Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

‘নিধিরাম সর্দার’ বিএসএফ, গুলি চালানোর হুকুমও নেই!

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডোমকল শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৬:১১
Share: Save:

পরনে জংলা পোশাক। কাঁধে ঝুলছে ইনসাস কিংবা এসএলআর। বর্ডার রোডের উপর দিয়ে হেঁটে গেলে কালো বুট থেকে ভারি আওয়াজ শোনা যায়। বছর কয়েক আগেও এই বিএসএফকে নিয়ে একটা কথা চালু ছিল সীমান্তে— বিএসএফ মনে করলে কাঁটাতারের উপর দিয়ে পাখিকেও উড়ে যেতে দেবে না। অথচ সেই বিএসএফকে পিছনে এখন অনেকে বলেন ‘নিধিরাম সর্দার’। মুর্শিদাবাদ সীমান্তের এক বিএসএফ কর্তার কথায়, “কী বলব বলুন? আমাদের গুলি চালানোর হুকুম নেই। পিএজি বলে আমাদের এক রকম আগ্নেয়াস্ত্র দেওয়া হয়েছিল যা থেকে ছররা গুলি বেরোবে, কিন্তু তা গায়ে লেগে মারা যাওয়ার আশঙ্কা খুবই কম। পরে দেখা গেল কম দূরত্ব থেকে সেই গুলি লাগলে মারাও যেতে পারে। ফলে সেটাও কাজে দিল না। এখন ইনসাস, এসএলআর, এলএমজি, সদ্য ইতালি থেকে নতুন ধরনের কারবাইন এলেও আমাদের গুলি চালানোর নির্দেশ নেই। এটা যেদিন থেকে পাচারকারীরা জেনে গিয়েছে, সেদিন থেকে ওরাও বুঝে গিয়েছে যে আর যাই হোক মৃত্যুভয় নেই।”

ওই কর্তা বলেন, ‘‘তা ছাড়া বিএসএফকে এখন সীমান্ত পাহারার পাশাপাশি নির্বাচনের মতো বেশ কিছু বাড়তি দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে। এবার সেই কাজের জন্য সীমান্ত থেকেই তুলে নেওয়া হচ্ছে বিএসএফকে। ফলে প্রয়োজনের তুলনায় বিএসএফের ঘাটতি থাকছে। এমন অনেক ক্যাম্প রয়েছে যেখানে জওয়ান দরকার ৩৫ জন। অথচ রয়েছেন মাত্র ১৫ জন। এই অল্প সংখ্যক জওয়ানকে দিয়েই সব রকম কাজ করাতে হচ্ছে।”

বিএসএফের পাশাপাশি সতর্ক থাকে পুলিশ প্রশাসনও। তা ছাড়া সীমান্ত এলাকার থানাগুলোকে স্বাভাবিক কারণেই নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হয় বিএসএফের সঙ্গেও। মুর্শিদাবাদের এক পুলিশ কর্তা বলছেন, ‘‘শীত পড়তেই নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিশও। জাতীয় ও রাজ্য সড়কের পাশাপাশি যে সব রাস্তা সীমান্তের দিকে চলে গিয়েছে, সে দিকেও রাতে চলছে নিয়মিত পুলিশি টহলদারি। শেষ বাসেও পুলিশ থাকছে।” মুর্শিদাবাদের সাংসদ বদরুদ্দোজা খান বলছেন, ‘‘গতকাল সীমান্ত এলাকা ঘুরেছি। পাচার যেমন এলাকার সমস্যা, তেমনি পাচারের নামে চাষিরা হয়রান হচ্ছেন। বিএসএফের আচরণ নিয়েও সংসদে প্রশ্ন তুলেছি। তাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের বক্তব্য, এভাবে বিএসএফকে নিয়ে প্রশ্ন করলে তাঁদের মনোবল ভেঙে পড়তে পারে। তাতে সীমান্ত সুরক্ষায় প্রভাব পড়তে পারে।’’ তাঁর দাবি, এ সবের পরেও সিদ্ধান্ত নিয়েছি গোটা বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে লিখিতভাবে জানাব।

মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলাগানাথন বলছেন, ‘‘সীমান্তের মানুষের সাথে বিএসএফের যাতে কোনও রকম সমস্যা না হয়, সেই বিষয়টি আমরা দেখি। ব্লক স্তরে বিএসএফের সাথে নিয়মিত সমন্বয় বৈঠক করি।’’ সীমান্তে পাচার বন্ধের বিষয়ে বিএসএফের সাথে পুলিশ নিয়মিত সমন্বয় রাখে বলেও জেলাশাসক জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BSF India Bangladesh Border Problem
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE