ফাইল চিত্র
করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে হোটেল-রেস্তরাঁগুলিতে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কথা ভেবে খুব প্রয়োজন না পড়লে বাইরে বেরোতে চাইছেন না লোকজন। তার ফলে অনেকেই হোটেলের বুকিং বাতিল করে দিচ্ছেন, আবার অনেকে রেস্তরাঁ গিয়ে খেতে চাইছেন না। বহমরপুরের হোটেল মালিক থেকে শুরু করে রেস্তরাঁ মালিকরা এমন কথাই জানাচ্ছেন। হোটেলগুলিতে এ মাসের ৫০-৯০ শতাংশ বুকিং বাতিল করেছেন অতিথিরা। তবে হোটেল বা রেস্তরাঁগুলি করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও নিচ্ছে বলে জানিয়েছে।
বহরমপুরের লালদিঘি লাগোয়া একটি হোটেল এবং রেস্তরাঁর মালিক চন্দন সরকার বলেন, ‘‘গত এক সপ্তাহ থেকে অতিথিরা একের পর এক বুকিং বাতিল করছেন। আমাদের হোটেলের প্রায় ৯০ শতাংশ বুকিং বাতিল হয়েছে। রেস্তরাঁতেও লোকজন কম আসছেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে আমরা রেস্তরাঁ থেকে হোম ডেলিভারি বাড়াচ্ছি। তার চাহিদাও রয়েছে। শহরের যারা রেস্তরাঁয় বসে খাওয়া দাওয়া করেন, তাঁদের রেস্তরাঁ না এসে হোম ডেলিভারির জন্য অর্ডার করার অনুরোধও করছি।’’
হোটেলে যাঁরা আসছেন তাঁদের জন্য কী সতর্কতা নেওয়া হয়েছে? চন্দন বলেন, ‘‘এখন বাজারে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার, মাস্কের আকাল। বাজারে সে সব মিলছে না। সে জন্য রিসেপশনে হ্যান্ডওয়াশ, ডেটল রাখা হয়েছে। লোকজন এলে তাঁদের হাত ধুতে বলা হচ্ছে। এ ছাড়া খাবারও সতর্কতার সঙ্গে রান্না করা হচ্ছে।’’ প্রধানমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে জনতা কার্ফুর দিন, রবিবার ওই রেস্তরাঁ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বহরমপুরের মোহনের মোড়ের একটি নিরামিষ রেস্তরাঁর মালিক অমরনাথ সাউ বলেন, ‘‘গত দু’দিন থেকে আমাদের এখানেও প্রায় ১০ শতাংশ লোক আসা কমেছে। আগামী রবিবার এখানে ১০০ জনকে নিয়ে একটি ‘পার্টি’ ছিল। সেটাও উদ্যোক্তারা বাতিল করেছেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রেস্তরাঁর কর্মীরা গ্লাভস, টুপি পরার পাশাপাশি ভিড় হলেই প্রয়োজন অনুযায়ী মাস্ক পড়ছেন। যাঁরা আসছেন তাঁদের স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হচ্ছে।’’
মোহনের মোড়ের অপর একটি রেস্তরাঁর মালিক নীলাঞ্জন পাল বলেন, ‘‘খরিদ্দার কিছুটা কম আসছে। তবে আমরা করোনাভাইরাসের বিষয়ে সচেতন। সতর্কতার সঙ্গে খাবার তৈরি থেকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
বহরমপুরের পঞ্চাননতলায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া একটি হোটেলের মালিক অমিত সরকার বলেন, ‘‘এ মাসে আমাদের হোটেলে চারটি পার্টি হওয়ার কথা ছিল। সব গুলি বাতিল করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এই মুহুর্তে প্রায় ৫০ শতাংশ লোক কম আসছেন। যা পরিস্থিতি আগামী দিনে লোকজনও আরও কমে যাবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘হোটেল কর্মী থেকে শুরু করে হোটেলে আসা অতিথিদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হোটেলকর্মীদের মাস্ক দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে আমরা করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রস্তুতি নিয়েছি।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর খাবার থেকে করোনাভাইরাস ছড়ায় না। মানুষ থেকে মানুষে এই ভাইরাস ছড়ায়। তাই মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে। যতটা সম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার মাস্কের ব্যবহার করতে হবে।
মুর্শিদাবাদের খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক শেখ মহম্মদ নাসিম বলেন, ‘‘করোনাভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়। খাদ্য দ্রব্যের সঙ্গে করোনাভাইরাসের কোনও যোগ এখনও পাওয়া যায়নি। নির্দিষ্ট উষ্ণতায় আগের মতো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রান্না করে খেতে বলা হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, এই বিষয়টি আমরা সর্বত্র প্রচারও করছি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy