Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
nadia

গুটিগুটি পায়ে রাস্তায় বের হচ্ছেন অনেকেই

বার্নিয়া-আতঙ্ক আপাতত আগের চেয়ে কম। অনেকে টুকটাক ঘর ছেড়ে বেরোতে শুরু করেছেন। করিমপুর, নাজিরপুর, বেতাই কিংবা তেহট্টে করোনা ভীতি কিছুটা কমেছে।

পাত্রবাজারের মুখে দাঁড়িয়ে পুলিশ ক্রেতাদের পাঠাল নিয়ন্ত্রিত বাজারে। শুক্রবার কৃষ্ণনগরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

পাত্রবাজারের মুখে দাঁড়িয়ে পুলিশ ক্রেতাদের পাঠাল নিয়ন্ত্রিত বাজারে। শুক্রবার কৃষ্ণনগরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

কল্লোল প্রামাণিক  ও সাগর হালদার 
তেহট্ট শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২০ ০১:৫৪
Share: Save:

ধীরে হলেও ছন্দে ফিরছে বার্নিয়া তথা তেহট্ট। দিল্লি থেকে আসা পাঁচ জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পরে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছিল মুর্শিদাবাদ ঘেঁষা বার্নিয়া গ্রাম। আতঙ্কে কাঁপছিল পলাশিপাড়া থেকে বেথুয়াডহরি। সে অবস্থাটা খানিক কেটেছে।
কিন্তু বিপদ ঘনাচ্ছে অন্য দিক থেকে। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী তেহট্ট কর্মতীর্থে সাত জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এর মধ্যে ছধ্যে ছ’জন করিমপুরের নানা এলাকার বাসিন্দা, তার মধ্যে পাঁচ জন কেরল থেকে ফিরেছেন। আগে থেকেই কোয়রান্টিনে থাকা ১৩ জনের মধ্যে এক জনের জ্বর বাড়ায় তাঁকে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের সকলেরই লালারস পরীক্ষা করা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত অবশ্য হয়নি।

তবে তা সত্ত্বেও বার্নিয়া-আতঙ্ক আপাতত আগের চেয়ে কম। অনেকে টুকটাক ঘর ছেড়ে বেরোতে শুরু করেছেন। করিমপুর, নাজিরপুর, বেতাই কিংবা তেহট্টে করোনা ভীতি কিছুটা কমেছে। টানা ক’দিন ঘরবন্দি থাকার পরে এ দিন করিমপুরে যেমন রাস্তায় বেশি লোকের আনাগোনা চোখে পড়েছে। বেশ কিছু দোকানও খুলেছে।

লকডাউনের প্রথম দিন পুলিশি সক্রিয়তায় প্রায় সবাই বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল। দু’দিন পর থেকে অনেকে ফের রাস্তায় বেরোতে শুরু করলেও বার্নিয়ার ঘটনা ফের তাঁদের গরে ঢুকিয়ে দিয়েছিল। গত সাত দিন তাঁরা শত প্রয়োজনেও বাইরে প্রায় বেরোচ্ছিলেনই না। কিন্তু এ দিন ছবিটা অনেকটাই পাল্টে গিয়েছে।

করোনা ঘরবন্দি

শুক্রবার/দিন:১২

জোলা কন্ট্রোলরুম: ৭৫৪৮৯৭৫৩০৩

• নদিয়ায় আইসোলেশনে থাকা রোগীর সংখ্যা ১০ থেকে বেড়ে হল ১৪।
• জেলার ৭টি আইসোলেশন ওয়ার্ডে মোট শয্যা সংখ্যা ৯২টি। এর মধ্যে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নতুন আইসোলেশন ওয়ার্ড গড়ার কাজ চলায় কেউ ভর্তি নেই।
• রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে বৃহস্পতিবারই চার জন ভর্তি ছিলেন। শুক্রবার অন্য রাজ্য থেকে ফেরা আরও দুই পরিযায়ী সেখানে শ্রমিককে ভর্তি করা হয়েছে।
• তেহট্ট কর্মতীর্থে ছ’জন আইসোলেশন সেন্টারে ছিলেন। ইতিমধ্যে কোয়রান্টিনে থাকা এক জনের জ্বর বাড়ায় আরও এক জনকে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে। ফলে সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে সাতে।
• কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেও এক জনকে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে। তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে
পাঠানো হয়েছে।
• জেলায় কোয়রান্টিন সেন্টারের সংখ্যা সাত থেকে এক লাফে করা হয়েছে ১৩৬টি। বিভিন্ন ব্লকে স্কুলে-স্কুলে জরুরিভিত্তিক সেন্টার খোলা হয়েছে। মোট ন’শো শয্যা প্রস্তুত করা হয়েছে। দিনের শেষে ভর্তি রয়েছেন ৬৭ জন। এর মধ্যে কৃষ্ণনগর কর্মতীর্থে ৩৫ জন, তেহট্ট কর্মতীর্থে ১২ জন এবং ঘোড়ালিয়া কনভারটেড বেসিক স্কুলে ১৪ জন ভর্তি রয়েছেন। ফুলিয়া কৃষক বাজার কেন্দ্র থেকে সকলকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
• হোম কোয়রান্টিনের থাকা লোকের সংখ্যা কমে
হয়েছে ২২,০৩৯।

এ দিন সকালে বেতাই পলাশি মোড়ে বাজারে প্রচুর মানুষ ভিড় করেছিলেন। সপ্তাহের প্রতি সোম ও শুক্রবার এলাকার চাষিরা এই হাটে আনাজ বিক্রি করতে আসেন। এ দিন লকডাউনের তোয়াক্কা না করেই তাঁরা যথারীতি এসেছেন। মুদি ও ওষুধের দোকান ছাড়া অন্য দোকানপাট বন্ধ থাকলেও সকাল-বিকেল অনেক মানুষ রাস্তায় বের হচ্ছেন নাজিরপুরে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, মানুষকে সতর্ক করতে সব রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তেহট্ট থানা জিতপুর মোড়ে রাস্তায় ছবি এঁকে ‘স্টে হোম’ লিখে দেওয়া হয়েছে। নিষেধ অমান্য করে যাঁরা রাস্তায় বেরোবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nadia Lock Down Corona Virus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE