Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Palasi

শাহিনবাগের পথেই এ বার ধর্নায় পলাশি

উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, কোনও রাজনৈতিক দলের তত্ত্বাবধানে নয়, এলাকার মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এই ধর্নায় যোগ দেওয়ার কথা ভেবেছেন। 

বাঁধা হচ্ছে ধর্নামঞ্চ। পলাশিতে। নিজস্ব চিত্র

বাঁধা হচ্ছে ধর্নামঞ্চ। পলাশিতে। নিজস্ব চিত্র

সন্দীপ পাল 
পলাশি শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২০ ০০:১৩
Share: Save:

দিল্লির শাহিনবাগ ও কলকাতার পাক সার্কাসের পথ অনুসরণ করে এ বার পলাশির মানুষ অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্নায় বসতে চলেছেন।

সিএএ, এনআরসি-র বিরুদ্ধে এই অবস্থান-ধর্নার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে জোরকদমে। আজ শনিবার বিকাল তিনটের সময়ে ধর্না মঞ্চের উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে। ওই অবস্থান ধর্নার উদ্যোক্তারা একেবারেই এলাকার সাধারণ মানুষ, যাঁরা যে কোনও ধরনের সাম্প্রদায়িক ভাগাভাগির বিরুদ্ধে। তাঁরা c

দিল্লির শাহিনবাগের পথেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সিএএ-বিরোধী অবস্থান-বিক্ষোভ-প্রতিবাদ-মিছিলে যোগ দিচ্ছেন। লখনউতেও শুরু হয়েছে অবস্থান-প্রতিবাদ। কলকাতার পার্ক সার্কাস, ধর্মতলার মুসলিম সম্প্রদায়ের মেয়েদের অনির্দিষ্ট কালের অবস্থান ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছে। এখন জেলার বিভিন্ন প্রান্তেও সিএএ-বিরোধী দীর্ঘমেয়াদি ধর্নায় খবর পাওয়া যাচ্ছে। দিনতিনেক আগে প্রতিবেশি জেলা মুর্শিদাবাদেও শাহিনবাগের অনুকরণে অনির্দিষ্টকালীন একটি অবস্থান শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই আবার এই জেলার পলাশির মানুষ একজোট হয়ে প্রতিবাদে নামার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন।

ওই ধর্না-অবস্থানে আয়োজকেরা জানাচ্ছেন, জাতি-ধর্ম-দল-মত নির্বিশেষে সকলে মিলে পলাশি ফুলবাগান মোড়ের কাছে সিএএ, এনপিআর, এনআরসি-র বিরোধিতা করবেন। সেই উদ্দেশ্যেই ওই ধর্নামঞ্চের আয়োজন। মঞ্চের নাম দেওয়া হয়েছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু মঞ্চ। এই বিষয়ে শুক্রবার বিকালে এক সাংবাদিক সম্মেলন করা আনুষ্ঠানিক ভাবে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার ধর্না মঞ্চের জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

ওই কমিটির পক্ষ থেকে হোয়াট ওয়াজেদ আলি শেখ বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে দেশপ্রেম ও সংবিধান রক্ষার জন্য যে ভাবে লড়াই চলছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে— গোটা ভারতের মানুষ সঙ্কটের মধ্যে রয়েছেন। সংবিধানের রক্ষার দাবিতেই আমাদের এই ধর্না মঞ্চ।’’

তিনি জানিয়েছেন, এনআরসি, এনপিআর, সিএএ-র মতো বিষয়কে সামনে রেখে দেশ যে ভাবে বিভাজনের পথে হাঁটছে, তা রুখতেই একজোট হচ্ছেন পলাশির নাগরিকেরা।

পলাশির নাগরিকদের এই উদ্যোগ এবং সিএএ-র প্রতিবাদে অনির্দিষ্ট কালের ধর্না-অবস্থান নিয়ে রাজনৈতিক দলের স্থানীয় প্রতিনিধিরা কী ভাবছেন?

সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য দেবাশিষ আচার্য বলেন, ‘‘এ দেশের মাটিকে যারা ধর্মের নামে ভাগ করে, তারা ধর্ম বোঝে না। রাজনীতিটাও বোঝে না। তারা মানুষের ক্ষতি করতে চায়। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই কোনও একটি বিশেষ ধর্মের লড়াই নয়, কোনও একটি রাজনৈতিক দলের লড়াই নয়। এই লড়াইয়ে সমস্ত গণতন্ত্র-প্রিয়, ধর্মনিরপেক্ষ মানুষকে এক হতে হবে।’’

এই বিষয়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এনআরসি এবং সিএএ-এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে আমরা সর্বদাই পাশে আছি। তবে এই ধর্না মঞ্চ কারা করছেন, তার ঠিক খবর নেই। খোঁজ না নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’

বিজেপির ১৫ নম্বর জেডপি-র সভাপতি বিশ্বজিৎ ঘোষের কথায়, ‘‘এই জেডপি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা। ওই এলাকাকে নিরাপদ জায়গা বলে বেছে নিয়েছে। এনআরসির এখনও কিছু ঘোষণা হয়নি। এ ছাড়া, সিএএ আইন নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া নয়, নাগরিকত্ব দেওয়া। রাজ্যের বর্তমান শাসকদল, সিপিএম ও কংগ্রেস নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে ভুল বার্তা দিচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Palasi CAA NRC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE