Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

বিজেপির পাল্টা, মারামারি চলছেই 

কংগ্রেস বিধায়কের বন্দুক থেকে যে গুলি ছুটতে পারে, এতটা বোধহয় ভাবতে পারেনি তৃণমূলের লোকজন। কিন্তু পরিস্থিতি যে ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে, পুলিশ-প্রশাসন ভালই বুঝছে। মনোনয়ন পর্ব মিটে গিয়েছে। যদিও নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ভোট হবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। মারপি

বোমা ফেটে এমন অবস্থা। রেজিনগরে। নিজস্ব চিত্র

বোমা ফেটে এমন অবস্থা। রেজিনগরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

কংগ্রেস বিধায়কের বন্দুক থেকে যে গুলি ছুটতে পারে, এতটা বোধহয় ভাবতে পারেনি তৃণমূলের লোকজন। কিন্তু পরিস্থিতি যে ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে, পুলিশ-প্রশাসন ভালই বুঝছে। মনোনয়ন পর্ব মিটে গিয়েছে। যদিও নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ভোট হবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। মারপিট, ক্ষয়ক্ষতি কিন্তু চলছেই।

বেলডাঙা ও রানিনগরের পরে এ বার তৃণমূল কর্মীদের হাতে আক্রান্ত নওদার কংগ্রেস বিধায়ক মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবু তাহের খান। তাঁর দেহরক্ষীর বন্দুকের গুলিতে জখম এক জন। ভীমপুরে তৃণমূলের তিন জনকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। রেজিনগরে বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় এক জনের। তৃণমূলের এক প্রার্থী জখমও হয়েছেন।

ভীমপুরে এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ঘটনার সূত্রপাত। পোড়াগাছা পঞ্চায়েতের বিদায়ী তৃণমূল প্রধান উত্তম রায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন বিজেপির রামকৃষ্ণ মণ্ডল। সদলবলে তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে মারধরের অভিযোগ ওঠে উত্তমের বিরুদ্ধে। এর পর সন্ধ্যামাঠপাড়া মোড়ে কৃষ্ণনগর-মাজদিয়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিজেপি। পুলিশ তা তুলতে পারেনি। তৃণমূলের বাহিনী এসে চড়াও হলে লাঠি-রড নিয়ে পাল্টা মার দেয় বিজেপির লোকজন। তৃণমূলের তিন জনকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এক জনের মাথার চোট গুরুতর। বিকেলে আবার কৃষ্ণনগর থেকে তৃণমূলের মোটর বাইক-বাহিনী এসে বিজেপি প্রার্থীর বাড়িতে মার-ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। দুই পক্ষই ভীমপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।

রামকৃষ্ণের দাবি, “উত্তম আগে টাকা নিয়ে মনোনয়ন তোলার প্রস্তাব দিয়েছিল। রাজি না হওয়ায় গুন্ডা নিয়ে এসে মারধর করে।” উত্তম পাল্টা বলেন, “বাজে কথা। ওরা আমাদের পতাকা আর ফেস্টুন ছিঁড়ে দিয়েছে। তা দেখতে গেলে মারধর করেছে।” বিজেপির কৃষ্ণনগর শহর সভাপতি শম্ভুনাথ দের বাড়িতে ভাঙচুর হয়। দুই ক্ষেত্রেই তৃণমূলের বাবন সিংহরায়ের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে বলে বিজেপির অভিযোগ। যদিও তৃণমূল উড়িয়ে দিয়েছে। বিকেলে কৃষ্ণনগরে পুরসভা মোড়ের কাছে দীর্ঘক্ষণ পথ অবরোধ করেছে বিজেপি।

বৃহস্পতিবার সকালে তৃণমূলের লোকজনের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন আবু তাহেরের ভাগ্নে সফিউজ্জামান ওরফে হাবিব শেখ। নওদা পঞ্চায়েত সমিতির কংগ্রেস প্রার্থী তিনি। দুপুরে আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে তাঁকে দেখতে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন বিধায়ক। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় তাঁকে। ইটে ভাঙে গাড়ির কাচ। তৃণমূলের নওদা ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মোসারফ হোসেন মধু দাবি করেন, ‘‘বিধায়ককে কেউ মারেনি। তাঁর নিরাপত্তাকর্মীর গুলিতে আমাদের কর্মী জখম হন।’’

রেজিনগরের তেঘরিতে একতলা বাড়িতে সকেট বোমা বাঁধা হচ্ছিল বুধবার রাতে। বেলডাঙা ২ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল প্রার্থী ও প্রাক্তন সেনাকর্মী জহিরুদ্দিন শেখের বাবা থাকেন ওই বাড়িতে। হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দে চিলেকোঠা উ‌ড়ে যায়। চারদিকে ছিটকে পড়ে আসবাব। ঘটনাস্থলেই মারা যান ইয়ার আলি শেখ (৫০) নামে এক জন। জহিরুদ্দিনের দু’হাত গুরুতর জখম। সঙ্গী ইকবাল শেখ অন্ধ হয়ে গিয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। পরে জহিরুদ্দিনকে এনআরএসে পাঠানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE