অসমে গলার নলি কেটে খুন করা হল রঘুনাথগঞ্জের এক ব্যবসায়ীকে। নাম রাজারাম দাস (৩৯)। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে অসমের জোড়হাটের কৃষ্ণনগরে প্লাস্টিকের ব্যবসা চালাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ইদানিং চাঁদার নামে মোটা অঙ্কের তোলাবাজির টাকা দাবি করছিল স্থানীয় কিছু লোক। ক্রমাগত আসছিল শাসানিও। সন্দেহ, সেই তোলাবাজিরই শিকার হয়েছেন তিনি।
রঘুনাথগঞ্জের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া ঘোড়শালাতেও বড় প্লাস্টিক সামগ্রীর ব্যবসা রয়েছে তাদের। রয়েছে পরিবহণের ব্যবসাও। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ জোড়হাটের এক পরিচিত লরি চালক ঘোড়শালার বাড়িতে ফোন করে জানান রাজারামবাবুর খোঁজ মিলছে না। কিছুক্ষণ পরেই বাড়ির মালিক প্রদীপ দত্ত নিজেই ফোন করে জানান, বাড়ির পাশেই গুদামের পিছনে বস্তা বাঁধা অবস্থায় গলার নলি কাটা মৃতদেহ মিলেছে। তারপরেই তাঁর দাদা মহারাজ দাস রওনা দেন যোরহাটের উদ্দেশ্যে।
তিনি জানান, এখনও পরিস্কার নয় এই খুনের ঘটনায় কারা জড়িত। তবে পরিচিত কেউ জড়িত সে সম্পর্কে নিশ্চিত পুলিশ। ঘোড়শালা গ্রামে ব্যবসায়ী পরিবার বাবা অজিত দাসের। রঘুনাথগঞ্জে মূল প্লাস্টিকের ব্যবসা তাঁরই। অসমের যোড়হাটের কৃষ্ণনগরে তিনিই প্লাস্টিকের ব্যবসা শুরু করেন। তার বয়স হওয়ায় এখন তা দেখাশুনো করতেন তাঁর ৪ ছেলে।
ছোট ভাই রামপ্রসাদ জানান, ২০ বছর ধরে ব্যবসা চলছে তাঁদের। যোড়হাট শহর থেকে মাইল চারেক দূরে তাদের দোকান। সন্ধ্যেতেই বন্ধ হয়ে যায়। দু’দুটো বড় গুদাম রয়েছে এলাকায়। সেখানেই গুদামের একটি ঘরে থাকতেন তাঁরা। পাশেই গা লাগোয়া বাড়ির মালিক প্রদীপ দত্তের বাড়ি। তাঁর ভাই বলেন, ‘‘অসমে কখনও দাদা , কখনও আমি থাকতাম। চাঁদার নামে তোলাবাজির হ্যাপা সামলে ব্যবসাটা চললেও ইদানিং তোলাবাজির দাপটটা খুব বেড়ে গেছিল। শাসানিও দেওয়া হচ্ছিল। তাই রাত সাড়ে ৯টার পর আর ঘর থেকে বড় একটা বের হতাম না। বৃহস্পতিবারও রাত সাড়ে ৯টার সময় ফোনে কথা হয়েছে বাড়িতে। শুক্রবার সকাল ৯টা নাগাদ বাড়িতে খবর আসে দাদা খুন হয়েছে।’’
তিনি বলেন, “ঠিক করেছিলাম আর অসমে থাকব না। ব্যবসা গুটিয়ে ফেলব। সেইমত উমরপুরের তালাইয়ের কাছে জমি কিনে একটি কারখানা তৈরির কাজও শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।’’
পরিকল্পিত ভাবেই পরিচিত কেউ এই খুনের ঘটনায় জড়িত। পরিচিত কাউকে দেখেই রাতে দরজা খুলে বেরিয়ে এসেছিলেন রাজারাম। ভায়ের যা স্বাস্থ্য তাতে একা তাকে কাবু করা মুশকিল। তাই খুনীরা সংখ্যায় অনেকেই ছিল বলে সন্দেহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy