Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

১৮ বছরের আগে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলবে না, ছাত্রীদের বললেন ওসি

নাসরিনা খাতুন নামে ছাত্রীটি বলে, ফেসবুকে সুন্দর ছবি দেওয়া এক জনকে বিয়ে করবে বলে পালিয়ে গিয়েছিল পাড়ার এক দিদি। কিন্তু গিয়ে দেখে ছবির লোক আর আসল লোক এক নয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলডাঙা শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৭ ০৭:১০
Share: Save:

মাদ্রাসায় এসে পুলিশের ওসি জানতে চেয়েছিলেন, ১৮ বছরের আগে তোমাদের এলাকায় এত বিয়ে হচ্ছে কেন?

একে-একে দাঁড়িয়ে উঠে মেয়েরা বলতে থাকে, ‘‘ওরা আইন জানে না, তাই।’’ পিছন থেকে এক ছাত্রী বলে, ‘‘স্যার, আমার পরিচিত এক দিদির বিয়ে হয়েছে ফেসবুক থেকে।’’

ওসি অবাক— ‘‘তার মানে?’’

নাসরিনা খাতুন নামে ছাত্রীটি বলে, ফেসবুকে সুন্দর ছবি দেওয়া এক জনকে বিয়ে করবে বলে পালিয়ে গিয়েছিল পাড়ার এক দিদি। কিন্তু গিয়ে দেখে ছবির লোক আর আসল লোক এক নয়। বিয়ে হয়েছে ঠিকই। কিন্তু বড় অশান্তিও হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলডাঙার দেবকুন্ডু শেখ এ আর এম গার্লস হাই মাদ্রাসায় হাজির হন বেলডাঙা থানার ওসি সমিত তালুকদার। জানতে চান, ‘‘এখানে কে কে ফেসবুক আর হোয়াটসঅ্যাপের নাম শুনেছ?’’ এইট থেকে নাইনের ছাত্রীরা সকলেই হাত তোলে। পরের প্রশ্ন— ‘‘কার কার ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট আছে?’’ কেউ হাত তোলেনি। ওসি বলেন, ‘‘কেউ নেই? খুব ভাল। ১৮ বছরের আগে অ্যাকাউন্ট খুলবে না।’’

কেন স্যার?

ওসি বলেন, ‘‘ফেসবুকে মিথ্যে অনেক অ্যাকাউন্ট থাকে। তারা বন্ধু পাতিয়ে কমবয়সী মেয়েদের নিয়ে গিয়ে বাইরের রাজ্যে বিক্রি করে দেয়। তাই সাবধান।’’ তিনি জানান, আগে ভগবানগোলা থানায় থাকার সময়ে তাঁরা জানতে পারেন, একটি মেয়েকে ফেসবুকে ‘ফ্রেন্ড’ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এক অপরিচিত। একটি ফোন নম্বরের সূত্র ধরে উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটি থেকে এক যুবককে ধরা হয়। সে ফেসবুকে বলত, মুম্বইয়ে চাকরি করে, আসলে নৈহাটিতেই মোষের খাটালে কাজ করে। আর মেয়েদের জালে ফাঁসিয়ে নারী পাচার করে।

মাদ্রাসার কাছেই ঝুনকা গ্রামের একটি পরিবারের অভিজ্ঞতাও জানান ওসি। তারা ফেসবুকে ঘোষণা করে বিয়েবাড়ি গিয়েছিল। পরের দিন ফিরে দেখে জানলার গ্রিল কাটা। দুষ্কৃতীরা ফেসবুকে বাড়ি ফাঁকা থাকার কথা জেনে হানা দিয়েছিল। ফ্রিজে রান্না করা কষা মাংস ও ঠান্ডা পানীয় ছিল। সেসব খেয়ে বেশ কিছু জিনিসপত্র নিয়ে পালায়। ছাত্রীদের পাশাপাশি শিক্ষিকাদের উদ্দেশেও ওসি বলেন, ‘‘বাড়ির সকলে মিলে বেড়াতে গেলে ফেরার আগে ছবি ফেসবুকে দেবেন না। কেউ এমন ছবি দেবেন না যা বিক্রিত করে ব্ল্যাকমেল করা যায়।’’

ওসি আরও বলেন, ‘‘কেউ ব্যাঙ্ক ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে ফোন করে এটিএম কার্ডের নম্বর জানতে চাইলে বলবেন না। যদি বলেও ফেলেন, ১২ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশকে জানান। পুলিশ টাকা উদ্ধার করার চেষ্টা করবে।’’

মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষিকা মুর্শিদা খাতুন বলেন, ‘‘এই এলাকায় প্রচুর নাবালিকা বিয়ে হয়। তাই ওসি-কে কথা বলতে ডেকেছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Facebook Social Media OC ফেসবুক
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE