Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সাংবাদিক পিটিয়েও অধরা

প্রকাশ্যে সাংবাদিক ও আলোকচিত্রীদের, মাথা ফাটিয়ে, হুমকি দিয়ে, জিনিস ছিনিয়ে নিয়েও এখনও পর্যন্ত এক জন হামলাকারীও পুলিশের ধরাছোঁয়ায় এল না। ২৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে, তার পরেও পুলিশ কেন এমন ‘সূত্রহারা’ —সে ব্যাপারে পুলিশের যুক্তি,  যেহেতু আক্রান্তেরা এফআইআরে আক্রমণকারীদের নাম লেখেননি তাই খুঁজতে দেরি হচ্ছে!

হামলাকারীরা ধরা না পড়ার প্রতিবাদে শামিল সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকেরা। মঙ্গলবার বহরমপুরে মৌনী মিছিলের পরে প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান। নিজস্ব চিত্র

হামলাকারীরা ধরা না পড়ার প্রতিবাদে শামিল সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকেরা। মঙ্গলবার বহরমপুরে মৌনী মিছিলের পরে প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৮ ০৮:৪৪
Share: Save:

প্রকাশ্যে সাংবাদিক ও আলোকচিত্রীদের, মাথা ফাটিয়ে, হুমকি দিয়ে, জিনিস ছিনিয়ে নিয়েও এখনও পর্যন্ত এক জন হামলাকারীও পুলিশের ধরাছোঁয়ায় এল না। ২৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে, তার পরেও পুলিশ কেন এমন ‘সূত্রহারা’ —সে ব্যাপারে পুলিশের যুক্তি, যেহেতু আক্রান্তেরা এফআইআরে আক্রমণকারীদের নাম লেখেননি তাই খুঁজতে দেরি হচ্ছে!

প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশ কি তবে হামলাকারীদের নাম জানার জন্য আক্রান্তদের উপর নির্ভর করে? তাদের নিজস্ব ‘নেটওয়ার্ক’ নেই? গোয়েন্দা সূত্র পুরোপুরি ব্যর্থ? হামলাকারীরা সকলের সামনে আক্রমণ চালিয়েছে, ঘটনাস্থলের আশপাশে পুলিশও ছিল। তার পরেও কেন এক জনও ধরা পড়ল না? এর কোনও উত্তর দিতে চাননি তাঁরা, শুধু একটাই কথা বলে গিয়েছেন, চেষ্টা চলছে।

মনোনয়নপত্র পেশ ও সে সংক্রান্ত গোলমালের খবর করতে গিয়ে সোমবার মুর্শিদাবাদে আনন্দবাজার পত্রিকার দু’জন সাংবাদিক এবং দু’ জন চিত্রগ্রাহক আহত হন। এর মধ্যে আঘাত গুরুতর বেলডাঙার সাংবাদিক সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়ের। তাঁকে মাটিতে ফেলে বাঁশ, লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। তাঁর মাথা ফেটে গিয়েছে। হাত ও ঘাড়ে চোট খুব বেশি। চিকিৎসকেরা জানান, ঘাড়ের একটি হাড়ে চিড় ধরেছে। আপাতত চার সপ্তাহ তাঁকে বিশ্রামে থাকতে হবে। ডোমকলে চিত্র সাংবাদিক সাফিউল্লা, বড়ঞায় সাংবাদিক কৌশিক সাহা ও বহরমপুরে চিত্র সাংবাদিক গৌতম প্রামাণিকও সোমবার আক্রান্ত হন। প্রত্যেকেই এফআইআর করেন।

বেলডাঙার ওসি সমিত তালুকদার বলেছেন, ‘‘অনেককে চিহ্নিত করা গিয়েছে। বুধবারের মধ্যে কয়েক জন গ্রেফতার হবে। অভিযোগে কারও নাম না থাকায় একটু সময় লেগেছে।’’ একই ভাবে ডোমকলের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক মাকসুদ হাসানের মন্তব্য, ‘‘সুনির্দিষ্ট ভাবে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে আমাদের সুবিধা হত। তবে তদন্তে কোনও ত্রুটি রাখা হচ্ছে না।’’ বড়ঞার ওসি অরিন্দম দাসের কথায়, ‘‘যেহেতু হামলাকারীরা অজ্ঞাতপরিচয় এবং মূলত বহিরাগত তাই দ্রুত গ্রেফতারে অসুবিধা হচ্ছে।’’

সাংবাদিকদের উপর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বহরমপুরে বুকে কালো ব্যাজ লাগিয়ে মিছিল করেন সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা। ওই একই কারণে বেলডাঙায় সাধারণ মানুষও পথে নামেন। বহরমপুরে ‘মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন’ ওই মিছিলের ডাক দেয়। বহরমপুরের টেক্সটাইল কলেজ মোড়ে জড়ো হয়ে মৌনী মিছিল করে জেলা তথ্য দফতর হয়ে প্রশাসনিক ভবনে এসে তাঁরা অবস্থানে বসেন। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। জেলা সাংবাদিক সংগঠনের পক্ষে বিপ্লব বিশ্বাস বলেন, ‘‘এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE