Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
ভীমপুরে অভিযুক্ত বিএসএফ
BSF

ঘাস কেটেও জুটেছে মার

হাসপাতালে জখম যুবক। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালে জখম যুবক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৮ ০৮:৪০
Share: Save:

স্কুল-ফেরত দুই ছাত্রকে দিয়ে কিছু বিএসএফ জওয়ান রাস্তার পাশে ঘাস কাটাচ্ছে শুনে গিয়েছিলেন তাদের বাড়ির লোকজন। তাঁদের এক জনকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠল বিএসএফ জওয়ানদের বিরুদ্ধে। যদিও বিএসএফের দাবি, তাদের এক জওয়ানকে পিটিয়েছে গ্রামবাসীরা।

ঘটনাটি সোমবার বিকেলের। প্রায় সাত কিলোমিটার দূরের শিমুলিয়া হাইস্কুল থেকে সাইকেলে ফিরছিল একাদশ শ্রেণির ছাত্র শান্তনু ঢালি। সঙ্গে ছিল কয়েক জন বন্ধুও। তাদের অভিযোগ, বর্ডার রোড ধরে ফেরার সময়ে হুদোপাড়া ও রাঙ্গিয়ারপোতার মাঝখানে বিএসএফের কেয়ক জন জওয়ান তাদের পাকড়াও করে। তার পরেই বাধে গণ্ডগোল।

মাথায় গুরুতর চোট পেয়ে মঙ্গলবার সকালে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শান্তনুর কাকা, ভীমপুরের রাঙ্গিয়ারপোতার বাসিন্দা নীতীশ ঢালি। উভয় পক্ষই ভীমপুর থানায় পরস্পরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। জেলার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, “ঘটনার তদন্ত হচ্ছে।”

স্থানীয় সূত্রের খবর, স্কুল শেষে বর্ডার রোড ধরে বাড়ি ফিরছিল জনা কয়েক ছাত্র। তাদের বাড়ির লোকের অভিযোগ, তাদের ধরে রাস্তার পাশে ঘাস কাটতে বলে কর্তব্যরত কিছু বিএসএফ জওয়ান। তারা রাজি না হলে চড়-থাপ্পড় মারা হয়। দুই ছাত্র পালালেও বাকি দু’জনকে দিয়ে জোর করে ঘাস কাটাতে থাকে জওয়ানেরা।

যারা পালাতে পেরেছিল, তাদের থেকে খবর পেয়ে বাড়ির লোকজন ঘটনাস্থলে চলে আসেন। তর্কাতর্কি শুরু হয়ে যায়। নীতীশ ওই দুই ছাত্রের এক জনের কাকা। তাঁর অভিযোগ, জওয়ানেরা তাঁর বৌদিকে মারধর করতে গেলে তিনি বাধা দেন। তাঁকে বুটের লাথিতে মাটিতে পেড়ে ফেলে লাঠিপেটা করে জওয়ানেরা। অন্যেরা ছাড়াতে গেলে ধস্তাধস্তি হয়।

নীতীশের কথায়, “আমি আর বৌদি গিয়ে দেখি, ভাইপোদের দিয়ে রাস্তার পাশে ঘাস কাটাচ্ছে বিএসএফ জওয়ানেরা। আমরা বলি, ‘ঘাস যদি কাটতেই হয়, ওরাই না হয় পরে কেটে দেবে। এখন স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছে। পেটে খিদে। কেন এখন ওদের এ ভাবে খাটাচ্ছ?” এটুকু বলতেই ওরা বৌদির উপরে চড়াও হয়। আমি ঠেকাতে গেলেই শুরু হয় মার।” তাঁর দাদা কুঞ্জ ঢালি বলেন, “খবর পেয়ে আমরা গিয়ে দেখি, ভাইকে প্রচণ্ড মারছে বিএসএফ। কোনও মতে ওকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি।”

নীতীশকে প্রথমে চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তারা প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দিলেও রাতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা হতে থাকে। মঙ্গলবার সকালেই তাঁকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। যদিও বিএসএফের কৃষ্ণনগর সেক্টরের ডিআইজি বি এল মিনা দাবি করেন, “অভিযোগ ঠিক না। গ্রামবাসীরাই বরং আমাদের জওয়ানকে মেরেছে। পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Krishna Nagar BSF Village
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE