Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
Tapas Paul

সংলাপ যেন ঠোঁটে লেগে থাকে, বলতেন তাপস

তাপস পালের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে যত বিতর্কই থাক, তাঁর অভিনয় অনেকেরই মন ভরিয়ে রেখেছিল।

সাজঘরের-স্মৃতি: ১৯৮৭ সালে কালনায় একটি নাটকের সময় তাপস পালের সঙ্গে সাজঘরে তোলা ছবি। (ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে)

সাজঘরের-স্মৃতি: ১৯৮৭ সালে কালনায় একটি নাটকের সময় তাপস পালের সঙ্গে সাজঘরে তোলা ছবি। (ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে)

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়
বেলডাঙা শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:০৩
Share: Save:

রাতের পর রাত জেগে তিন দিক খোলা মঞ্চে পাশাপাশি অভিনয়। কখনও মেদিনীপুর, ঘাটাল, পাঁশকুড়া, অম্বিকা কালনা, কিংবা বর্ধমান, সাঁইথিয়া, কান্দির মোহনবাগান মাঠে। ভিড়ে ঠাসা দর্শক দেখতে চাইত, শুনতে চাইত তাপস পালকে। তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে তা দেখেছেন বেলডাঙার চ্যাটার্ডি পাড়ার বাসিন্দা প্রদ্যোৎ মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সেই প্রিয় অভিনেতার মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রদ্যোৎবাবু বারবার সেই দিনের কথাই স্মৃতিচারণা করছিলেন।

তাপস পালের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে যত বিতর্কই থাক, তাঁর অভিনয় অনেকেরই মন ভরিয়ে রেখেছিল। প্রদ্যোৎবাবু ফিরে যাচ্ছিলেন ১৯৮২ সালে। সেই সময় তিনি কলকাতার চিৎপুরে নাটক ও থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত হন। তাঁর জামাইবাবু ছিলেন নট শেখর গঙ্গোপাধ্যায়। তিনিই প্রদ্যোৎবাবুর সঙ্গে তাপস পালের পরিচয় করিয়ে দেন। তারপর কলকাতার মঞ্চে এক সঙ্গে অভিনয় শুরু। টানা প্রায় চার বছর ধরে চলা নাটক ঊর্বশী নাট্য সংস্থার ‘রূপসী’তে তাঁরা এক সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন। বরুণ দাশগুপ্তের নির্দেশনায় সেই নাটকে তাপস ছিলেন নায়ক। নায়িকা রাজেশ্বরী রায়চৌধুরী। প্রদ্যোৎ ছিলেন নায়কের বন্ধু। গ্রামের পথে নায়ক গান করে যায়। তাকে নানা ভাবে সাহায্য করে তার বন্ধু।

তাপসের সঙ্গে বহু বার এক গাড়িতে যাতায়াতের অভিজ্ঞতাও রয়েছে প্রদ্যোতের। তিনি বলেন, “আমার থেকে দু’বছরের বড়। আমাকে আমার ডাক নাম বিলে বলে ডাকতো। কখনও শালাবাবুও বলতো। খুব ভাল মানুষ ছিলেন। যে কোনও বিষয়ে সাহায্য করতেন।”

প্রদ্যোৎবাবু জানান, শান্তিনিকেতন থেকে তাপসকে আনতে গিয়েছেন। যাবেন সাঁইথিয়া। প্রদ্যোৎ বলেন, ‘‘রাস্তার চা খেয়ে আমাকে টাকা দিতে বললেন। আমি তাঁর নির্দেশে টাকা দিয়ে দিলাম। কিন্তু সাঁইথিয়ায় নেমে নাটকের ম্যানেজারকে তাপসবাবু বললেন, গাড়ি খারাপ হয়ে গিয়েছিল রাস্তায়। ৫০ টাকা যেন আমার হাতে দিয়ে দেন তাঁর প্রতি আমার শ্রদ্ধা বেড়ে গিয়েছিল।’’ সেই সময় বাংলা সিনেমার ব্যস্ত হিরো তাপস।

প্রদ্যোতের কথায়, ‘‘মঞ্চে চার দিক ঘুরে কেমন করে অভিনয় করতে হয়, তা তাপসদা হাতে করে শিখিয়েছেন। ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত সেই স্মৃতি ভুলব না। তাপসদা বলতেন সংলাপ ঠোঁটে লেগে না থাকলে অভিনয় করা যায় না। তাতে মঞ্চে লাইভ দর্শকদের আনন্দ দেওয়া যায় না। সঙ্গে সংলাপ ভুল হলে সহ অভিনেতাদেরও হোঁচট খেতে হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE