Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
জমি ছাড়ছে না তৃণমূল

হামলা হতেই পথে বিজেপি

করিমপুর যাওয়ার পথে বিজেপির নদিয়া (উত্তর) সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকারকে  পুলিশ আটকে দেয় বলে অভিযোগ। তার জেরে সেখানেই রাস্তা অবরোধ করে বিজেপি। মহাদেব বলেন, “আমাদের কর্মীদের উপরে হামলাই বলে দিচ্ছে তৃণমূল মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।” তৃণমূলও ধুবুলিয়া স্টেশনে পাল্টা অবরোধ করে। মহিষবাথান ও করিমপুরে পথ অবরোধও করা হয়। বিজেপি নেতা-কর্মীদের মারধরও করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

নিজস্ব  প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৮ ০১:৩১
Share: Save:

তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশে করিমপুরের বিধায়ক যখন অসমের জমিতে পা রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁর এলাকার গন্ডগোলেই পায়ে বল পেয়ে গেল বিজেপি।

বৃহস্পতিবার রাতে করিমপুরে দুই বিজেপি নেতার বাড়ি ও দোকানে হামলা হয়েছিল। প্রতিবাদে শুক্রবার তেহট্টের বেতাই বাজার, হাউলিয়া পার্ক মোড় এবং পলাশিপাড়ায় পথ অবরোধ করে বিজেপি। অবরোধ করা হয় ধুবুলিয়ায় রেল অবরোধ করে তৃণমূল। অবরোধ করা হয় কৃষ্ণনগর, বেথুয়াডহরি, দৈয়েরবাজারেও। রেল অবরোধ হয় নবদ্বীপে।

করিমপুর যাওয়ার পথে বিজেপির নদিয়া (উত্তর) সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকারকে পুলিশ আটকে দেয় বলে অভিযোগ। তার জেরে সেখানেই রাস্তা অবরোধ করে বিজেপি। মহাদেব বলেন, “আমাদের কর্মীদের উপরে হামলাই বলে দিচ্ছে তৃণমূল মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।” তৃণমূলও ধুবুলিয়া স্টেশনে পাল্টা অবরোধ করে। মহিষবাথান ও করিমপুরে পথ অবরোধও করা হয়। বিজেপি নেতা-কর্মীদের মারধরও করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

অসমে নাগরিকপঞ্জি প্রকাশ করে ৪০ লাখ বাঙালিকে দেশছাড়া করার প্রক্রিয়া শুরু হওয়া ইস্তক অস্থির হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা নদিয়া। দেশভাগের পরে দলে-দলে আসা উদ্বাস্তুদের একটা বিরাট অংশ নদিয়াতেই নতুন করে ঘর বেঁধেছেন। অসমের ঘটনায় তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। আর তার জেরে পঞ্চায়েত ভোটে অনেকটা জমি পেয়ে যাওয়া বিজেপিকে কোণঠাসা করতে মাঠে নেমেছে তৃণমূল।

বৃহস্পতিবার শিলচর বিমানবন্দরে তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্য তথা বিধায়ক মহুয়া মৈত্রের হাত ধরে পুলিশের টানাটানির ছবি টিভির পর্দায় আসতেই উত্তেজনা ছড়ায় করিমপুরে। বিজেপির অভিযোগ, রাতে তৃণমূলের কিছু লোকজন স্থানীয় বিজেপি নেতা মৃগেন বিশ্বাসের বন্ধ দোকানের শাটার ভাঙার চেষ্টা করে। ভেঙে দেওয়া হয় সামনের আলো। বিজেপির করিমপুর ব্লক সভাপতি বুদ্ধদেব শীলের বাড়িতেও হামলা হয়। প্রতিবাদে বিজেপি কর্মীরা শুক্রবার করিমপুর বাসস্ট্যান্ডে পথসভা করতে গেলে তৃণমূলের লোকজন তাদের মেরে-ধরে তাড়িয়ে পথ অবরোধ করে। তৃণমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এ দিন ফের বুদ্ধদেবের বাড়িতে হামলা করে কাঠের দরজা ভেঙে দেয় বলেও অভিযোগ। তিনি বাড়িতে ছিলেন না।

যদিও করিমপুর ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তরুণ সাহা দাবি করেন, “অসমে আমাদের বিধায়ককে হেনস্থা করার কারণে এলাকায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। কিন্তু বিজেপির কাউকে বা কোনও নেতার বাড়িতে আক্রমণ করা হয়নি। যদি সত্যি কেউ করে থাকে, দল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।”

অসমে পঞ্জি প্রকাশ হতেই পরপর দু’দিন রেল অবরোধ করে তাঁদের ক্ষোভ জানিয়েছেন মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষজন। তার নেপথ্যে ছিল তৃণমূল। দু’দিন হল তারা সরাসরি রাস্তায় নেমেছে। আচমকা এই বাঁকবদলে শুরুতে খানিক ভ্যাবাচ্যাকাই খেয়ে গিয়েছিল বিজেপি। বরং রাজ্য থেকে কী নির্দেশ আসে, সেই অপেক্ষাতেই বসে ছিলেন জেলার নেতারা। হঠাৎ করিমপুরের ঘটনাটা ঘটে যাওয়ায় তাঁরা কার্যত ধড়ে প্রাণ পেয়েছেন। দলের এক জেলা নেতা বলেই ফেলেন, ‘‘করিমপুরে মেরে তৃণমূল আমাদেরই সুবিধা করে দিয়েছে।’’

নদিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত অবশ্য বলেন, ‘‘মানুষ বিজেপির স্বরূপ চিনে গিয়েছে। ওদের বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে পথে নামছে। আমরা মানুষের সঙ্গে আছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Protest BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE