জমজমাট: রবিবার কান্দিতে। ছবি: কৌশিক সাহা
দিনকয়েক আগে টেলিভিশনে খবরটা শুনেই মুখটা তেঁতো হয়ে গিয়েছিল বড়ঞার বস্ত্র ব্যবসায়ী উজ্জ্বল মালের। টিভিতে সঞ্চালক তখন ঘূর্ণিঝড় তিতলি এবং তার ফলে সম্ভাব্য ঝড় ও বৃষ্টির খবর শোনাচ্ছেন। মহালয়ার পর বাজার চাঙ্গা হওয়ার আশায় ছিলেন উজ্জ্বল। কিন্তু তিতলির বৃষ্টি তাতে জল ঢেলে দিতে চলেছে ভেবেই মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল তাঁর।
পুজোর আগে শেষ রবিবারই সেই উজ্জ্বলের মুখেই চওড়া হাসি। স্লগ ওভারে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের মতোই এদিন দিনভর পোশাক বিক্রি করেছেন তিনি। বললেন, “বৃষ্টির জন্য গত চারদিন ক্রেতার দেখা মেলেনি। কাল থেকে রোদ উঠছে। পুজোর আগে শেষ রবিবার যেমন বিক্রিবাটা হওয়ার কথা, আজ তার চেয়েও বেশি বিক্রি হয়েছে।’’ সালার থেকে শেরপুর, বড়ঞা থেকে ভরতপুর সর্বত্রই শেষ লগ্নের পুজোর কেনাকাটায় ক্রেতাদের ঢল নেমেছিল এদিন। আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় খুশি ক্রেতা-বিক্রেতা সকলেই। শুধু বাজারের ব্যবসায়ীরাই নয়, সাপ্তাহিক হাটের ব্যবসায়ীরাও এ দিন সকাল থেকে চুটিয়ে ব্যবসা করেছেন। বড়ঞা ব্লকের ডাকবাংলোয় সপ্তাহিক হাট ছিল এদিন। সেখানে সকাল থেকেই ক্রেতাদের ভিড় ছিল। বেলা যত বেড়েছে, ক্রেতাদের ঢল তত বেড়েছে হাটে। কান্দি মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক তারকেশ্বর প্রামাণিক বলেন, “রবিবার এমনিতেই বাজারে ক্রেতার সংখ্যা বেশি হয়। তার ওপর আজ ছিল পুজোর আগে শেষ রবিবার। ক্রেতাও অনেক বেশি ছিল।’’
তবে শুধু বড়ঞাতেই নয় এদিন জেলার প্রায় সমস্ত বাজারেই ক্রেতাদের ভিড় উপচে পড়ে। বহরমপুরের খাগড়া, গোরাবাজার, কাদাইয়ের দোকানগুলিতে ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের। প্রায় সারাদিন ধরেই ওই দোকানগুলিতে বিক্রিবাটার ব্যস্ততা তুঙ্গে ছিল। ইসলামপুর ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি শঙ্কর মণ্ডল বলেন, ‘‘গত তিনদিন ধরে বাজারে ক্রেতাই ছইল না। তবে এদিন সকাল থেকে দোকানগুলিতে কেনাকাটা করতে তাঁরা হাজির হয়েছিলেন। ডোমকলে এবার পুজোর বাজার সেভাবে জমেনি। হয় তো ক্রেতারা বহরমপুরে গিয়ে কেনা করেছেন।’’ জেলা চেম্বার অব কমার্সের যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ বৃষ্টি এবার পুজোর বাজার কিছুটা হলেও মাটি করে দিয়েছে। তবে চতুর্থী থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ার পর ব্যবসাপত্র সামগ্রিক ভাবে বেড়েছে। আমাদের কাছে খবর, জেলার প্রায় প্রতিটি বাজারেই এদিন মাত্রাছাড়া ভিড় হয়েছে। গত ক’দিন লোকসান এক রবিবারেই পুষিয়ে গিয়েছে।
খাগড়া বাজারে জুতো কিনতে এসে সন্দীপ দাস, কবিতা মণ্ডলরা বললেন, “বাড়ির ছোটদের কেনাকাটা করা যায়নি বৃষ্টির কারণে। পুজোর সময় সকলেরই নতুন জামাকাপড় না হলে মন খারাপ হয়ে যায়। আজ কেনাকাটা করলাম। এবার নিশ্চিন্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy