্যুৎ সংযোগ হওয়ায় অনেকের বাড়িতে টিভি এসেছে। আর রয়েছে টুসু পুজো, কর্মা পুজো আর গোয়াল পুজো।
সেখানে ভোটও যেন তাঁদের কাছে একটা বাড়তি উৎসব। প্রার্তীরা বলছেন, ‘‘সেই উৎসবের সকালে কেউ হানাহানি করে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy