Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Veterinary Doctor

গরু অসুস্থ, প্রাণিচিকিৎসক নিয়ে হাজির বিএসএফ

গ্রামবাসীরা বলছেন, ‘‘গরুর রোগ ধরলে তার চিকিৎসা করাব কি করে, বিএসএফ তো শহরে নিয়েই যেতে দেয় না গরু।’’

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বিমান হাজরা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২০ ০১:১৯
Share: Save:

‌গরু এবং দুধ— সীমান্তের গ্রামে তাঁদের দিনযাপনের ওঠাপড়া জড়িয়ে আছে গরুর অনুষঙ্গে। পাঁচ গাঁয়ের গরু-মোষের দুধ ভোরের সাইকেলে চাপিয়ে পাঁচ-সাত কিলোমিটার দূরের শহরে বিক্রি করেই দিন গুজরান চর পিরোজপুরের। আর সেই গরু রুগ্ন হয়ে পড়লে নিতান্তই স্বল্প দামে পাচারকারীদের হাতে তুলে দেওয়া। রাতের আঁধারে সীমান্ত পার করে যাদের নিশ্চিৎ গন্তব্য বাংলাদেশে।

গ্রামবাসীরা বলছেন, ‘‘গরুর রোগ ধরলে তার চিকিৎসা করাব কি করে, বিএসএফ তো শহরে নিয়েই যেতে দেয় না গরু।’’ এ বার সেই ক্ষোভেই মলম দিতে পিরোজপুরের হাজার কয়েক গরুর জন্য প্রাণিচিকিৎসক নিয়ে এল খোদ বিএসএফ।

বাংলাদেশ সীমান্তে জঙ্গিপুরের পাঁচটি গ্রামে আয়ের প্রধান উৎস দুধ। ঘরে ঘরে গাই গরু আর মোষের ছড়াছড়ি। পাছে পাচারকারীরা জোর করে ঘরের গোয়াল থেকে গরু খুলে নিয়ে যায়, রাতে তাই গরু-মোযের ঠিকানা বদলে যায় গ্রাম-গোয়ালে। পাঁচ গ্রামের গরু বিএসএফের প্রহরায় রাত কাটায়। কিন্তু শীত পড়তেই গরুর নানান রোগ। এক জায়গায় তাদের ঠাঁই। তাই রোগ ছড়াতে সময় লাগে না। টান পড়ে দুধেও। ফলে শীতের ক’মাস এক ধাক্কায় গ্রামবাসীদের আয় কমে যায়। চর পিরোজপুর সীমান্তের গ্রামবাসীদের রোজগারে টান পড়ায় তাই উদ্বেগ বেড়েছে বিএসএফের। জঙ্গিপুরের সীমান্ত পথ এক সময় ছিল গরু পাচারের প্রধান করিডোর। কিন্তু এখন তাতে ভাঁটা পড়ায় গ্রামের রুগ্ন গরুর দিকেই হাত বাড়িয়েছে পাচারকারীরা। সীমান্তের চরে হয়ত আবার পাচার প্রশ্রয় পাবে, এই দুশ্চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়েছে বিএসএফের। গরুর রোগ সারাতে তাই সোমবার সকালে চরের রোগাক্রান্ত গরু, মোষের চিকিৎসা শুরু করল বিএসএফ। জোগান দিল বিনি পয়সার ওষুধও। রাজ্য প্রাণিসম্পদ দফতরের সাহায্যে ১১ জন চিকিৎসক ও কর্মীকে কাজে লাগিয়ে প্রায় সাড়ে পাঁচশো গরুর চিকিৎসা করানো হল।

বিএসএফ সূত্রে জানানো হয়েছে, সীমান্ত এলাকায় চাষের গরু পোষা বন্ধ। তবে ১৫ হাজার গরু-মোষের প্রায় ৪০ হাজার লিটার দুধের জোগান দেওয়া হয় জঙ্গিপুর পুকর এলাকায়। এই আয়েই সংসার চলে চর পিরোজপুর এলাকার কয়েক হাজার মানুষের। এই ৫ গ্রাম থেকে দুধ নিতে প্রতি দিন চরে আসে জনা ৩০ দুগ্ধ ব্যবসায়ী।

জঙ্গিপুরের দুধের কারবারি ধনপতি ঘোষ বলছেন, “শীতকালে দুধ কম হয় হয়। ৪০ হাজার লিটারের জায়গায় ২০ হাজার। এই দুধের উপর আস্ত জঙ্গিপুর নির্ভর করে। কিন্তু গরুর রোগের প্রকোপে এ বার দুধের বড় আকাল। অথচ চরের মানুষ শহরে চিকিৎসা করাতেও পারে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE