রঘুনাথগঞ্জে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটি। নিজস্ব চিত্র
জাতীয় সড়কের উপরে লেন ভেঙে বাস-ট্যাঙ্কারের সংঘর্ষের ক্ষত শুকিয়ে যাওয়ার আগেই রবিবার সকালে ওই জাতীয় সড়কেই যাত্রী বোঝাই বাস উল্টে মৃত্যু হল দুই যাত্রীর। আহত হয়েছেন অন্তত ১৬ জন। আহতদের মধ্যে ১৪ জনকে ভর্তি করানো হয়েছে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে। পরে আশঙ্কাজনক ৩ যাত্রীকে পাঠানো হয়েছে বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
পুলিশ জানায়, বহরমপুর থেকে বেসরকারি বাসটি যাচ্ছিল রঘুনাথগঞ্জে। ওই রাস্তায় কুলোরির কাছে প্রায় ৩ কিলোমিটার অংশ বেহাল অবস্থায় রয়েছে। সেখানেই আচমকা খানাখন্দে ভরা রাস্তায় গর্তে পড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি উল্টে যায়। আতঙ্কিত হয়ে উল্টে যাওয়া বাসের জানলা দিয়ে বেরনোর চেষ্টা করতে থাকেন যাত্রীরা। সেই হুড়োহুড়িতে বাসটি আরও হেলে যায়। তার তলায় চাপা পড়ে মৃত্যু হয় দু’জনের।
পুলিশ জানায়, মৃত দু’জন আব্দুল আলিম শেখ (২৬) ও সঞ্চিতা তিওয়ারি (৩৭)। তাঁরা নওদার নোয়াপাড়া ও বহরমপুরের বাসিন্দা।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, আব্দুল ট্রাক্টর চালক। তিনি ঝাড়খণ্ডে কাজ করতেন। কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন তিনি। বহরমপুর থেকে তাঁর বাস ধরার কথা ছিল। সঞ্চিতা বহরমপুর ইন্দ্রপ্রস্থের বাড়ি থেকে যাচ্ছিলেন রঘুনাথগঞ্জে মাসির বাড়িতে।
এ দিনের দুর্ঘটনায় আহত কল্যাণী মণ্ডল বলছেন, ‘‘অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম, শেষ পর্যন্ত বাস এল। উমরপুরে নেমে মালদহের বাস ধরব, এমনই ভেবেছিলাম। বাসটা এলোমেলো ভাবে ছুটছিল। হঠাৎ একটা ঝাঁকুনি, দেখলাম বাসটা সটান উল্টে গেল।’’ তিনি পুলিশকে জানান, এমন বেপরোভাবে বাসটি চলছিল যে যাত্রীরা বার বার আস্তে চালানোর জন্য অনুরোধ করতে থাকেন। কিন্তু সে কথা গ্রাহ্যই করেননি চালক।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ দিনও বাস উল্টে যাওয়ার পরে তাঁরাই উদ্ধার কাজে হাত লাগান। পুলিশ আসে অনেক পরে। তবে, জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় তা মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ সময়েই এসেছিল। এই দুর্ঘটনার কারণ জাতীয় সড়কের ওই অংশের বেহাল অবস্থা। এলাকার প্রায় তিন কিলোমিটার অংশে যান চলাচল করাই দায়। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে বার বার বলা হয়েছে সাড়া মেলেনি। ওঁরা সামান্য অংশ সারান, তার পর আবার যে
কে সেই।’’
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক প্রকল্পের মালদহের প্রকল্প আধিকারিক দীনেশ হংসরিয়া তা মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘রাস্তার কিছু অংশে মেরামতির কাজ চলছে। ওই এলাকার রাস্তা বার বার সারানোর পরও আবার খারাপ হয়ে যাচ্ছে।’’ কেন? সে উত্তর অবশ্য তাঁর কাছ থেকে মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy