Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

হামলা-মার, বিজেপির দ্বন্দ্ব প্রকট

সম্প্রতি কৃষ্ণ দেবনাথ নামে এক যুবক এলাকায় খুন হওয়ার পরেও বিজেপির নেতৃত্বে নবদ্বীপ-স্বরূপগঞ্জজুড়ে তুমুল আন্দোলন চলেছে।

তখনও কাটেনি জট। সোমবার সকালে নৃসিংহপুর ঘাটে। নিজস্ব চিত্র

তখনও কাটেনি জট। সোমবার সকালে নৃসিংহপুর ঘাটে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৯ ০২:০৬
Share: Save:

লোকসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই নবদ্বীপ এলাকায় বিজেপির প্রভাব ও শক্তি ক্রমশ বাড়ছিল। কিন্তু সেখানেই এ বার বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্ধ সামনে এল।

সম্প্রতি কৃষ্ণ দেবনাথ নামে এক যুবক এলাকায় খুন হওয়ার পরেও বিজেপির নেতৃত্বে নবদ্বীপ-স্বরূপগঞ্জজুড়ে তুমুল আন্দোলন চলেছে। বিজেপির দাবি, ‘জয় শ্রীরাম’ বলাতেই গত শুক্রবার খুন করা হয়েছেন কৃষ্ণ। মৃতদেহ নিয়ে তারা নবদ্বীপ শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে প্রতিবাদ জানিয়েছে। থানার সামনে মৃতদেহ নিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। রবিবার এলাকায় বনধ পালিত হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, রাজনৈতিক শক্তিবৃদ্ধি ছাড়া এমন মৃতদেহের রাজনীতি চালানো সম্ভব নয়। কিন্তু এরই মধ্যে প্রকট হয়েছে বিজেপির অন্দরের চিড়।

গত রবিবার রাতে বিজেপির যুবমোর্চার দুই নেতার উপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে দলের নবদ্বীপ শহর দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি শশধর নন্দী এবং তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। হামলায় জখম হয়ে জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যুবমোর্চার এক নেতা।

নবদ্বীপ তেঘড়িপাড়া অঞ্চলের বাসিন্দা এবং বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা যুবমোর্চার সাধারণ সম্পাদক শিবশংকর মণ্ডলের মা জ্যোৎস্না মণ্ডল পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, রবিবার রাত ন’টা নাগাদ বিজেপির নবদ্বীপ দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি শশধর নন্দীর নেতৃত্বে তাঁর অনুগামী কিছু বিজেপি কর্মী তাঁদের বাড়ি-লাগোয়া মুদিখানার দোকানে হামলা চালায় ও ভাঙচুর করে। মোট এগারো জনের একটি দল দা, লাঠি, লোহার রড এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দোকানের ক্যাশবাক্স থেকে প্রায় কুড়ি হাজার টাকা লুঠ করে নিয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

আবার মনিপুর ঘাট রোডের বাসিন্দা বিজেপি কর্মী রাজু কর্মকার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, ওই দলটি ওই রাতেই বিজেপির নবদ্বীপ শহর দক্ষিণ মণ্ডলের যুবমোর্চার সভাপতি সুমিত দের উপরেও হামলা চালায় এবং মারধর করে। সুমিতের চিৎকারে তিনি এবং তাঁর দুই বন্ধু ছুটে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন। রবিবারই সুমিতবাবুকে প্রথমে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পড়ে তাঁকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়।

শিবশংকর মণ্ডলের কথায়, “বিজেপি-র রাজ্য সভাপতির নির্দেশে যুবমোর্চার একটি ঘোষিত কর্মসূচী হল, কাটমানির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। মঙ্গলবার নবদ্বীপ সেই কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে শশধরবাবুর প্রবল আপত্তি। যেহেতু আমি জেলার তরফে এবং সুমিত নবদ্বীপ দক্ষিণ মণ্ডলের যুব মোর্চার সভাপতি হিসাবে ওই কর্মসূচীর দায়িত্বে রয়েছি তাই ওঁর অনুগামীরা আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে করেছে। আমি সেই সময় ঘটনাস্থলে ছিলাম না বলে রক্ষা পেয়েছি।”

অভিযুক্ত শশধর নন্দী সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করে বলেন, ‘‘ শাসক দল বিজেপির শক্তিবৃদ্ধিতে ভীত হয়ে আমাদের কিছু কর্মীকে ভুল বুঝিয়ে এই অভিযোগ দায়ের করিয়েছে। এর সঙ্গে আমাদের বা রাজনীতির কোনও যোগ নেই।’’ আর নদিয়া জেলা বিজেপি (উত্তর) সভাপতি মহাদেব সরকার বলেন, “আমি বাইরে আছি। কি হয়েছে জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Conflict BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE