প্রতীকী ছবি
‘করোনায় আক্রান্ত’— পড়শি যুবকের নামে এমনই রটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে সাগরদিঘি থেকে গ্রেফতার হল এক যুবক। তার নাম তাজিকুল ইসলাম। বয়স বছর বাইশ।
বুধবার দুপুরে ফেসবুকে এই খবর পোস্ট করেন ওই যুবক। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সাগরদিঘির বিভিন্ন এলাকায়। তার জেরেই তিন জনের জ্বরও হয়েছে আসার পরপরই। স্বভাবতই আশঙ্কা দেখা দেয় গ্রামে। আশঙ্কা কাটাতে প্রশাসনের নির্দেশে স্বাস্থ্য দফতর মঙ্গলবার এলাকার অমৃতপুর ও কাবিলপুর গ্রামে দু’টি স্বাস্থ্য পরীক্ষার শিবির করে।
ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক এ এম সামিম বলেন, “মঙ্গলবার ভিন্ রাজ্য থেকে আসা ২৭০ জনকে পরীক্ষা করা হয়েছে। কারও শরীরেই করোনা ভাইরাস মেলেনি। তবু সতর্কতা নিতে প্রত্যেককেই তাদের বাড়িতে থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভয়ের কিছু নেই।”
বিডিও শুভজিৎ কুণ্ডু বলেন, “ওই গ্রামে যাঁরা অন্য রাজ্য থেকে এসেছেন, তাঁদের অনেককেই হাওড়াতেও ট্রেনে চড়ার সময় পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু তার পরেও বাড়ি ফিরে কারও কারও জ্বর দেখা দেয়। গ্রামবাসীদের ভয় কাটাতে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের সেখানে ফের পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু কিছুই মেলেনি। তাঁদের বাড়ি থেকে না বেরোতে বলা হয়েছে।”
এই পরিস্থিতির মধ্যেই বুধবার ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে একটি পোস্ট, যাতে বলা হয়, “মথুরাপুরে করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছে এক জনের। এমনকি তাঁর নামধামও প্রকাশ করা হয় ওই পোস্টে।’’ সেই পোস্ট আরও অনেকের সঙ্গে নজরে পড়ে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশীরও। তিনি খোঁজ খবর নিতেই দেখা যায়, এই গুজবের কোনও সত্যতা নেই। পুলিশ সুপার জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যে তথ্য দিয়ে গুজব ও আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করেছে সাগরদিঘি থানার পুলিশ। তাঁকে এ দিনই গ্রেফতারও করা হয়েছে। এ দিন সাগরদিঘির মথুরাপুরে গিয়ে কোনও আতঙ্কের লক্ষণ দেখা যায়নি। সুনসান গ্রামে ঘরবন্দি সকলেই।
গ্রামের বাসিন্দা মরজেম শেখ বলেন, “গ্রামে ভিন্ রাজ্য থেকে অনেকেই ফিরেছেন। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে তাঁরা সকলেই বাড়িতেই রয়েছেন। একটি গুজব ছড়ালেও তা সত্যি নয় জেনেই কেউ গুরুত্ব দেননি। গ্রামে কোনও আতঙ্কও নেই।”
গ্রামের আর এক প্রবীণ বাসিন্দা এক্রামুল হক বলেন, “করোনা নিয়ে ভয় তো আছেই। তবে তা নিয়ে গ্রামে আলাদা কোনও আতঙ্ক নেই। সকলেই ঘরবন্দি ও সুস্থ আছে। পুলিশের গাড়ি একাধিক বার এলাকায় ঘুরে গিয়েছে। রাস্তা ঘাট ফাঁকা।” গ্রামের চায়ের দোকানটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খোলা রয়েছে বলতে একটি মুদির পাইকারি দোকান। গ্রামের রাস্তায় টোটো অটো চললেই পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy