ফাইল চিত্র
‘ইনফ্রারেড থার্মোমিটার’ কিনতে এখন ঘাম ছুটে যাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের। করোনা সংক্রমণের বিষয়টি সামনে আসর পরে হঠাৎ এই থার্মোমিটারের চাহিদা এত বেড়ে দিয়েছে যে চাইলেও তা সহজে মিলছে না। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে জেলা হাসপাতালগুলির জন্য মাত্র ৪০টির মতো থার্মোমিটার কেনা সম্ভব হয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় মোটে অর্ধেক।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয় সামনে আসার পরপরই কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতাল ও মহেশগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেদের মতো করে এই ইনফ্রারেড থার্মোমিটার কিনে নিয়ে কাজ চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি যত ঘোরালো হয়েছে, পরিকাঠামো আরও মজবুত করতে শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। এন৯৫ ও থ্রি-লেয়ারড মাস্ক, হান্ড স্যানিটাইজ়ার ও গ্লাভস মজুত করা হচ্ছে। বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠিয়েও দেওয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, সন্দেহভাজন রোগীকে স্পর্শ না করে পাঁচ সেন্টিমেটার দূর থেকেই তাঁর শরীরের তাপমাত্রা মাপার জন্য ‘ইনফ্রারেড থার্মোমিটার’ দরকার। কিন্তু সরকারি ‘সেন্ট্রাল মেডিসিন স্টোর’-এর তালিকাভুক্ত সংস্থা গুলি তা সরবরাহ করতে না পারায় বাইরে থেকে এই থার্মোমিটার কিনতে বাধ্য হচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। আর তা করতে গিয়েই তারা ফ্যাসাদে পড়েছে। প্রথমত, বর্তমানে বাজারে ঠিকঠাক থার্মোমিটার অপ্রতুল। দ্বিতীয়ত, চাহিদার থেকে যোগান কম হওয়ায় খোলা বাজারে দাম চড়ে গিয়েছে।
জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার আক্ষেপ, “বাজারে এই থার্মোমিটারের এতই আকাল যে সাধারণত ২৫০০ টাকার থার্মোমিটারের দাম চাওয়া হচ্ছে ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা। তা-ও পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা অনেক কষ্টে ঠিক দামে কিনতে কিছু আনাতে পেরেছি। তার জন্য অনেক ধরাধরি করতে হয়েছে। এর পরে আর পাওয়া যাবে কি না নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না।”
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বর্তমানে জেলার হাসপাতালগুলোর জন্য ৭৫টি ইনফ্রারেড থার্মোমিটার প্রয়োজন। কিন্তু মিলেছে মাত্র ৪০টি। সেগুলিই রবিবার থেকে বিলি করা হয়েছে হাসপাতালগুলির মধ্যে। জেলা হাসপাতাল পেয়েছে চারটি, মহকুমা হাসপাতালগুলি পেয়েছে দু’টি করে, স্টেট জেনারেল হাসপাতালগুলি দু’টি করে আর প্রয়োজন অনুযায়ী ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে একটি থেকে দু’টি করে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে যাঁরা গেদে চেকপোস্টে আসছিলেনস, অনেক আগে থেকেই তাঁদের পরীক্ষা করা শুরু হয়েছিল। কিন্তু তাতে বেশ কিছু ফাঁকফোকর থেকে গিয়েছিল বলে অভিযোগ তোলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিষয়টি সামনে আসার পরে নড়েচড়ে বসেন স্বাস্থ্য ও প্রশাসনের কর্তারা। এর পর থেকে গেদে চেকপোস্টে এক জন চিকিৎসকের নেতৃত্বে সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শিবির করে বসছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেখানে ঢোকার সময়ে ‘ইনফ্রারেড থার্মোমিটার’ দিয়ে পরীক্ষা করা শুরু হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “ইনফ্রারেড থার্মোমিটার সে ভাবে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। তবুও আমরা নানা ভাবে সংগ্রহ করে হাসপাতালগুলিতে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy