Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
ফের কি ‘তিন ইয়ারি কথা’

চেনা জমিতে অচেনা শঙ্কর

রাজনীতির নদী বড় বাঁক নেয়! রোদ-ছায়া ঘেরা সেই তিন বন্ধু তাই ছিটকে গিয়েছিলেন। পালাবদলের পরে, সম্পর্কও এসে ঠেকেছিল তলানিতে।

শঙ্কর সিংহ ও অধীর চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।

শঙ্কর সিংহ ও অধীর চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।

সুপ্রকাশ মণ্ডল
শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৭ ০৩:৩৫
Share: Save:

সে অবশ্য বেশ পুরনো কথা, জেলা কংগ্রেসের অভিন্ন-হৃদয় তিন বন্ধুকে বলা হত ‘তিন মূর্তি’। দিব্যি তুই-তোকারির সম্পর্ক তাঁদের, শঙ্কর সিংহ, অজয় দে আর গৌরীশঙ্কর দত্ত।

তবে, রাজনীতির নদী বড় বাঁক নেয়! রোদ-ছায়া ঘেরা সেই তিন বন্ধু তাই ছিটকে গিয়েছিলেন। পালাবদলের পরে, সম্পর্কও এসে ঠেকেছিল তলানিতে।

তবে, কিছু দিন হল, গৌরীশঙ্করের সঙ্গে পুরনো সম্পর্কটা ঝালিয়ে নিচ্ছিলেন শঙ্কর। তবে, অজয়ের সঙ্গে তাঁর কার্যত মুখ দেখাদেখি বন্ধ। অসুস্থতার কারণে জেলা রাজনীতিতে গৌরীশঙ্কর এখন অনেকটাই কোণঠাসা। আর, অজয় জেলা তৃণমূলের অন্যতম কার্যকরী সভাপতি। বুধবার শঙ্কর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে জল্পনা শুরু হয়েছে, তা হলে তিন বন্ধুর পুরনো সমীকরণটা কী দাঁড়াবে?

যা শুনে, বুধবার কৃষ্ণনগরে আসা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী হাসছেন, “হয়ত কোনও কায়েমী স্বার্থের কথায় মাথা গুলিয়ে উঠেছে তাঁর। তাই তিনি জাত-ধর্ম বিসর্জন দিয়ে, রাজনৈতিক সততা হেলায় হারিয়ে দল ছেড়ে গেলেন শঙ্কর সিংহ।”

দলত্যাগের হিড়িকে ইতিমধ্যেই তাঁর সাজানো বাগান ভেঙে গিয়েছে পড়শি মুর্শিদাবাদে। একে একে তাঁকে ছেড়ে গিয়েছে তাঁর দীর্ঘ দিনের অনুগামীরা। কৃষ্ণনগরে দলীয় কর্মীদের ইফতারে এসে অধীর তাই বলে গেলেন, ‘‘আমরা তাঁকে (শঙ্কর) বিধানসভায় টিকিট দিয়েছিলাম। কংগ্রেস কর্মীরা তার জন্য প্রাণপাত করে জনপ্রতিনিধি করেছেন। তাঁদের কি জবাব দেবেন ভেবেছেন কি শঙ্করদা!’’ নদিয়ায় নতুন করে কি পাবেন শঙ্কর, তা নিয়ে তৃণমূলেও জল্পনার বিরাম নেই। কারণ, শুধু অজয় নয়, শঙ্করের পুরনো সতীর্থ জেলা তৃণমূলের সভাপতি উজ্জ্বল বিশ্বাস, কার্যকরী সভাপতি পুণ্ডরীকাক্ষ (নন্দ) সাহা, কল্লোল খাঁ-র সঙ্গেও শঙ্করের বিশেষ সখ্য নেই।

প্রশ্ন উঠছে, শঙ্কর অনুগামী সেই নিচুতলার নেতা কর্মীরাই বা কী করবেন? সেই ধন্দ শঙ্কর অনুগামীদের মধ্যেও রয়েছে। এ দিন কলকাতায় তৃণমূল ভবনে যাওয়া এক নেতা বললেন, ‘‘তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা তো আমাদের পাত্তাই দেবেন না, সেটাই চিন্তার।’’ কংগ্রেসের এক পুরনো জেলা নেতা ধরিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘এ বার তো চেনা জমিতে অচেনা শঙ্কর!’’ এই অবস্থায় পুরনো-নতুনের লড়াইটা ফের মাথাচাড়া দেবে বলেই মনে করছেন তৃণমূলের প্রবীণ নেতা-কর্মীরা।

তবে, দীর্ঘ দিন পরে পরে তিন বন্ধু ফের এক দলে। কিন্তু তাঁদের সেই ‘তিন ইয়ারি কথা’ কী ফের দেখা যাবে? প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE