—প্রতীকী চিত্র।
নামেই ‘প্রতিবাদ সভা’। সেই সভায় গিয়ে চাকদহের পুরপ্রধান দাবি করলেন, শান্তনু শীল খুনে যাদের নামে অভিযোগ রয়েছে, তারা সকলে ওই খুনে জড়িত নয়।
অর্থাৎ, গত কয়েক দিন ধরে অভিযুক্তদের বাড়ির লোকেরা যা দাবি করছেন, কার্যত তারই প্রতিধ্বনি করে গেলেন তৃণমূলের পুরপ্রধান।
গত রবিবার জলসার মঞ্চে গুলি করে ওই খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত অমন রায় ওরফে কালু আপাতত পুলিশের হেফাজতে। কিন্তু বাকি চার অভিযুক্ত এখনও ফেরার। এক সপ্তাহ কেটে গেলেও পুলিশ নাগাল পায়নি।
চাকদহের কেবিএম এলাকায় ওই খুনের পরের দিনই কালু ছাড়াও তার দাদা সুমন ওরফে হাম্পি, বিশ্বনাথ দেবনাথ, বিশ্বজিৎ ঘোষ ওরফে ছ্যাঁকা বিশু এবং গৌতম মণ্ডল ওরফে পুচুর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন শান্তনুর স্ত্রী সোমা রায়। এদের সকলকেই সে দিন তিনি নিজে দেখেছেন বলে সোমা জানিয়েছেন।
শান্তনু নিজে যুব তৃণমূলেরই কর্মী ছিলেন। অথচ শনিবার ওই এলাকায় সভা করে চাকদহের পুরপ্রধান দীপক চক্রবর্তী দাবি করলেন, ‘‘যাদের নামে অভিযোগ করা হয়েছে, তাদের কেউ–কেউ সে দিন ঘটনাস্থলেই ছিল না।’’ তারা তখন কোথায় ছিল, তা অবশ্য তিনি ভেঙে বলেননি। তবে তাঁর দাবি, ‘‘পুলিশ তদন্ত করলেই প্রকৃত সত্য প্রকাশ পাবে।’’
তবে কি পুরপ্রধান ঘুরিয়ে বলতে চাইছেন যে সোমা জেনেশুনেই মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেছেন? যেমনটা দাবি করছেন অভিযুক্তদের কারও-কারও স্ত্রী বা মা? তাঁর কথার সারমর্ম জানতে রাতে ফোন করা হলে দীপক কেবলই বলতে থাকেন, ‘‘আমি কিছুই বলব না!’’ শেষে সোমার নাম শুনেই তিনি ফোন কেটে ‘সুইচ অফ’ করে দেন। আর তাঁকে ফোনে ধরা যায়নি। জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের গলায় অবশ্য ভিন্ন সুর। এ দিন তিনি বলেন, “পুলিশকে আরও সক্রিয় হতে হবে। এক জনকে ধরেছে। বাকিদেরও গ্রেফতার করতে হবে।”
ঘটনাচক্রে, কালু এবং তার সঙ্গীরা পুরপ্রধানের ছত্রচ্ছায়ায় লালিতপালিত আর সেই কারণেই তোলাবাজি করেও এত দিন তারা পার পেয়ে গিয়েছে বলে ধারণা চাকদহের অনেকেরই। তৃণমূল সূত্রেই শোনা গিয়েছে এমন কথা। সত্যাসত্য বলতে পারবে পুলিশ বা গোয়েন্দা দফতর। তবে এত দিন পরে হঠাৎ ‘প্রতিবাদ সভা’ করতে এসে দীপক দাবি করেন, ‘‘আমাকেও জড়ানোর চেষ্টা চলছে। এর পিছনে বিরোধীদের চক্রান্ত রয়েছে।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে পাল্টা বলেন, “মানুষ ওদের গল্প শুনতে চাইছে না। তাই এত দিন পর লোক দেখানো প্রতিবাদ সভা করতে হচ্ছে!’’ আর, বিজেপি-র দক্ষিণ জেলা সভাপতি জগন্নাথ সরকারের টিপ্পনী, “সবাই জানে, কী নাটক চলছে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy