Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

কন্যাশ্রীর ফর্মে টাকা চাওয়ায় তালা স্কুলগেটে

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, গত শুক্রবার থেকে ওই স্কুলে ছাত্রীদের কন্যাশ্রী ফর্ম বিলি করা হচ্ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
লালবাগ শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২১
Share: Save:

কন্যাশ্রী প্রকল্পের ফর্ম বিলি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে লালবাগের তেঁতুলিয়া উচ্চবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগে বুধবার স্কুলের গেটে তালা দিয়ে শিক্ষকদের আটকেও রাখা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, গত শুক্রবার থেকে ওই স্কুলে ছাত্রীদের কন্যাশ্রী ফর্ম বিলি করা হচ্ছিল। কিন্তু বিনামূল্যে যে ফর্ম দেওয়ার কথা, সেখানে ওই প্রকল্পের ‘কে-১’ ফর্মের জন্য ২০ টাকা এবং ‘কে-২’ ফর্মের জন্য ৩০ টাকা করে দাবি করছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। টাকা দিতে আপত্তি করায় ফর্ম না দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। সেই ক্ষোভেই এ দিন তালা বুঝিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন কিছু গ্রামবাসী। খবর পেয়ে মুর্শিদাবাদ থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

স্কুল সূত্রে জানা যায়, কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির প্রায় আটশো ছাত্রীর নাম রয়েছে। তাদের সকলের কাছ থেকেই ফর্ম দেওয়ার সময়ে টাকা নেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুব্রতকুমার বিশ্বাসের বক্তব্য, স্কুলে একটি কম্পিউটার কেনার জন্য ছাত্রীদের কাছ থেকে ওই টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে।

কম্পিউটার কেনার জন্য ছাত্রীদের কাছ থেকে ওই ভাবে টাকা নেওয়া যে ঠিক হয়নি, তা-ও মানছেন প্রধান শিক্ষক। তবে তাঁর ব্যাখ্যা, কন্যাশ্রী প্রকল্পের পূরণ করা ফর্ম ছাত্রীদের কাছ থেকে জমা নেওয়ার পরে ফের তা অনলাইনে জমা করতে হয়। স্কুলে একটি মাত্র কম্পিউটার, সেটি তাঁর ঘরেই রয়েছে। তিনি ওই কম্পিউটারে কাজ করলে অনলাইনে ফর্ম জমায় অসুবিধা হয়। তাই অতিরিক্ত একটি কম্পিউটার কিনে ওই প্রকল্পের কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কয়েক জন শিক্ষক। তিনি আপত্তি করেননি।

তাতে যে এমন প্রতিক্রিয়া হতে পারে, তা সম্ভবত শিক্ষকেরা আন্দাজ করেননি। স্কুলের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর কথায়, ‘‘আমি কে-১ ফর্ম তুলতে গেলে আমার থেকে ২০ টাকা নিয়েছে আর আমার দিদির কে-২ ফর্মের জন্য নিয়েছে ৩০ টাকা। কন্যাশ্রী প্রকল্পের ফর্মের জন্য টাকা নেওয়ার কথা স্কুলের নোটিস বোর্ডেই টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’’

এর আগে কখনও ওই স্কুলে ফর্ম তোলার জন্য টাকা নেওয়া হয়নি। ফলে, এ বার তা নেওয়ায় অনেকেরই খটকা লাগে। কিন্তু তা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় বিপত্তি বেড়েছে। এক ছাত্রীর অভিযোগ, ‘‘কোনও ছাত্রী টাকা দিতে আপত্তি করলে তাঁর নাম আলাদা করে লিখে রাখা হয়েছে। টাকা দিয়ে ফর্ম না তুললে কন্যাশ্রী প্রকল্পে টাকা পাবে না বলেও হুমকি দেওয়া হয়।’’

গোটা বিষয়টি শুনে ক্ষুব্ধ জেলায় কন্যাশ্রী প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সায়ক দেব। তিনি জানান, কোনও স্কুলই এটা করতে পারে না। ছাত্রীদের বিনামূল্যে ফর্ম দেওয়ার কথা। অনলাইন ফর্ম পূরণের জন্য ছাত্রী-পিছু টাকাও দেওয়া হয় স্কুলকে। তিনি বলেন, ‘‘কেন এ রকম ঘটনা ঘটল, খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করার জন্য মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জের বিডিও-কে জানাচ্ছি।’’ ভারপ্রাপ্ত জেলা স্কুল পরিদর্শক রবিনা তামাংও জানান, গোটা বিষয়টির তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kanyashree project Form Corruption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE