অবসর-শূন্য পুলিশ কর্মীদের ফোঁটা।
সরকারি বিজ্ঞাপনটা প্রায়ই চোখে পড়ে— ‘অন্যদের ছুটি আমাদের নয়’। সেই অবসর-শূন্য পুলিশ কর্মীদের যে দিনটায় অন্তত পরিজনের একটু কাছাকাছি থাকার ইচ্ছে জাগে, সেই ভাই ফোঁটার দিন বহত্তর এক পারিবারিক উষ্ণতা ছুঁয়ে গেল। শুক্রবার সকাল দশটা নাগাদ আচমকাই ইসলামপুর থানা চত্বর গমগম করে উঠতে একটু সচকিত হয়ে উঠেছিলেন উর্দিধারীরা। মুখ বাড়িয়ে দেখলেন, এক ঝাঁক স্বনির্ভর গোষ্ঠির মহিলা ভিড় করেছেন থানায়। ভেবেছিলেন, বড় কোনও ঝামেলা বয়ে আনলেন তাঁরা! আদতে তাঁরা এসেছিলেন, পুলিশ কর্মী ভাই-দাদাদের কপালে ফোঁটা কেটে দিতে।
ওসি অঞ্জন বর্মন একা নন, থানার সব পুলিশ কর্মীদের ফোঁঁটা দিয়ে তাঁদের হাতে বোনা চটের সামগ্রী তুলে দেন তাঁরা। ছবিটা প্রায় একইরকম ছিল রানিনগর থানায়। সেখানে ভিড় করেছিল একটি হোমের ছোট্ট বোনেরা। পুলিশ-দাদারা অবশ্য তাদের খালি হাতে ফিরতে দেননি। তড়িঘড়ি আয়োজন করে পাত পেড়ে খাওয়া দাওয়ারও ব্যবস্থা করেন রানিনগরের ওসি অরুপ রায়। অরূপ বলছেন, ‘‘ভাইফোঁটার দিন সত্যিই মনটা একটু খারাপ থাকে। এ দিনও বাড়ির কথা মনে পড়ছিল। সব মেঘ কেটে গেল, ছোট্টবোনগুলিকে দেখে।’’
ইসলামপুর থানায়, এ দিন সকালে ফুলকলি, যুথিকা, বেবি হাজরা’রা শুধু চন্দনের থানা নয়, নিয়ে এসেছিলেন শাঁখ, দুব্বো, ধানের ছড়াও। শাঁখ-উলুর পাশাপাশি পুলিশ-দাদাদের রপায়ে ধান-দুব্বো ছড়িয়ে প্রণামও করে গিয়েছেন তাঁরা। ওসি অঞ্জন বর্মন বলছেন, ‘‘হঠাৎ করে একদল বোন ফোঁটা দিতে এসেছেন শুনে আরও চমকে গিয়েছিলাম। খুব আনন্দ হয়েছে জানেন।’’ ফুলকলি বলছেন, ‘‘আমরা প্রতি বছর নিজের ভাইদের ফোঁটা দিই। যাঁরা পুজো থেকে ভাইফোঁটা নির্বিঘ্নে সামাল দেন, তাঁদের কপালে ফোঁটা দিলে কেমন হয়! তাই সবাই মিলে ঠিক করি। থানায় সবাইকে চমকে দিয়ে ফোঁটা দিয়ে এসেছি।’’ তবে ডোমকলের একটি হোমের মেয়েদের ফোঁটা ছিল পরিকল্পিত। তারা ফোঁটা দিয়ে নাচ গানও করে থানা চত্বরে। ডোমকলের এসডিপিও মাকসুদ হাসান বলেন, ‘‘কাজের চাপে সামাজিক অনুষ্ঠান থেকে বঞ্চিত হয়। এখন মনে হচ্ছে কোনও বঞ্চনা নয়, অনেক বোনের ভাই হতে পারলাম পুলিশের চাকরি করে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy