Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পদ্মের প্রার্থী, সঙ্ঘের সাধ আর জুলুবাবু

আজ, মঙ্গলবার দুপুরেই নিজেদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দেবে তৃণমূল। নদিয়ার দু’টি কেন্দ্রে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে উঠে আসা বিজেপির অন্দরেও চলছে নাম বাছাই করার চূড়ান্ত পর্ব। পিছনে কলকাঠি নাড়ছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ।

সুস্মিত হালদার
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৯ ০০:২৩
Share: Save:

ভোটের ঘণ্টা বেজে গিয়েছে।

আজ, মঙ্গলবার দুপুরেই নিজেদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দেবে তৃণমূল। নদিয়ার দু’টি কেন্দ্রে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে উঠে আসা বিজেপির অন্দরেও চলছে নাম বাছাই করার চূড়ান্ত পর্ব। পিছনে কলকাঠি নাড়ছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ।

দু’টি আসনকেই সম্ভাবনাময় বলে মনে করছে বিজেপি। আগে থেকেই তাদের পাশাপাশি সঙ্ঘ পরিবারের অন্য সংগঠনগুলি নিজেদের মতো করে ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে। সঙ্ঘ পরিবারের তরফে ইতিমধ্যেই পছন্দের নাম সুপারিশ করা হয়েছে। তবে তার পরেও অনেকে রাজ্য নেতাদের ধরে প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, আরএসএস কৃষ্ণনগর কেন্দ্রটিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছে। তারা দু’টি নাম প্রস্তাব করেছে। তাদের পছন্দের তালিকায় প্রথমেই আছেন জেলার ভূমিপুত্র, দক্ষিণ কোরিয়ার সিওল বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাসন বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক অভিজিৎ ঘোষ। এখন তিনি সল্টলেকে যোগ কেন্দ্র চালান।

কালীগঞ্জের বড় চাঁদঘরের সন্তান অভিজিৎ সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ। কিন্তু স্থানীয় বিজেপি নেতা-কর্মীরা তাঁকে সে ভাবে চাইছেন না বলে জেলা নেতাদের একাংশের দাবি। কারণ, নদিয়ায় জন্ম হলেও জেলায় তিনি কোনও দিনই সে ভাবে থাকেননি। জেলার রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন না কোনও দিন। সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, বিজেপি নেতাকর্মীদের সঙ্গেও তাঁর বিশেষ যোগাযোগ নেই।

সঙ্ঘ সূত্রের খবর, কৃষ্ণনগরের ভূমিপুত্র বিজন ঘোষের নামও প্রস্তাব করেছে তারা। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হওয়ায় বর্তমানে তিনি দিল্লির বাসিন্দা। কোনও দিন সে ভাবে জেলার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হননি। জেলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাঁরও তেমন যোগাযোগ নেই। ফলে তাঁকেও যে জেলার নেতাকর্মীরা চাইছেন, এমনটা বলা যায় না।

সঙ্ঘ চায়, এই দু’জন কল্কে না পেলে বাইরের কোনও ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী দাঁড় করানো হোক। যিনি নিজের ‘ক্যারিশমায়’ ভোট টানতে পারবেন। যাঁকে আলাদা করে পরিচয় করাতে হবে না। সঙ্ঘের এক নেতার কথায়, “আমরা চাইছি এমন এক জনকে, যিনি উচ্চশিক্ষিত। কারণ আমরা বারবার দেখেছি এই ধরনের প্রার্থীর প্রতি কৃষ্ণনগরের মানুষের দুর্বলতা আছে।” কোনও-কোনও সূত্রে আবার কৃষ্ণনগরের ভূমিপুত্র জয়প্রকাশ মজুমদারের নামও শোনা যাচ্ছে।

সঙ্ঘ না চাইলেও কৃষ্ণনগরের বিজেপি কর্মীদের একটা বড় অংশ কিন্তু প্রার্থী হিসেবে আবার চাইছেন সাতাশি বছরের সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় ওরফে জুলুবাবুকেই। কৃষ্ণনগর উত্তর সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বের একটা বড় অংশ দলের কাছে সেই মর্মে আবেদন করেছেন অনেক আগেই। ১৯৯৯ সালে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে এই কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন জুলুবাবু। মন্ত্রীও হয়েছিলেন। কর্মীদের মধ্যেও তার গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নাতীত। কিন্তু সে বারের পরে আর এক বারও তিনি জিততে পারেননি। এত বয়স্ক কাউকে প্রার্থী করতেও চাইছে না সঙ্ঘ। তবে এই মূহূর্তে শুধু বিজেপি কর্মীরা নন, কৃষ্ণনগরের ভোটাদেরও অনেকের কৌতুহলের কেন্দ্র জুলুবাবু। অন্য দলের কর্মীরাও জানতে চাইছেন, শেষ পর্যন্ত তাঁকেই প্রার্থী করা হচ্ছে কি না।

এখানে তবু একটা জুলুবাবু আছেন। রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের পরিস্থিতি আরও জটিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Nadia Constituency Lok Sabha Election 2019
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE