নকল দ্রব্য। নিজস্ব চিত্র
দোকানে গিয়ে নামি কোম্পানির তেল কিনতে গিয়ে দোনামনা করছিলেন বছর চল্লিশের এক মহিলা। তাঁকে আমতা আমতা করতে দেখে দোকানের এক কর্মী বলেন করেন, “এত কী ভাবছেন? কী লাগবে, সেটা বলুন।” প্রত্যুত্তরে ওই মহিলা বলেন, “শহর থেকে নকল জিনিস ধরেছে পুলিশ। এর পরে কী করে দুশ্চিন্তা মুক্ত হয়ে জিনিস কিনতে পারি, বলতে পারেন!”
গত কয়েক দিন আগে রানাঘাট শহরে নকল জিনিস-সহ এক যুবক গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় জেরে ওই মহিলার মতো অনেকেই দোকানে জিনিস কিনতে গিয়ে থমকে দাঁড়াচ্ছেন। আসল-নকল নিয়ে ধন্দে পড়েছেন।
বেশ কিছুদিন থেকে শহরে নকল প্রসাধনী জিনিস বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ আসছিল। বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত গত সোমবার বিভিন্ন নামিদামী কোম্পানির নকল তেল, বিভিন্ন প্রসাধনী দ্রব্য-সহ শিবু সাউ নামে এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করে। ধৃতের বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে খানিকটা দূরে ধানতলার রঘুনাথপুর হিজুলি ১ পঞ্চায়েতের বরেন্দ্রনগরে।
রানাঘাট শহরের সড়কপাড়ায় তার এক গোডাউন রয়েছে। ওই দিন আচমকা গোডাউন হানা দিয়ে ওই সব নকল জিনিস উদ্ধার করে পুলিশ। তিন দিনের জন্য তাকে হেফাজতে নিয়ে তার বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। বাড়ি থেকে বিভিন্ন কোম্পানির মুখে মাখার নকল ক্রিম আটক করে পুলিশ। ধৃত ওই যুবক এখন জেল হেফাজতে রয়েছে।
ওই ঘটনায় ব্যবসায়ীদের মধ্যেও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। আঁইশতলার ব্যবসায়ী পিংকু দেবনাথ বলেন, “রানাঘাট থেকে জিনিস কিনে নিয়ে এসে বিক্রি করে থাকি। অনেক সময়ে বুঝতে পারি না, এর কোনটা আসল আর কোনটা নকল। এলাকার মানুষ বিশ্বাস করে জিনিস নিয়ে যান। তাঁরা যদি ঠকেন, সেটা খুব দুঃখের বিষয়।”
রানাঘাট রেল বাজার সংযুক্ত ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক পিন্টু সরকার বলেন, “আমারাও চাই পুলিশ অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক।’’ স্থানীয় কাকলি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের পক্ষে কী যাচাই করে জিনিস কেনা সম্ভব? আমরা আসল-নকলের কতটাই বা বুঝি।” আর এক বাসিন্দা দেবাশিস মোদক বলেন, “হাতের কাছে যে দোকান পাই, সেখান থেকেই জিনিস কিনে থাকি। দোকানিরা কী ধরনের জিনিস বিক্রি করছেন, তা কী করে বুঝব?”
পুলিশ সূত্র জানানো হয়েছে, এতে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। এক জনকে গ্রেফতার করে তারা থেমে নেই। তদন্ত চলছে। এলাকায় নজরে রাখা হচ্ছে। সন্দেহজনক কাউকে দেখলেই ধরা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy