Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Businessmen

লক্ষ্মীর কৃপা থেকে বঞ্চিত দোকানিরাও

মনখারাপের সুরে পড়ুয়া কারিগর বলে, “বিশ্বকর্মা পুজোতেও তবু কিছু বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু লক্ষ্মীপুজোয় এমন কেন হল বুঝতে পারছি না।” 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২০ ০৫:৫৭
Share: Save:

শুকনো মুখে বসেছিল অসীম। শুক্রবার বিকেলে।

নবদ্বীপ বড়বাজারের ফালি রাস্তার ধারের থরে থরে সাজানো নানা আকারের বিক্রি না হওয়া লক্ষ্মীমূর্তি। সে সবই ক্লাস নাইনে পড়া অসীম হালদারের নিজের হাতে তৈরি। তিন প্রজন্মের ছোটমূর্তি গড়ার কারিগর অসীম কিংবা তার বাবা গোপাল হালদার অনেক আশা করেছিলেন, গত আট মাসের খরা অনেকটাই কাটবে লক্ষ্মীর কৃপায়। কিন্তু করোনা আবহে প্রতিমা গড়ে লক্ষ্মীলাভ হল না অসীমদের। বৃহস্পতি এবং শুক্রবার নবদ্বীপ বাজারে লক্ষ্মী প্রতিমা নিয়ে বসলেও তেমন বিক্রি হয়নি। এ বার অধিকাংশ প্রতিমাই পড়ে আছে। মনখারাপের সুরে পড়ুয়া কারিগর বলে, “বিশ্বকর্মা পুজোতেও তবু কিছু বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু লক্ষ্মীপুজোয় এমন কেন হল বুঝতে পারছি না।”

শুধু অসীম একা নয়। বড়বাজারের আর এক বিক্রেতা উত্তম সূত্রধর বলেন, “এ বার বেশির ভাগ মানুষের হাতে টাকাপয়সা নেই। সেই লকডাউন থেকে কাজ নেই বিরাট অংশের লোকের। এই পুজো বহু নিম্নবিত্ত মানুষও করেন। তাঁদের অবস্থা খুব খারাপ। তাই পুজো করছে না অনেক পরিবার। সে কারণে এ বার অর্ধেক প্রতিমাও বিক্রি হয়নি।” অনেকে আবার প্রতিমা আনতে না পেরে ঘটেই পুজো সারছেন।

কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর অনুষঙ্গ হিসাবে যে সব জিনিসের চাহিদা থাকে বাজারে যেমন সরা, ধানের ছড়া, কদম ফুল, লাল চেলি— সে সবের জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি রাখেন দশকর্মা বিক্রেতারা। তাঁদের এক জন নৃপেন সাহা বলেন, “এমন বাজারের চেহারা জীবনে দেখিনি। এর আগেও বহু বার বন্যার পর পুজো হয়েছে। বাজার খারাপ ছিল। কিন্তু এ বারের সঙ্গে যেন কোনও তুলনা নেই। মানুষ দোকানে আসছেনই না। ভেবেছিলাম কম বিক্রি হবে। জিনিস অল্প তুলেছিলাম। কিন্তু এ ভাবে বসে থাকতে হবে ভাবিনি।” তাঁদের ব্যাখ্যা, একটা পুজো করতে যত কমই হোক পাঁচশ টাকা খরচ আছে। অনেকেরই সাধ্য নেই এ বার পুজোর জন্য ওই টাকা খরচ করার। ফলে দোকানিদের লোকসান হচ্ছএ। অনেক টাকা আটকে গিয়েছে।

নবদ্বীপ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নিরঞ্জন দাস বলেন, “এই করোনা আবহে কোজাগরীর বাজারে পঞ্চাশ শতাংশও হয়নি। বৃহস্পতিবার বাজারে লোক ছিল না। শুক্রবার মানুষ বাজারে গিয়েছেন, যেটুকু না কিনলে নয় সেইটুকু দিয়ে সেরেছেন। প্রায় সব বাড়িতে ভোগ বা অন্য অনুষঙ্গ ছেঁটে ফেলা হয়েছে। আমি নিজেই তো বাড়ির পুজোর আয়োজন সংক্ষিপ্ত করে ফেলেছি। কিছু করার নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Laxmi Puja Businessmen
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE